শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল কাসুর

News Sundarban.com :
জানুয়ারি ১২, ২০১৮
news-image

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুরে জয়নব নামে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে স্থানীয় জনতা। বুধবার বিক্ষোভকারীরা কাসুর শহরে পুলিশ প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়। এতে দু’জন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে। শুক্রবারও অব্যাহত আছে বিক্ষোভ।

এর আগে এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার নিজের সাত বছরের শিশুকন্যাকে কোলে নিয়ে টেলিভিশনে খবর পড়েন পাকিস্তানের সামনা টিভির উপস্থাপিকা কিরণ নাজ। খবরের শুরুতেই তিনি বলেন, আজ আমি শুধু আপনাদের সংবাদ সঞ্চালক নই, এখানে আজ আমি একজন মা হিসেবে উপস্থিত হয়েছি। সে কারণেই আমার কোলে রয়েছে আমার ছোট্ট মেয়ে। এটি শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ।

গত সোমবার কোরআন শিখতে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় শিশু জয়নাব। নিখোঁজের এক দিন পর মঙ্গলবার বাড়ি থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে একটি আবর্জনার স্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় তার লাশ। শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে পাঞ্জাবের মানুষ। তাদের অভিযোগ, শহরটিতে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা বেড়ে গেলেও প্রশাসন তা দমনে ব্যর্থ হচ্ছে। এমনকি জয়নাব হত্যার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন গড়িমসি করেছে।

জয়নাবের পরিবারের দাবি, তাদের সন্তান নিখোঁজের পরপরই পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ থাকার পরও পুলিশ দোষী ব্যক্তিকে ধরতে পারছে না।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক ব্যক্তি জয়নাবকে হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তবে ওই ব্যক্তির চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। ফুটেজ দেখে পুলিশ ওই ব্যক্তির প্রতিকৃতি এঁকেছে।

রাজ্য পুলিশ বলছে, কাসুরে গত দুই বছরে এ রকম ১২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্যে পাঁচজনের হত্যার ঘটনায় এক ব্যক্তিই সন্দেহ করা হচ্ছে। এসব হত্যায় জড়িত সন্দেহে এ পর্যন্ত ৯০ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও জয়নাব হত্যার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। ‘হ্যাশট্যাগ জাস্টিস ফর জয়নাব’ লিখে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন চলচ্চিত্র ও ক্রিকেট তারকারা। এ ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তারা।

পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশে এক টুইটে অভিনেত্রী মাহিরা খান লিখেছেন, খুনিকে খুঁজে বের করতে যা যা করা দরকার তাই করুন। আল্লাহর দোহাই লাগে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। এমন উদাহরণ তৈরি করুন যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করার সাহস কেউ না পায়।

টুইটারে ‘জাস্টিস ফর জয়নাব’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে মোহাম্মদ আমির লেখেন, আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। নিঃসঙ্গ ও ঘৃণ্য মনে হচ্ছে। এটা ভেবে অবাক হচ্ছি যে, আমরা কোন সমাজে বাস করছি। শিশুটির মা-বাবার প্রতি সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই আমার।