ব্লক যুবতৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগ্যে রাখির পরিবর্তে তুলেদিলেন মাস্ক
নিজস্ব প্রতিনিধি ,ক্যানিং – সোমবার সকালে ক্যানিং ব্লক যুবতৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগ্যে পালিত হল রাখিবন্ধন উৎসব। অন্যান্য বছরের ন্যায় করোনা আর লকডাঊনের বিপর্যয়ের জন্য রাখি বন্ধন উৎসব ছিল ফ্যাকাসে। ভ্রাতৃত্ব এবং মেলবন্ধনের জন্য হাতে রাখি বাঁধার পরিবর্তে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সাধারণ মানুষের হাতে তুলেদিলেন মাস্ক। এদিন ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রায় পাঁচ হাজার পথচারীর হাতে মাস্ক তুলে দিয়েছে যুবতৃণমূল কংগ্রেস।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর পরেশ রাম দাস,ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনিমা মিস্ত্রী,ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বুলু মন্ডল,মাতলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী অরিত্র বোস,সোনাই মোল্লা,শিলাদিত্য রায় সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা।ঐতিহাসিক রাখি পূর্ণিমায় রাখির পরিবর্তে মাস্ক কেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে জেলার যুবতৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর পরেশ রাম দাস বলেন “বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিদিন বেড়েই চলেছে।এখনও অনেক মানুষজন মাস্ক ব্যবহার করছেন না। ফলে ভ্রাতৃত্ববোধ মেল বন্ধনে সাধারণ মানুষের সচেতন করতে রাখির পরিবর্তে মাস্ক তুলে দিয়েছি। যাতে করে সাধারণ মানুষজন সবসময় মাস্ক ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হন। ”
উল্লেখ্য রাখীপূর্ণিমা দেশের একটি জাতীয় উৎসব। এই উৎসব ভাই ও বোনের মধ্যে প্রীতিবন্ধনের উৎসব। হিন্দু, জৈন ও শিখ এমন কি মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনও এই উৎসব পালন করেন। এই দিন দিদি বা বোনেরা তাদের ভাই বা দাদার হাতে রাখি নামে একটি পবিত্র সুতো বেঁধে দেয়। এই রাখি টি ভাই বা দাদার প্রতি দিদি বা বোনের ভালবাসা ও ভাইয়ের মঙ্গলকামনা এবং দিদি বা বোনকে আজীবন রক্ষা করার ভাই বা দাদার শপথের এক উজ্জ্বল প্রতীক। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব উদযাপিত হয়।চিতোরের বিধবা রানি কর্ণবতী মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের সাহায্য প্রার্থনা করে একটি রাখি পাঠিয়েছিলেন। এর পর থেকে এই উৎসবের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
পরবর্তী ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করতে গিয়ে রাখিকেই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১৯০৫ সালের ২০ জুলাই ব্রিটিশ সরকার বঙ্গভঙ্গের কথা ঘোষণা করে জানিয়ে দেয় আইন কার্যকরী করা হবে ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর।
এর বিরোধিতায় সর্বধর্মের মানুষ প্রতিবাদে নামেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই দিনটিকেই বেছে নেন একে অপরের হাতে রাখি পরিয়ে মিলনের বার্তা দিয়ে। এই রাখিবন্ধন উৎসবের মধ্যে মিশে আছে সব-ধর্মের মানুষের এক বিশেষ মিলনের বার্তা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই রাখি বন্ধন উৎসব নিয়েই লিখেছিলেন, ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল। পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, হে ভগবান।’