শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন মহকুমা শাসক কে

News Sundarban.com :
মার্চ ১৫, ২০১৮
news-image

সুভাষ চন্দ্র দাশ

ছেলের অসহ্য অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে আগেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বছর পঁয়ষট্টির বৃদ্ধা মা সুভদ্রা কয়াল। কিন্তু তাতে সুরাহা না হওয়ায় অবশেষে ক্যানিং মহকুমা শাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেন ৬৫ বছরের সুভদ্রা কয়াল। চার ছেলে মেয়ে নিয়েই সংসার । অনেক কাল আগেই দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বড় ছেলে ধনঞ্জয় কয়াল অভাবের তাড়নায় চাম্পাহাটিতে রিক্সা চালান এবং পরিবার সহ ওখানেই থাকেন।ছোট ভাই মৃত্যুঞ্জয়ের অত্যাচারের তিনি তাঁর বৃদ্ধা মাকে দেখার ইচ্ছা থাকলেও ছোট ভাইয়ের দাদাগিরির জন্য যেতে পারেন না।অন্যদিকে নিজের বাস্তুভিটে থেকে বিতাড়িত হয়ে বর্তমানে অন্যের দরজায় দরজায় ঘুরছেন বৃদ্ধা সুভদ্রা দেবী।
স্বামী পঙ্কজ কয়াল জীবিত থাকাকালীন শুরু হয়েছিল ছেলের অত্যাচার। ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অকালেই মারা যান সুভদ্রা দেবীর স্বামী । দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার বাসন্তী ব্লকের মসজিদবাটি গ্রামে, সরকারি ভাবে পাট্টা পাওয়া জমিতেই বসবাস করতেন  সুভদ্রা দেবী।
সুভদ্রা দেবীর অভিযোগ, ছেলে মৃত্যুঞ্জয় কয়াল,ছেলের স্ত্রী সুষমা কয়াল ও মৃত্যুঞ্জয়ের  শ্বশুরবাড়ির লোকেদের ক্রমাগত অত্যাচারে  অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন বৃদ্ধা সুভদ্রাদেবী।বয়স্ক মাকে এমনিতেই কোনও আর্থিক খরচ দিত না ছেলে। শেষে ব্যাপক মারধর করে বাড়ি থেকেও বের করে দেয় গুণধর পুত্র মৃত্যুঞ্জয় কয়াল।আর সেই জমিতেই নিজেই পাকা বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছে বহাল তবিয়তে।
,অসহায় বৃদ্ধা নিজের জীবিকা নির্বাহের জন্য বাড়িতে সামান্য কয়েকটি কলাগাছ,গোটা কয়েক মুরগি ও পুকুরে অল্প কিছু মাছ চাষ করেছিলেন। সুভদ্রা দেবীর অভিযোগ, মারধর করে সব কিছুই কেড়ে নেয় তাঁর ছেলে মৃত্যুঞ্জয়। এবিষয়ে বাসন্তী থানার দ্বারস্থ হয়েও মেলেনি সাহায্য। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে দু’বার লিখিত ভাবে আবেদন করেন সুভদ্রাদেবী। সেখান থেকে বারে বারে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও, এখনও পর্যন্ত কিছুই হয়নি। পরোক্ষ্যভাবে, দিনের পর দিন বেড়েছে গুণধর ছেলের নির্মম অত্যাচার।কোনও উপায় না পেয়ে অবশেষে ছেলের বিরুদ্ধেই ক্যানিং মহকুমা সিনিয়র সিটিজেন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন সুভদ্রাদেবী। গত ফেব্রুয়ারি মাসের সেই অভিযোগেও কোনও সুরাহা না মেলায়, অবশেষে গত১৩ মার্চ মঙ্গলবার, ক্যানিং মহকুমা শাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন লিখিত ভাবে জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। ছেলের হাতে মার খেয়ে অপমানিত হওয়ার চেয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু অনেক ভালো বলেই মনে করেন বৃদ্ধা সুভদ্রা দেবী।
অন্যদিকে গুণধর পুত্র মৃত্যুঞ্জয় কয়াল মায়ের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন “মা যদি আমার কাছে এসে থাকেন তাহলে মায়ের যাবতীয় দায়দায়িত্ব নিয়ে কর্তব্য পালন করবো।”