শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিক্ষক দিবসে ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় উপহার দিলেন প্রাক্তন শিক্ষারত্ন শিক্ষক

News Sundarban.com :
সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
news-image

সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং – শিক্ষকদের সম্মানার্থে শিক্ষক দিবস পালিত হয়।ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর জন্ম দিবস উপলক্ষে এই শিক্ষক দিবসেই শিক্ষকদের সম্মান দেওয়াই এই দিবসের মূল লক্ষ্য।এবার ব্যতিক্রমী শিক্ষক দিবস পালিত হল প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লক বাসন্তী ব্লকের ভরতগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচ নম্বর ভরতগড় গ্রামে। গ্রামেই প্রায় শতাধিক পরিবার রয়েছে। অধিকাংশ আদিবাসী সম্প্রদায়। জানা যায় বিগত প্রায় দেড়শ বছর আগে বিহারের ছোটনাগপুর থেকে সুন্দরবনের এই ভরতগড় এলাকায় এসেছিলেন আদিবাসী পরিবার গুলো। উদ্দেশ্য ছিল সুন্দরবনের জঙ্গল কেটে বসতি গড়ে তোলা। বসতি গড়ে উঠলেও তারা কিন্তু আর বিহারের ছোট নাগপুরে ফিরে যাননি। দরিদ্র অসহায় পরিবারগুলো সুন্দরবনের ভরতগড় পাঁচ নম্বরে থেকেই গিয়েছিলেন। বর্তমানে ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে কোন রকমের দিন গুজরান করেন এই আদিবাসী পরিবার গুলো। অসহায় পরিবারের শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে অনেক দূর পিছিয়ে। গ্রামের দু কিলোমিটার মধ্যে স্কুল থাকলেও অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে স্কুলে যাওয়া হয়ে ওঠেনা এই সমস্ত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের। শিক্ষক দিবসের দিন একটি বিদ্যালয় উপহার দিলেন স্বয়ং শিক্ষারত্ন প্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষক অমল নায়েক।

অমল নায়েক। তিনি সুন্দরবনের মানুষের জন্য দীর্ঘদিন যাবত কাজ করে চলেছেন। ইতিমধ্যে স্কুল ছুট ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে ৪ টি স্কুল গড়েছেন।অসংখ্য ব্যাঘ্রবিধবা মায়েদের কে স্বনির্ভর করে তুলেছেন। সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় সবুজায়ন করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য হাজার হাজার ফলের চারাগাছ বিতরণ করেছেন।মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের দিনেই অমল বাবুর হাত ধরেই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণের সঞ্চার হয়।যেখানে এলাকার দরিদ্র পরিবারের পঞ্চাশজন ছেলে মেয়ে বিনাব্যয়ে পড়াশোনা করতে পারে। তাদের কে স্কুলের তরফ থেকে পড়ার সামগ্রী এবং পোশাকও দেওয়া হবে বিনামূল্যে।দুজন শিক্ষক সোম থেকে শনিবার পর্যন্ত স্কুলের পঠনপাঠনের দায়িত্বে থাকবেন।

সমাজসেবী তথা শিক্ষারত্ন প্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষক অমল নায়েক জানিয়েছেন, প্রতিবছরই শিক্ষক দিবসের জন্য চাতকের মতো অপেক্ষা করে থাকি।শিক্ষক হিসাবে শিক্ষকদের সম্মান প্রদানের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি।এবার তার ব্যতিক্রম ছিল। গার্ডেনরীচ রোটারী ক্লাব ও চম্পা মহিলা সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে শিক্ষক দিবসের দিন ছাত্র ছাত্রীদের সম্মান জানিয়ে একটি স্কুল চালু করা হয়েছে। যেখানে অসহায় দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা শিশু থেকে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত বিনাব্যয়ে পড়াশোনা করতে পারবে।শিক্ষক দিবসের দিন এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পেরে শিক্ষক হিসাবে গর্ববোধ হচ্ছে।’

এদিন অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রোটারি ক্লাব গার্ডেনরিচের সভাপতি রোটারীয়ান শ্বেতা বোস বড়ুয়া সহ সাত জন বিশিষ্ট রোটারিয়ানগন।