শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে প্রতারণা চক্র ফাঁস

News Sundarban.com :
মে ৮, ২০১৮
news-image

সরকারি হাসপাতালে প্রায় সমস্ত পরিষেবাই বিনামূল্যে। অথচ রোগী এবং তাদের পরিবারকে বিভ্রান্ত করতে কীভাবে সক্রিয় হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ তা ফের প্রকাশ্যে এল। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে প্রতারণা চক্র ফাঁস। হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম পেতে স্বাস্থ্য দফতরে করা আবেদন আটকে রেখে টাকা চেয়েছিলেন পলাশ। যার ফলে কার্যত বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে মারা যান গড়িয়ার বাসিন্দা অমিত মণ্ডল।
গড়িয়ার সদ্য কলেজ পেরোনো যুবক অমিত মণ্ডলের মাথায় রক্ত জমাট বাঁধে। তাঁকে গত জানুয়ারি মাসে বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরো সায়েন্সে ভর্তি করা হয়। বিরল ব্রেন অ্যানিউরিসম রোগের শিকার ছিলেন অমিত। ওই যুবকের মস্তিষ্কে স্টেন্ট বসানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। প্রতিস্থাপনের খরচ সাড়ে সাত লক্ষ টাকা হলেও এই অর্থের পুরোটাই সরকার দেয়। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরের ছাড়পত্র লাগে। অনুমোদন আসতে দেরি হচ্ছিল। সেই সুযোগে স্টোরকিপার পলাশ দত্ত অমিতের পরিবারকে জানান, সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দিলে দ্রুত স্টেন্ট বসানোর ব্যবস্থা করে দেবে। স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো ফাইলও আটকে রাখেন পলাশ। এমনকী রোগীর পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের চিঠি আনলেও গুরুত্বই দেননি পলাশবাবু।

অমিতের পরিবারের বক্তব্য, স্টেন্ট প্রতিস্থাপন না হওয়ায় গত ২৭ এপ্রিল মারা যায় তাঁদের সন্তান। অমিতের অকালমৃত্যুর পর পলাশ দত্তের সঙ্গে এই নিয়ে তাঁর পরিবার কথা বলতে গেলে দুর্বব্যহার ও শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত সুবিচারের আশায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান অমিতের অভিভাবকরা। সুবিচারের আশ্বাস পেয়ে তাঁরা ভবানীপুর থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ শনিবার রাতে পলাশ দত্তকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পলাশকে এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আলিপুর স্পেশাল কোর্ট। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এর আগেও ওই স্টোরকিপারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় রেহাই পেয়ে যান পলাশ। তদন্তকারীদের অনুমান, এর পিছনে প্রভাবশালী মাথা জড়িয়ে থাকতে পারে। স্বাস্থ্যভবনের কোনও আধিকারিক যুক্ত আছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।