শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে হাসপাতালের শয্যা ফাঁকা নেই,তাই ঘরে বসেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা

News Sundarban.com :
এপ্রিল ২৬, ২০২১
news-image

করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিসহ দেশটির বিভিন্ন শহরের অধিকাংশ হাসপাতালে এখন আর শয্যা ফাঁকা নেই। এ কারণে ঘরে বসেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। কিন্তু ঘরে বসেও চিকিৎসা পেতে তাঁদের দারুণ বেগ পেতে হচ্ছে। অনেকটা মরিয়া হয়ে লড়াই করতে হচ্ছে। কারণ, অক্সিজেন সিলিন্ডার, জরুরি ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না। এগুলো কালোবাজার থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এই যেমন আনশু প্রিয়ার কথাই ধরা যাক। তাঁর শ্বশুরের শারীরিক অবস্থা অবনতিশীল। দিল্লি ও তার উপশহর নয়ডার কোনো হাসপাতালে শয্যা খুঁজে পাননি প্রিয়া। তাঁর শ্বশুরের অক্সিজেন দরকার। একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য তিনি গতকাল রোববার সারাটা দিন বিভিন্ন দোকানে খোঁজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু তাঁর সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। শেষে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে তিনি কালোবাজারে যেতে বাধ্য হন।

সাধারণ সময়ে ভারতে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের দাম পড়ে ৬ হাজার রুপি। কিন্তু এখন এই প্রতিকূল সময়ে সেই সিলিন্ডার কিনতে প্রিয়াকে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়েছে। তিনি কালোবাজার থেকে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ৫০ হাজার রুপি দিয়ে কিনেছেন।

প্রিয়ার শাশুড়িও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছেন। এখন তাঁকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন প্রিয়া। তিনি বলেন, কালোবাজার থেকে একই মূল্যে আরেকটি সিলিন্ডার কেনা তাঁর পক্ষে সম্ভব হবে না।

পরিস্থিতি যাচাই করতে বিবিসির পক্ষ থেকে একাধিক অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অধিকাংশ অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহকারী স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ১০ গুণ বেশি দাম চেয়েছেন।

প্রিয়ার যে লড়াইয়ের কথা বলা হলো, তা এখন ভারতে বিরল কোনো ঘটনা নয়। নয়াদিল্লি, নয়ডা, লক্ষ্ণৌ, এলাহাবাদ, ইন্দোরসহ দেশটির বিভিন্ন শহরের হাসপাতালে এখন উপচে পড়া রোগী। হাসপাতালে কোনো শয্যা আর ফাঁকা নেই। এ কারণে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তাদের অসুস্থ রোগীকে বাড়িতে রাখতে বাধ্য হচ্ছে। বাড়িতেই চিকিৎসার যথাসম্ভব আয়োজন করছে।

এখন বিশেষ করে দিল্লির পরিস্থিতি ভয়াবহ। সেখানকার কোনো হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা ফাঁকা নেই। যেসব পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য আছে, তারা তাদের প্রিয় মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখতে বাড়িতেই নার্স নিয়োগ দিচ্ছে। চিকিৎসকের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি পরামর্শ করছে।

ভারতে কয়েক দিন ধরে প্রতিদিন তিন লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। প্রতিদিনই সংক্রমণ শনাক্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ড হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশি রেকর্ড তো বটেই, বিশ্বরেকর্ডও হচ্ছে।