প্রশাসক’ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো তৃণমূল নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে
নিউজ সুন্দরবন ডেক্স: টানা ৩৫ বছরের ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়লো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফরের আগেই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পৌরসভার ‘প্রশাসক’ পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন দিব্যেন্দু ব্যানার্জী। অন্যদিকে একই ছবি সোনামুখী পৌরসভাতেও। প্রাক্তন পৌরপ্রধান বর্তমানে ‘পৌর প্রশাসক’ সুরজিৎ মুখার্জীকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় আনা হলো তপন জ্যোতি চট্টোপাধ্যায়কে।
সম্প্রতি বাঁকুড়া পৌরসভার ‘প্রশাসক’ পদ থেকে মহাপ্রসাদ সেনগুপ্তকে সরানোর পর থেকেই গুঞ্জন ছিলই। কারণ জেলার এই তিন পৌরসভার প্রধানদের কাজে মোটেই খুশী নন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল এখনো পর্যন্ত সর্বশেষ তাঁর জেলা সফরে। রবীন্দ্র ভবনে প্রশাসনিক বৈঠকে তৎকালীন তিন পৌরপ্রধানকেই ‘সতর্ক’ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২১ এর বিধানসভা ভোটের আগে ফের মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগেই এই তিন পৌর প্রশাসককে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই জেলা রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৪ নভেম্বর দু’দিনের বাঁকুড়া জেলা সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনো পর্যন্ত যা খবর, তাতে প্রথম দিন মুকুটমনিপুরে প্রশাসনিক বৈঠক ও পরের দিন বাঁকুড়া-১ ব্লকের শুনুকপাহাড়ির হাটের মাঠে এক জনসভায় যোগ দেবেন তিনি।
এক টানা ৩৫ বছর বিষ্ণুপুর পৌরসভার দায়িত্ব সামলানোর পর ‘হঠাৎ’ এই ‘সরিয়ে’ দেওয়া প্রসঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীকে সরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে, নবনিযুক্ত ‘প্রশাসক’ দিব্যেন্দু ব্যানার্জীকে ‘স্বাগত’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জী যা করেছেন মেনে নিতে হবে’। একই সঙ্গে তিনি দলে ছিলেন, আছেন ও থাকবেন বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন। এক্ষেত্রে কি শুভেন্দু অধিকারী ফ্যাক্টর কাজ করেছে? এই প্রশ্নের উত্তরে সদ্য দায়িত্ব হারানো শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বলেন, ‘দাদার অনুগামী আমি নই, দাদার সঙ্গে যোগাযোগ নেই’। তিনি শুধুমাত্র ‘দলের অনুগামী’ বলেই স্পষ্টতই এদিন তিনি আরো একবার জানিয়ে দেন।
নবনিযুক্ত ‘প্রশাসক’ দিব্যেন্দু ব্যানার্জী বলেন, এখনো দায়িত্ব পাইনি। তবে বিষয়টি তিনি জেনেছেন জানিয়ে বলেন, পৌর প্রশাসক মণ্ডলীতে গৌতম গোস্বামী, তন্ময় ঘোষ ও সুশোভন নন্দী। দল ও দলনেত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন। আমার প্রতি তাঁদের আস্থা যখন রয়েছে তখন তা পূরণে চেষ্টা করবো। একই সঙ্গে সবাইকে একসাথে নিয়েই তিনি পৌরসভা পরিচালনা করবেন বলে জানান।
অন্যদিকে সোনামুখী পৌরসভা থেকেও বর্তমান প্রশাসক সুরজিৎ মুখার্জীকে তাঁর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এবিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সরকার দায়িত্ব দিয়েছিল, সরকারই দায়িত্ব কেড়ে নিয়েছে। কি কারণে এই সরকারী সিদ্ধান্ত তিনি জানেননা। সরকারী সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে বাধ্য বলে জানান।
সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পৌর প্রশাসক তপন জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, দল আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা নিষ্ঠার সঙ্গে মেনে চলার চেষ্টা করবো। দল ও মুখ্যমন্ত্রীর সম্মান বাড়াতে পৌর পরিষেবা দিতে তিনি কাজ করে যাবৃন বলে জানান।