শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মান্না দে’র এনসাইক্লোপিডিয়া সঙ্গীত গবেষক দেবপ্রসাদ দাস

News Sundarban.com :
অক্টোবর ২৫, ২০১৯
news-image

 বিবেকানন্দ বসাক

সঙ্গীত গবেষণার ক্ষেত্রে ডিসকোগ্রাফি বলে একটা বিষয় রয়েছে। সে সম্পর্কে কিছুই জানা ছিল না দেবপ্রসাদবাবুর। এটাও জানা ছিল না মান্না দে ক’টা ভাষায় কতগুলো গান গেয়েছেন? দীর্ঘ গবেষণার ফলে সে রহস্যও উদ্ধার করেছেন তিনি। মান্না দে নিজেও জানতেন না এই সত্য। একদিন কথায় কথায় যখন দেবপ্রসাদ দাস মান্না দে’কে জানান যে তিনি ২৩ টি ভাষায় গান গেয়েছেন এবং গানের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। তা শুনে এই প্রবাদপ্রতিম প্রতিম শিল্পী রীতিমতো বিস্মিত। এ সবের সূত্রপাত হয়েছিল যখন তিনি দমদম চিড়িয়া মোড়ের রেডিও গলিতে ভারতের অন্যতম রেকর্ড সংগ্রাহক সুরাজলাল মুখার্জির বাড়িতে যান। পরিচয় হল রেকর্ড সংগ্রাহক রণবীর নিয়োগী, সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে।তাঁরা যখন শুনলেন, দেবপ্রসাদবাবু মান্না দে’কে নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছেন, তখনই তাঁরা বললেন, তুমি কি জান কী বিষয় নিয়ে কাজ করতে যাচ্ছ? কারণ এটা একটা সমুদ্র।

মান্না দে বোধহয় ভারতের প্রায় সবভাষায় গান গেয়েছেন। সেগুলো সংগ্রহ করা বেশ দুরূহ কাজ। তাঁরাও জানতেন না মান্না দে ঠিক কত গান গেয়েছেন? রণবীরবাবুর কাছ থেকে পেলেন সলিল চৌধুরীর সুরে মান্না দের গাওয়া “চেম্মিন” সিনেমায় মালয়ালম গান, ‘মানস মৈনে রডু’। এই গানটি মালয়ালম ভাষায় জাতীয় সঙ্গীতের মতো। সুরাজলাল মুখার্জির কাছ থেকে হিন্দি, মারাঠির ধারণা। হাতে পেলেন হরমন্দির সিং হামরাজের পাঁচ খণ্ডে ‘হিন্দি ফিল্ম কোষ’। এছাড়াও তালাত মাহমুদ, মহম্মদ রফি, লতা, আশা, মুকেশের ডিসকোগ্রাফি সংগ্রহে এলো। সঙ্গীত গবেষক স্নেহাশিস চ্যাটার্জি “মারাঠি চিত্র পটাঞ্চি সমগ্রসূচি” নামে একটি মারাঠি বইয়ের খোঁজ দিলেন। এমনকী নেপালি “মাইতিঘর” সিনেমায় গাওয়া মান্না দের গানের খোঁজ দিলেন তিনি। বিশ্বাস নেরুরকর, নারায়ণ ফারকে মারাঠি গানের ক্ষেত্রে সাহায্য করেন।পাঞ্জাবি গানে গুলশন পামর, সুরেশ চান্দভানকর হিন্দি।তারপর রেকর্ড, সিনেমার বুকলেট ও ক্যাটালগ সংগ্রহ থেকেও গবেষণার কাজ এগোল।গবেষণার কাজে ছোটাছুটি করতে গিয়ে কলকাতায় সুরাজলাল স্মৃতি সদনে অমিত গুপ্তের বাড়িতে এই প্রতিবেদককেও নিয়ে যান। শুধু তাই নয়, মহারাষ্ট্রের কল্যাণ স্টেশন থেকে উলহাস নগরে প্রীতম মেঘানির বাড়িতেও দেবপ্রসাদবাবুর সঙ্গে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। পুনেতে নারায়ণ ফারকের বাড়িতেও গিয়েছি।ফলে এই গবেষ্কের কাজের পরিধি যে কতদূর বিস্তৃত তা কিছুটা চাক্ষুষ করার সুযোগ ঘটেছে। পেপার ওয়ার্ক নয়, রীতিমতো এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছুটে ছুটে এই কাজ শেষ করেছেন।লিখেছেন কৃষ্ণচন্দ্র দে’কে নিয়ে।পরবর্তী কোনও এক সংখ্যায় সেই কাহিনি শোনাব।                                                                                        কিস্তি- দুই