মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থর জামিনের আবেদনের বিরোধিতায় ইডি

News Sundarban.com :
জুলাই ২৭, ২০২৩
news-image

রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘প্রভাবশালী’! পার্থের জামিনের বিরোধিতায় আবার একবার এই তত্ত্ব খাড়া করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।

নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত পার্থের জামিনের মামলার শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার। এর জন্য তাঁকে বৃহস্পতিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়। শুনানি চলাকালীন ইডি দাবি করে, পার্থ রাজ্যের এক জন ‘প্রভাবশালী’ ব্যক্তিত্ব। ইডির অভিযোগ, পার্থ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একা হাতে ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছেন। তাই তাঁর কোনও মতেই জামিন পাওয়া উচিত নয়।

পার্থবাবু যে প্রভাবশালী, সেই তত্ত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য পাঁচ যুক্তিও আদালতে দিয়েছেন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। সেই পাঁচ যুক্তি হল—গ্রেফতারির পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেছিলেন পার্থ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ফোন ধরেননি। ‘প্রভাবশালী’ না হলে কেউ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করতে পারেন না বলেই যুক্তি দিয়েছে ইডি। পার্থবাবুর গ্রেফতারি মেমোতে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয় বলে উল্লেখ করা রয়েছে। তিনি যদি প্রভাবশালী না হতেন, তা হলে এমন উল্লেখ থাকত না বলে দাবি ইডির।
গ্রেফতারির পর অসুস্থতার কারণে পার্থবাবুকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু আদালতে ইডি দাবি করেছে, তিনি আদপে অসুস্থ ছিলেন না। ইডির যুক্তি, হাই কোর্টের নির্দেশে তাঁকে ভুবনেশ্বর এমসে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁর শরীরে অসুস্থতার কোনও ছাপ পাননি। ইডির দাবি, গ্রেফতারি এড়াতে তিনি অসুস্থতার ‘ভান’ করেছিলেন। আর তিনি প্রভাবশালী বলেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হতে পেরেছিলেন, যুক্তি ইডির।

‘জেল কোড’ অনুযায়ী সংশোধনাগারে কোনও বন্দির আংটি পরার অনুমতি নেই। কিন্তু তিনি দীর্ঘ দিন জেলের মধ্যে আংটি পরেছিলেন। ইডির যুক্তি, তিনি প্রভাবশালী হওয়ার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছিল।

ইডি আদালতে জানিয়েছে, শুনানির দিন আদালতে নিয়ে আসার সময় তাঁর জন্য পৃথক গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু অন্য বন্দিদের নিয়ে আসা হয় প্রিজ়ন ভ্যানে চাপিয়ে। তাঁর জন্য পৃথক ব্যবস্থা কেন? প্রশ্ন তুলেছে ইডি। ইডির যুক্তি, তিনি প্রভাবশালী হওয়ার কারণেই তিনি এই বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন।

আদালতে ইডির আইনজীবী অভিযোগ তোলেন, পার্থবাবু রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একা হাতে ‘ধ্বংস’ করে দিয়েছেন। এই কাজে তাঁকে আরও কয়েক জন সাহায্য করেছেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি। ইডির অভিযোগ, রাজ্যের অনেক জায়গাতেই বেসরকারি স্কুল নেই। সরকারি স্কুলের উপরই নির্ভর করে থাকতে হয় পড়ুয়াদের। তাই সেই সব স্কুলে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগের অর্থ স্কুলের পড়াশোনার মান নষ্ট করা। এই ভাবে পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে বলেও অভিযোগ ইডির।