সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নেটওয়ার্ক ধীরগতির কারণে শেষ পর্যন্ত গাছে ওঠাই সমাধান

News Sundarban.com :
অক্টোবর ২৮, ২০১৭
news-image

ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে শেষ পর্যন্ত গাছে ওঠাই সমাধান হয়ে দাঁড়িয়েছে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের রাঁচীর কয়েকটি এলাকা!

এভাবেই প্রতিদিন ওই এলাকার মানুষ প্রযুক্তির ‘যথাযথ’ ব্যবহার করছেন বলে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

উপায় কী! এসব গ্রামের গাছে গাছে শুধু পাখি নয়, বাসা বাঁধে ইন্টারনেটও। কিন্তু পাখির মতো মাঝে মাঝে মাটিতেও নেমে আসাটা ধাতে নেই সেই সিগন্যালের। তার দেখা মেলে শুধু গাছেই।

রাঁচীর একটি গ্রামে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে নানা কাজ করেন সুনীল। তিনি বলেন, গ্রামের অনেকেরই হাতে স্মার্টফোন চলে এসেছে। অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা মোবাইলে গান, সিনেমা নামাতে চায়। চাকরির ফর্ম ভরা, অনলাইন শপিংও করে দিতে হয়! অতএব- ‘ইন্টারনেট চাও তো গাছে উঠে যাও!’

জেলা সদর থেকে মাত্র ২৫-৩০ কিলোমিটার দূরে সরযূ। ক’দিন আগে পর্যন্ত যে গ্রামের বাসিন্দারা জানতেন, মাথা খুঁড়ে মরলেও তারা ইন্টারনেট পাবেন না। অথচ ঝাড়খণ্ডের প্রতি গ্রামে ক্যাশলেস লেনদেন চালুর স্বপ্ন দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। প্রতিটি দোকানে ‘পয়েন্ট অফ সেলস’ (পিওএস) মেশিন বসানোর কথাও বলছে সরকার। কিন্তু ওই পর্যন্তই। নেটের কাজকর্ম থাকলেই সরযূবাসীকে পাড়ি দিতে হতো লাতেহারে।

হঠাৎ এক দিন কে যেন পেলেন আলাদিনের প্রদীপ। দেখলেন, গ্রামের দুটি বিশাল বট-অশ্বত্থ গাছের মাথায় উঠলেই পাওয়া যাচ্ছে ইন্টারনেট! বিশাল এক তেঁতুল গাছেও ইন্টারনেটের বাসা। ব্যস!

এখন রোজ সকাল থেকে বিকেল, সরযূ গ্রামে গেলেই এই তিনটি মহাবৃক্ষের মগডালের বসা কিছু তরুণকে চোখে পড়বেই। সবাই ব্যস্ত। কারও হাতে ল্যাপটপ, কারও স্মার্টফোন। আর গাছে চড়তে অসুবিধে হলে সুনীলরা তো আছেনই।

হাতে স্মার্টফোনটা দেখিয়ে গ্রামের মেয়ে নীতা কুমারী বলেন, কিছু ভোজপুরি ছবির গান নামাতে চাইছিলাম। সুনীল ভাইয়া বটগাছে উঠে গান ডাউনলোড করে দিলেন।

সুনীলের মতোই ‘সার্ভিস’ দিচ্ছেন সরফরাজ আনসারি। তিনি বলেন, যার যা দরকার, একটা তালিকা নিয়ে গাছে উঠে যাই। তার পর গাছের ডালে ধরে ফেলি নেটওয়ার্ক।

তরুণ রণধীর কুমার আবার গাছে চড়ায় তেমন পারদর্শী নন। তাই ল্যাপটপের সঙ্গে কেনা ‘ডঙ্গল’ লম্বা দড়িতে বেঁধে ছুড়ে দেন মগডালে। ‘ডঙ্গল’ গাছে আটকে গেলে গাছতলায় বসে পড়েন। কাজ শেষে সাবধানে দড়ি টেনে ডঙ্গল নামিয়ে বাড়ি ফেরেন।

অবশ্য লাতেহারের এসপি ধনঞ্জয় কুমার সিংহ বলেছেন, সরযূবাসীদের আর বেশি দিন মগডালে চড়তে হবে না। খুব শিগগিরই ওই এলাকায় টাওয়ার বসে যাবে।-আনন্দবাজার