রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুন্দরবনে তিন পুরুষ ধরে কালী পুজো, ১০৮টি কঙ্কালের মাথা দিয়ে তন্ত্র সাধনা

News Sundarban.com :
নভেম্বর ৫, ২০১৮
news-image

সুন্দরবনে ১০৫ বছর আগে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন মণিলাল চক্রবর্তী। তিন পুরুষ ধরে কালী পুজো হচ্ছে। সে সময় নাকি ১০৮টি কঙ্কালের মাথা দিয়ে তন্ত্র সাধনা করা হত। অপঘাতে মৃত্যু হয়েছেন এমন মানুষের মাথা খুলি পুজোয় দেওয়া হত। পুজো চলাকালীন এই নরমুণ্ডগুলোকে নৈবেদ্য হিসাবে নিবেদন করা হতো কাঁচা ছোলা, মদ ও মাংস। পঞ্চ মুন্ডাসনে বসে পুজো করতেন পুরোহিত। এভাবেই নাকি আত্মাকে জাগ্রত করা হতো। কথিত আছে, পুরাণে ভগীরথ মা গঙ্গাকে বয়ে নিয়ে গিয়ে গঙ্গাসাগরে মিলিত করেন।। আর এই গঙ্গাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তৈরি হয় মন্দির।
বর্তমানে কালী পুজোর দেখভাল করছেন পুরোহিত শ্যামল কুমার চক্রবর্তী। গত ৭৫ বছর ধরে কালীর সাধনা করে আসছেন তিনি। শ্যামলবাবু বলেন, ‘অপঘাতে মৃত নরমুণ্ড দিয়ে তন্ত্রসাধনা করলে অনেক কম সময়ে আত্মাকে জাগিয়ে মায়ের দর্শন পাওয়া যায়।’ তাঁর আরও দাবি, ‘আমি মায়ের সেবা করি। আমি ছাড়া অন্য কেউ মায়ের পুজোর কাজ ও তন্ত্র সাধনা করতে পারে না। যদিও কেউ জোর করে তা করে তাহলে তার শারীরিক ক্ষতি হয়’। মন্দিরের পাশেই রয়েছে শ্মশান এবং মন্দিরটাও তৈরি হয়েছে আদি শ্মশানের উপর।
পুরোহিতের ছোটো ছেলে সুমিত চক্রবর্তী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে পড়াশুনার পাশাপাশি বাবাকে পুজোর সাহায্য করছি। এখনও কালীপুজোয় বাবার সঙ্গে তন্ত্র সাধনায় যোগ দিই। যদি বাবা সেই দায়িত্ব অর্পণ করেন তাহলে তাঁর অনুপস্থিতিতে এই ধারা বয়ে নিয়ে যেতে রাজি।’ কালীপুজোয় নিজেদের মনোষ্কামনা পূরণের জন্য দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা ছুটে আসে এখানে। চাকরি, সন্তান লাভের আশায় ঢিল বেঁধে যায় কালী মন্দিরে। এ ভাবেই আধুনিক যুগে দাঁড়িয়েও অগাধ বিশ্বাসে পুজো করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।