মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২৯তম শারদোত্সবে শ্রীদুর্গা আইডিয়াল অ্যাসোসিয়েশন-এর ভাবনা সুন্দরবনের গ্রামবাংলা

News Sundarban.com :
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
news-image

ঝোটন

বলতে বলতে একেবারে সামনে চলে এল বাঙালির সেরা উত্সব দুর্গাপুজো। তাই সবচেয়ে বড় এই হিন্দুদের ধর্মীয় উত্সবকে ঘিরে সারা দেশে এখন খুশির আমেজ বইতে শুরু করেছে। আর হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি দিন। তারপর শুরু হয়ে যাবে শহর ও গ্রামগঞ্জের আনাচে কানাচে ছোট থেকে বড় পুজোর লড়াই। শরতের আকাশে মেঘের খেলা এবং কাশফুলের দোদুলের মতো দুলছে বাঙালির মনের কোণে এই আনন্দ। এই উত্সবে বাঙালি যে শুধু মেতে ওঠে তা নয়। সব ধর্মালম্বী মানুষের মনে ও এই উত্সবের প্রলয় ঘটে। পুজোর ঠিক কয়েকমাস আগে থেকে শুরু হয় মণ্ডপ তৈরির কাজ।
আমরা যে শুধু প্রতিমা দর্শনের টানে এ প্রান্ত থেকে সে প্রান্তে ছুটে যাই তা নয়, আমাদের কাছে মণ্ডপ সজ্জাটি হল মুখ্য বিষয়। শহর এলাকায় চারিদিকে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্তম্ভের পর স্তম্ভ। আর এই স্তম্ভের অলিগলি ঘুরে ঘুরে মণ্ডপ এবং প্রতিমা দর্শন করে থাকি। কিন্তু এই স্তম্ভ ছেড়ে এবারের পুজোটা একটু আলাদাভাবে আনন্দ করি, তাহলে কেমন হয়। তাহলে চলুন না একেবারে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে। তাঁদের কাছে এই শ্রেষ্ঠ উত্সব কেমন, কিভাবে তাঁরা এই আনন্দে মেতে ওঠেন,তাঁদের পুজোর থিমগুলোই বা কেমন হয় এগুলো একটু জেনে নেওয়া যাক।
আমি এমন এক পুজো মণ্ডপের কথা বলব, যে মণ্ডপ তৈরির কাজ চলছে ২ মাস ধরে। নারায়ণপুর, নামখানার শ্রীদুর্গা আইডিয়াল অ্যাসোসিয়েশন-এর ক্লাবের পুজো। তাঁদের ২৯তম শারদোত্সবের ভাবনা, সুন্দরবনের গ্রামবাংলা। শ্রীদুর্গা আইডিয়াল অ্যাসোসিয়েশনএর ক্লাব সদস্য নারায়ণ জানার এই প্রচেষ্টাকে বাস্তবে রূপায়িত করে তুলবেন মণ্ডল ডেকোরেটর্সের শিল্পী খোকন মণ্ডল। বৃষ্টিকে উপেক্ষা না করে মৃন্ময়ী মা-কে চিন্ময়ী রূপ দিতে চলেছে প্রতীমা শিল্পী সাধন দলপতী। অন্যদিকে, আলোকসজ্জায় রয়েছে জানা মিউজিক ও ইলেক্ট্রনিকস।
ক্লাব সম্পাদক বিপুল কর বলেন, আমাদের এবছরের থিম সুন্দরবন। এই সুন্দরবনকে মানুষের মনে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কিছু কিছু দৃশ্য এই থিমের মাধ্যমে তুলে ধরব। তাঁতশিল্পের চিত্রও এই থিমের মধ্যে দেখানো হবে।
পুজো কমিটির সভাপতি দেবাশিস প্রধান বলেন,গতবছরের তুলনায় এবছর আমাদের থিমটি সম্পূর্ণ আলাদা। বর্তমান সময়ে গ্রামবাংলার চিরাচরিত যে ঐতিহ্য তা ক্রমে ক্রমে আমাদের চেতনা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। সেই জিনিসটিকেই থিমের মাধ্যমে আমরা তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করার একটা ঐকান্তিক প্রচেষ্টা করছি।
পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ সঞ্জিব দাস এবং বিশ্বজিত্ সিট বলেন, আমরা আশা রাখি যে গতবছরের তুলনায় এবছর আমরা এই থিমের দৃশ্য তুলে ধরে অনেক দর্শনার্থী টানতে পারব।
নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করলে পুজো কমিটির সেক্রেটারি সঞ্জয় শীট ও শ্রীকৃষ্ণ পণ্ডিত বলেন, গতবছরের তুলনায় এবছর ভলান্টিয়ার্সের সংখ্যা বাড়ানো হবে এবং আমাদের লোকাল থানার পুলিশ আধিকারিকগণ রয়েছেন। তবে এবছর নিরাপত্তায় মুড়ে রাখা হবে এই পুজো মণ্ডপ।
গত কয়েকবছরে থিম ও প্রতিমাসজ্জায় ১০টি পুরস্কার জিতে নিজেদের ঝুলিতে পুড়েছে। এবারে দেখা যাক এবছরও থিম এবং প্রতিমাসজ্জায় নিজেদের ঝুলিতে আবার পুরস্কার জিততে পারে কি না।
এই পুজো উদ্বোধনে আসছেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা এবং নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রীমন্ত মালী সহ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।
এই উত্সবে পুজো কমিটিদের উদ্যোগে সমাজসেবকমূলক কাজ ও ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প এবং প্রতিবন্ধীদের বইখাতা বিতরণ করা হবে।