সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মৌশুনী গ্রাম পঞ্চায়েত কার দখলে থাকবে, শুরু রাজনৈতিক তরজা

News Sundarban.com :
জুলাই ৭, ২০২৩
news-image

নিজস্ব প্রতিনিধি, নামখানা: আগামী ৮ ই জুলাই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন এমনটা জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের আগে মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েত কে দখল করবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। শাসক বিরোধী দুই পক্ষই গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। শাসকের হাতিয়ার উন্নয়ন ও বিরোধীদের হাতিয়ার দুর্নীতি।

এই নিয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে দুই পক্ষই। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মৌসুনিতে কুড়িটি আসনে ভোট হবে। যা গত বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের থেকে পাঁচটি আসন বেশি। এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় আসতে হলে, যেকোনো রাজনৈতিক দলকে ১১ টি আসনে জিততে হবে। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে কুড়িটি আসনের মধ্যে সবকটি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছে।মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের বিদায়ী সদস্যদের মধ্যে একজন সদস্য এবারের পঞ্চায়েত ভোটে পঞ্চায়েত স্তরে টিকিট পেয়েছে। বিদায়ী প্রধান ও উপ প্রধান টিকিট পাননি। তবে সিপিআইএম সবকটি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে।

তবে বিজেপির সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি। তবে এবারের পঞ্চায়েত ভোটে নির্দলের হয়ে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির সমর্থিত নির্দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তথা মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সময় তৃণমূলের দাপুটে নেতা শুভেন্দু বিকাশ মান্না। তিনি মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৫৯ নম্বর বুথ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রদীপ হাতী। যিনি গত বিধানসভায় ভোটে বিজেপি কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত এই বুথটি সিপিআইএমের দখলে ছিল ।২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয়। তারপরে দুটি নির্বাচনে বিধানসভা ও লোকসভায় বিজেপি এগিয়ে ছিল। সবার নজর রয়েছে এই বুথের দিকে। মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৫৮ নম্বর বুথে কাকিমার বিরুদ্ধে ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভাইঝি। কাকিমার সবিতা রানী সিট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূলের হয়ে ও ভাইজি রিনা সিট গিরি প্রতিদন্দ্বিতা করছেন বিজেপির হয়ে। এই বুথটি ও ২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত সিপিআইএমের দখলে ছিল। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল জয়ী হয়। পরের দুটি নির্বাচনে লোকসভা ও বিধানসভায় বিজেপি এগিয়েছিল। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএম এর প্রাক্তন প্রধান সেক ইলিয়াসের বিরুদ্ধে, ভোটে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায়ী সদস্য কাউম খাঁন।

অন্যদিকে , মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি বীরেন গিরি নির্দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবথেকে কনিষ্ঠতম প্রার্থীর নাম বিজেপির মালতী ভূঁইয়া দাস। ২০০৩ সালের আগে পর্যন্ত মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েত সিপিআইএমের দখলে ছিল। ২০০৩ সালে কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল জোট পঞ্চায়েত গঠন করে। ২০০৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পঞ্চায়েত গঠন করে। ২০১৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিআইএম আবারও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েত গঠন করেন। তবে ২০১৩ সালে ১৫ টি আসনের মধ্যে সিপিআইএম পেয়েছিল৮ টি ও তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৭ টি। প্রায় আড়াই বছর সিপিএম পঞ্চায়েত চালানোর পর সিপিআইএম সদস্য আদালত খাঁন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে। পরে তৃণমূল কংগ্রেস অনাস্থা প্রস্তাব আনলে সিপিআই এম একক সংখ্যাগরিষ্ঠ হারায়। ফলে আবারও তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত গঠন করে। প্রধান হন আদালত খাঁন। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভোটে জয়ী হয়। ১৫ টি আসনের মধ্যে তিনটি আসন পেয়েছিল বিরোধীরা ও নির্দল। বাকি ১২ টি আসন তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধীরা রাস্তাঘাট, পানীয় জলের সমস্যা হাসপাতালে ২৪ ঘন্টা ডাক্তারি পরিষেবা,বেহাল নদী বাঁধ, আমফান দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ মানুষের কাছে তুলে ধরছে। শাসকের কাছে হাতিয়ার উন্নয়ন, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সজল ধারা প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া, হাসপাতালে ডাক্তার আসা, মৌসুনিতে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা ও কংক্রিটের স্থায়ী নদী বাঁধ। এই সব উন্নয়ন নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছে শাষক। দুপক্ষেরী দাবি এবারের পঞ্চায়েত গঠন করবে। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েত কার দখলে থাকে।