শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দুটি মঞ্চ দুই তারকার প্রিয়

News Sundarban.com :
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
news-image

সান্তিয়াগো বার্নাব্যু ও ন্যু ক্যাম্প। দুটি মঞ্চ দুই তারকার প্রিয়। প্রিয় গ্রাউন্ডে কখনও আলোকিত হন, আবার কখনও বা রঙ হারান তারা। আবার একজন দ্যুতি ছড়ালেও অন্যজন থাকেন নিষ্প্রভ। এই মৌসুমে অন্তত সেটাই দেখা গিয়েছিল এতদিন। অন্তত শনিবার রাতটি ব্যতিক্রম। গ্রুহের সেরা দুই ফুটবলার জ্বলে উঠলেন একই রাতে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বার্নাব্যুতে আর লিওনেল মেসি ন্যু ক্যাম্পে। ফুটবল দুনিয়া দেখল মহাতারকাদের চোখ ধাঁধানো ফুটবল। আপন আলোয় উজ্জ্বল ছড়ানোর রাতটিতে রেকর্ডের পাতা ওলট-পালট করেছেন রোনালদো ও মেসি।

লা লীগায় রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৩০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সিআর সেভেন। আলাভেসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েও নিঃস্বার্থের পরিচয় দিয়েছেন বর্তমান বিশ্বসেরা ফুটবলার। তার জোড়া গোলে আলাভেসকে ০-৪ গোলে হারিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল।

আর মেসিও গড়েছেন দুটি রেকর্ড। স্প্যানিশ লীগে ৩৬টি ভিন্ন ক্লাবের হয়ে গোল করার সঙ্গে সতীর্থকে দিয়ে গোল করানোর রেকর্ড গড়েন এ আর্জেন্টাইন। কাতালান ডার্বিতে জিরোনাকে ১-৬ গোলে বিধ্বস্ত করে বার্সা।

বার্নাব্যুতে রেকর্ডের মালা পরেন রোনালদো। আড়াই ঘণ্টা পর জিরোনার বিপক্ষে শুরু হওয়া ম্যাচে মেসিও ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম সংযুক্ত করেন। সিআর সেভেনের রেকর্ডটি নিয়ে বিতর্ক আছে। রিয়াল মাদ্রিদের হিসাব অনুযায়ী, লিওনেল মেসির চেয়ে কম ম্যাচ খেলে লা লীগায় ৩০০ গোল করেন রোনালদো। তবে অফিসিয়াল হিসেব বলছে, গোল একটি কম; ২৯৯। রিয়ালের হিসেব অনুযায়ী, স্পেনের শীর্ষ লীগে ২৮৫ ম্যাচ খেলে ৩০০ গোল করেন সিআর সেভেন। ৩০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে মেসির লাগে ৩২৬ ম্যাচ। অর্থাৎ মেসিকে ছাড়িয়ে দ্রুততম ৩০০ গোল এখন পর্তুগিজ তারকার।

রোনালদোর গোল সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক ২০১১ সালে আলাভেসের বিপক্ষে গোলটি নিয়ে। রোনালদোর ফ্রি-কিক তার সে সময়ের সতীর্থ পেপের পিঠে লেগে চলে যায় জালে। রিয়াল এখনও সে গোলটি রোনালদোর ধরে নিয়েছে। তবে অফিসিয়ালরা তা পেপের গোল বলছে। অফিসিয়াল সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও মেসির চেয়ে কম ম্যাচ খেলে সিআর সেভেন যে ৩০০ গোল করবেন, তা অনেকটা নিশ্চিত।

মাইলফলকের ম্যাচে রোনালদো বেশি আলোচনায় করিম বেনজেমাকে দিয়ে গোল করানোয়। স্বাভাবিকভাবে রিয়ালের হয়ে সব পেনাল্টিই নেন রোনালদো। এদিন হ্যাটট্রিকের সামনেও ছিলেন তিনি। কিন্তু অনেক দিন গোল করতে না পারা করিম বেনজেমাকে স্পট কিক নেওয়ার সুযোগ করে দেন রোনালদো। হ্যাটট্রিক হয়নি তার। নিঃস্বার্থের পরিচয় দেওয়া রোনালদোর প্রশংসা করেন কোচ জিদান, ‘বেনজেমার দিকে চমৎকার ইঙ্গিত করায় ক্রিশ্চিয়ানোকে নিয়ে আমি খুবই খুশি। এটা দেখিয়েছে, সে দলের জন্য একজন নিবেদিত খেলোয়াড়। বেনজেমার একটা গোল পাওয়ার প্রয়োজন ছিল, যেহেতু সে পুরো ম্যাচেই ভালো খেলেছে।’

প্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো সবুজ গালিচায় আলো কেড়েছেন। ছাপিয়ে যাওয়ার জন্য মেসিও নেমে পড়েন। জিরোনার বিপক্ষে তিনিও করেন জোড়া গোল। একটি গোলে অ্যাসিস্টও করেছেন পাঁচবারের বর্ষসেরা এ ফুটবলার। ফ্রি-কিকে তার করা গোলটি এক কথায় অসাধারণ ছিল। প্রথমবার লা লীগায় খেলতে আসা জিরোনার বিপক্ষে ম্যাচে দুটি রেকর্ড গড়েন তিনি। লা লীগায় ভিন্ন ৩৬টি ক্লাবের বিপক্ষে গোল করার কীর্তি গড়েন বার্সেলোনার এ সুপারস্টার। তিনটি ক্লাব ছাড়া স্প্যানিশ শীর্ষ লীগে মুখোমুখি হওয়া সব দলের বিপক্ষে গোল করেছেন এ আর্জেন্টাইন। তিনটি ক্লাবের মধ্যে কদিস দ্বিতীয় সারির, রিয়াল মুর্সিয়া তৃতীয় সারির এবং হেরেস চতুর্থ সারির লীগে আছে।

আর স্পেনের শীর্ষ লীগে সতীর্থকে দিয়ে মোট ১৪৮টি গোল করিয়েছেন মেসি; যা স্প্যানিশ এ লীগের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। একই সঙ্গে ন্যু ক্যাম্পে ১৩০ ম্যাচে গোল করার কীর্তি গড়েন এ আর্জেন্টাইন।