শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লকডাউনের বজ্র আঁটুনির ফাঁকেই স্পষ্ট ফস্কা গেরোর ছবি, প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকা

News Sundarban.com :
আগস্ট ২৮, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক: কড়া পুলিশি বন্দোবস্ত আর প্রতিকূল আবহাওয়ার যুগলবন্দি স্বত্তেও শুক্রবার রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউনে কিছুটা অন্য রকম ছবি ধরা পরল।রাত থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি , রাস্তায় জমা জল উপেক্ষা করেই অন্যান্য লকডাউনের দিনের মতোই পুলিশ কর্মীরা সকাল থেকে সব বন্ধ রাখতে মাঠে নেমেছিলেন।রাতভর বৃষ্টিতে জল থই থই শহরের রাস্তাঘাট প্রায় জন শূন্যই ছিল। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি থাকলেও একাংশের মানুষের উদাসিনতা ও লকডাউনকে হালকা ভাবে নেওয়ার প্রবণতার বিপরিত ছবিও দেখা গেছে কলকাতা থেকে জেলায়।খাস কলকাতায় বাজার ঘিরে ভিড় জমতে দেখা গেছে।জেলাতেও লকডাউন ভেঙে দোকান খুলতে আড্ডা জমাতে দেখা গেছে কিছু মানুষকে।

বিশেষজ্ঞরা যেমন এর জন্য একাংশের মানুষের উদাসিনতার পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যর্থতাকেও দায়ী করছেন। তাদের মতে যে ভাবে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে লকডাউনেরর দিনক্ষণ নিয়ে কার্যত ছেলে খেলা করা হচ্ছে তা জনমানসে ভুল বার্তা দিচ্ছে।বারবার দিন বদল করা, লকডাউন ঘোষণা করে আবার তা প্রত্যাহার করে নেওয়া এইসব ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে লকডাউনের গুরুত্বকে খর্ব করছে।পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের নীচের স্তরেও এই নিয়ে উদাসিনতা তৈরি হয়েছে।তাই খাস কলকাতায় পুলিশের বজ্র আঁটুনি থাকলেও জেলায় জেলায় ফস্কা গেড়োর ছবিটা বেশি করে প্রকট হয়ে উঠছে বলে তাদের অভিমত।

অবশ্য লকডাউন কে বুড়ো আঙুল দেখানোর ছবি ধরা পড়ছে খাস কলকাতাতেও। লকডাউন অমান্য করে কলকাতা পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে, নারকেলডাঙার গুরুদাস রোডে রাস্তার ওপরেই সকালে সবজি, মাছ, মাংস নিয়ে বসেছেন বিক্রেতাদের বাজার বসাতে দেখা যা্য় সেখানে ক্রেতাদের ভিড়ও ছিল যথেষ্ট । যদিও মূল বাজারের গেট বন্ধ।সংবাদ মাধ্যমে এই নিয়ে হইটই শুরু হওয়ার পর টনক নড়ে পুলিশের। হানা দিয়ে বাজার তুলে দেওয়া হয়। কয়েকজন বিক্রেতাকে আটকও করে নারকেলডাঙা তানার পুলিশ ।

কইরকম ভাবে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার বিভিন্ন এলাকায় কিছু দোকানপাট খুলতে দেখা গিয়েছে। রাস্তায় লোকজন ভিড়ও করেছেন। সেভাবে পুলিশের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ। বীরভূমের মুরারই থানা এলাকায় সকাল থেকে নাকা চেকিং ছিলনা । ফলে অবাধে রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছেন মানুষজন। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে রোজকার মতোনি বসে যায় বাজার। সেখানে সামাজিক দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে বেচাকেনা করেন অসংখ্য মানুষ।দীর্ঘক্ষণ আবাধে বিকিকিনি চললেও দেখা মেলেনি পুলিশের।ওই জেলারই রঘুনাথগঞ্জে একই ছবি দেখা গেছে। সেখানেও খোলা ছিল দোকানপাট, বাজার। মালদা জেলার ইংরেজবাজার, রতুয়া এলাকাতেও বেশকিছু দোকান খুলে অবাধে বেচাকেনা চলেছে। শিলিগুড়িতে অবশ্য পুলিশের কড়া ভূমিকা চোখে পড়েছে। লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হওয়া কয়েকজন যুবককে কান ধরে ওঠবোস করায় পুলিশ। একই চিত্র কোচবিহারেও ধরা পড়েছে।বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ থাকলেও চাকির মোর, নতুন বাজার এলাকায় দোকান খোলা ছিল। বেশ কিছু মানুষ লকডাউন উপেক্ষা করে বাইরে বেরিয়েছিলেন। শাস্তি দিতে তাঁদের রাস্তার ধারেই কান ধরে ওঠবোস করায় পুলিশ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামতরক হাটেও লকডাউন ভাঙার ছবি ধরা পড়েছে। লকডাউনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সকাল থেকে চলে বেচাকেনা। সকালের দিকেপুলিশ নির্বিকার থাকলেও বেলার দিকে সেখানে গিয়ে হাট বন্ধ করায় পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং বাজারেও একই ছবি ধরা পড়েছে। সেখানেও বেশ কয়েকটি দোকান খুলেছিল লকডাউন উপেক্ষা করেই। দোকানে ভিড়ও জমিয়েছিল সাধারণ মানুষ।