শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সন্তান বুকের দুধ ঠিকমতো, পরিমাণমতো পাচ্ছে কি!

News Sundarban.com :
আগস্ট ৩১, ২০১৯
news-image

বুকের দুধই শ্রেষ্ঠ। কোনো বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে কোনো অযাচিত প্রশ্নও থাকা উচিত নয়। তবে প্রায় প্রত্যেক মায়ের একটা সন্দেহ বা আশঙ্কা থাকে। তার সন্তান বুকের দুধ ঠিকমতো, পরিমাণমতো পাচ্ছে কি! চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে বুঝবেন, সব ঠিকঠাক আছে।

জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যেই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এরপর দু-তিন ঘণ্টা ব্যবধানে বা যখনই শিশুর ক্ষুধা পাবে, তখনই খাওয়াতে হবে। ক্ষুধা লাগলে শিশু ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া শুরু করে, চারপাশে মাথা ঘোরায়, মুখে চুকচুক শব্দ করে, মুখ নাড়ায়, আঙুল-কাপড় ইত্যাদি চোষা শুরু করে। তখন খেতে না দিলে কান্না শুরু করে। শিশু যখন পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ পাবে, তখন সে ঘন ঘন ঢোক গিলবে। না পেলে বারবার স্তন চুষবে কিন্তু ঢোক গিলবে না। দীর্ঘ সময় স্তন মুখে নিয়ে রাখবে। কখনো কখনো কান্না শুরু করে, না হলে ক্লান্ত হয়ে স্তন মুখে নিয়ে ঘুমিয়ে যায়। এমনিতে জন্মের পর শিশু একটু বেশি ঘুমিয়ে থাকে; দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা। ঘুমিয়ে থাকলেও দুঘণ্টার বেশি শিশু যেন না খেয়ে থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখবেন।

পেট ভরা থাকলে শিশুকে খুশি খুশি দেখাবে। খেলবে, হাসবে। তবে যদি শিশু অনবরত কান্না করতে থাকে, তার মানে হতে পারে শিশু ক্ষুধার্ত। এটা নয় যে, সে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ পাচ্ছে না। এমন অনেক মা আছেন, শিশু কান্না করলে মনে করেন শিশু দুধ পাচ্ছে না অথবা কম পাচ্ছে। এই ধারণা ঠিক নয়। ক্ষুধা ছাড়াও আরও অনেক কারণে শিশু কান্না করতে পারে। যেমনÑ পিঁপড়া কামড়ালে, ঠা-া লাগলে ইত্যাদি।

প্রথম ছমাস সে দুই-তিন ঘণ্টা পর পর খেতে চাইবে। যদি এক ঘণ্টা অথবা তার চেয়ে কম সময়ে আবার খেতে চায়, তবে বুঝতে হবে, হয় সে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ পাচ্ছে না, নয়তো আবার ক্ষুধা লেগেছে। নবজাতক শিশুর পাকস্থলী ছোট হয়ে থাকে। তাই এমন হতে পারে যে, বারবার ক্ষুধা লাগে। এর মানে এটা নয়, সে দুধ কম পাচ্ছে। তখন তাকে আবার খেতে দিন। যে কোনো এক স্তনের দুধ খাওয়া পুরোপুরি শেষ করলে অন্য স্তন মুখে দিন। এভাবে স্তন পরিবর্তন করে শিশুকে দুধ পান করান। সময় নিয়ে বুকের দুধ খাওয়ান। তাতে শিশু বুকের দুধের সম্পূর্ণ পুষ্টি পাবে। শিশুর প্রস্রাবের দিকে খেয়াল রাখুন। যদি চব্বিশ ঘণ্টায় ছবার বা তার বেশি প্রস্রাব করে, তা হলে বুঝতে হবে সে পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে। চিন্তার কোনো কারণ নেই।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে ওজন। প্রথম সপ্তাহ শিশুর ওজন কিছুটা কমে যাওয়া স্বাভাবিক। প্রথম তিন-চারদিন ওজন ৫ শতাংক থেকে ৭ শতাংশ কমতে পারে। ভয় নেই। কিছুদিনের মধ্যে শিশুর ওজন বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করবে। কিন্তু যদি ওজন হ্রাসের পরিমাণ ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি হয়, তবে তা চিন্তার বিষয়। যদি তার ওজন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে সে পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পাচ্ছে।

লেখক : আবাসিক চিকিৎসক