মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মনোনয়ন নিয়ে ফের উত্তাপ ছড়াল ভাঙড়ে, আঁচ পড়ল মিনাখাঁ ও বাঁকুড়ার ইন্দাসেও

News Sundarban.com :
জুন ১৪, ২০২৩
news-image
আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি ভাঙড়ের অশান্তি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে নবান্নে হাজির, তখনই ভাঙড়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবারের অশান্তির জন্য আইএসএফ-এর দিকেই অভিযোগ  তুলল তৃণমূল । এদিন বিধায়ক শওকত মোল্লা জানান, মঙ্গলবারে বোমাবাজি, গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনা নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বেই হয়েছে। নওশাদ সিদ্দিকি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ি ভাঙচুর করিয়েছে। এরপর বুধবার আজ মনোনয়ন শান্তিপূর্ণ ভাবে জমা হয়েছে। মঙ্গলবার যেভাবে বোমাগুলি চলেছে তা ভাঙড়ের ইতিহাসে চলেছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’ একইসঙ্গে শওকত এও জানান, ‘নারায়নপুরে বুধবার ১৬টি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। ১৩ জন কর্মী হাসপাতালে আছে।‘ এরপরই নওশাদকে হুঁশিয়ারি সুরে শওকত বার্তা দেন, ‘যে খেলা আইএসএফ শুরু করেছে তা তৃণমূল শেষ করবে।‘ এরই পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের উপর হামলার ঘটনার নিন্দা করেন তিনি। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদনও জানান।
এদিকে অশান্তি নিয়ে ভাঙড়ের দাপুটে নেতা আরাবুল ইসলামের বক্তব্য, ‘মঙ্গলবার তাণ্ডব বাংলায় নজির তৈরি করেছে। ওরা যেভাবে শুরু করেছে, আমরা তা শেষ করব। আমাদের কর্মীরা বৃহস্পতিবারেও তৈরি থাকবে।‘ সঙ্গে সংযোজন, ‘আমাদের হাতই যথেষ্ট।’
ভাঙড় ২ যেখানে মঙ্গলবার গণ্ডগোল হয়েছিল সেখানে বুধবার মনোনয়ন জমা দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফ থেকে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন শওকত মোল্লা, আরাবুল ইসলাম। তবে ভাঙড় -১ এ এদিন সকাল থেকে মনোনয় জমা দেওযা নিয়ে উত্তপ্ত ছিল পরিস্থিতি। বাসন্তী হাইওয়ের ওপর হয় রাস্তা অবরোধ। মনোনয়ন জমা দিতে আটকাতে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে বলে জানা যায়। ওই এলাকায় সমস্ত যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফলে বড়ালি থেকে ঘটকপুকুর কোনও গাড়ি চলাচল করতে পারেনি।
তবে আইএসএফ-এর তরফ থেকে মঙ্গলবারের ঘটনায় শাসক দল ও পুলিশকে দায়ী করেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। এদিকে ভাঙ্গড় ও ক্যানিংয়ে অশান্তির জেরে নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জেলাশাসকের কাছ থেকে পরিস্থিতির রিপোর্ট তলব করেন। পাশপাশি বুধবার জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে ফোন করে অবস্থার খোঁজ খবর নেন। সঙ্গে রিপোর্ট পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই সঙ্গে এলাকা শান্ত করতে পুলিশকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।
এদিকে ভাঙড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির পর এবার আরও কড়া ভূমিকা পালন করতে রাস্তায় নামে রাজ্য পুলিশ। ১৪৪ ধারা জারি হবার পরও মিনাখাঁ বিডিও অফিসের সামনে অবৈধ জমায়েতের হটাতে লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করতে দেখা যায় পুলিশ কর্মীদের। স্থানীয় সূত্রে খবর, ১৪৪ ধারা অমান্য করে মিনাখাঁ বিডিও অফিসের পাশে বেশ কিছু তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা জড়ো হয়েছিলেন। জড়ো হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মিনাখাঁ থানার পুলিশ একেবারে লাঠি উঁচিয়ে ওই সমস্ত তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের এক কিলোমিটারের বাইরে বের করে দেন।
 এদিকে বাঁকুড়ার ইন্দাস থেকেও সামনে এল অশান্তির খবর। সূত্রে খবর, এদিন বিজেপি বিধায়ক নির্মল ধাড়ার নেতৃত্বে কয়েকশো বিজেপি কর্মী সমর্থক মিছিল করে বিডিও অফিসের দিকে যাওয়ার পথে পাল্টা কয়েক হাজার সমর্থককে নিয়ে জমায়েত করে তৃণমূলও। এরপর ইন্দাসে ঢোকার মুখে পুলিশ বিজেপির মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে। তখনই শুরু হয় উত্তেজনা। বিধায়ক নির্মল ধাড়ার নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এই উত্তজনার মাঝে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী। পীরতলার কাছাকাছি পৌঁছতেই তাঁদের লাঠিপেটা করে পুলিশ।
মনোনয়ন পেশের সময় যদি এভাবে গুলি-বোমা চলে, তাহলে ভোটের সময় কী হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা সব মহলেই।