জমিজটে আটকে ব্রীজের রাস্তা,অগত্যা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত
সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং -দীর্ঘদিন ধরেই জমিজটে আটকে ব্রীজের রাস্তা। অগত্যা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষজন। অথচ প্রশাসন উদাস।জয়নগর ও ক্যানিংয়ের একমাত্র সংযোগকারী মাধ্যম পিয়ালী নদীর উপর ঢোষা ব্রীজ।
বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত হয়ে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে এই ব্রীজটি । বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনাও ঘটে।এই ব্রীজ দিয়েই জয়নগর,বারুইপুর,ক্যানিং,কুলতলি,মগরাহাট সহ অন্যান্য বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার সাধারণ মানুষজন সহ এলাকার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই যাতায়াত করেন।যে কোন মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা।
তখন বামফ্রন্ট সরকার সূর্যাস্তের মতো প্রায় অস্তাচলে।বামফ্রন্টের শেষলগ্নে তৎকালীন সুন্দরবন উন্নয়ণমন্ত্রী কান্তী গাঙ্গুলী সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই ব্রীজটি সংস্কার করেননি।পাশেই পিয়ালী নদীর উপর একটি নতুন ব্রীজ তৈরী করার সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রায় তিন কোটি টাকা বরাদ্দ হয় ব্রীজটি তৈরীর জন্য। ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারী এই ঢোষা ব্রীজের শিলান্যাস করেন তৎকালীন সুন্দরবন উন্নয়ণ মন্ত্রী কান্তি গাঙ্গুলী। তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রীজটি সম্পূর্ণ হয়ে যায় প্রায় ১১ মাসের মধ্যে।অন্যদিকে রাজ্যে মহাপতন ঘটে বামফ্রন্ট সরকারের। ব্রীজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় ব্রীজটি চালু হয়নি। এদিকে বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়। আর রাজ্যে ক্ষমতায় আসে মা-মাটি-মানুষের তৃণমূল সরকার।
ব্রীজ টি নিয়ে তেমন কোন উচ্চবাচ্য করেন নি বর্তমান সরকার। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর হয়ে গেলেও প্রশাসন সজাগ না থাকায় রাস্তাজটে থমকে রয়েছে ব্রীজটি।এলাকার সাধারণ মানুষজন ভেবেছিলেন তাঁরা খুব কম সময়ে ক্যানিং ও জয়নগর এলাকার মধ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও এখনো ব্রীজটি চালু না হওয়ায় তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা নির্মল বেরা,চন্দনা মন্ডল,অলোক রায়,মধুমিতা সরদাররা ক্ষোভের সাথে বলেন এই সেতু চালু না হওয়ায় আমাদের কে খুব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।বিশেষ করে ক্যানিং থানার হাটপুকুরিয়া, দাঁড়িয়া,হেড়োভাঙ্গার মতো এই সমস্ত জায়গায় যেতে আমাদের কে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।প্রশাসনের উচিৎ সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে এই সেতুটি চালু করা।
অন্যদিকে তিলপীর বাসিন্দা আকবর মোল্ল্যা,কুতুবউদ্দিন পিয়াদা সহ কয়েক জন গ্রামবাসী জানালেন,এই সেতু চালু হলে আমরা খুব কম সময়ে জয়নগর ও ক্যানিং থানা এলাকার মধ্যে যাতায়াত করতে পারবো। ধোসা চন্দনেশ্বর নবীনচাঁদ হাইস্কুলে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রী মোমিনা মোল্ল্যা,অমল সরদার,গগন মাহাতো,হৃষিকেশ নস্কররা জানায় পিয়ালি নদীর উপর ঢোসা ব্রীজ চালু না হওয়ার কারণে আমাদের স্কুলে আসতে কিংবা যেতে খুবই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা ব্রীজ দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। তাই ব্রীজটি তাড়াতাড়ি চালু হলে আমাদের খুব সুবিধা হয়।এ ব্যাপারে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মন্ডল বলেন “২০১২ সালে সুন্দরবন উন্নয়ণ পর্ষদের রাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন ঢোষাব্রীজের যাতায়াতের জন্য ক্যানিং ১ নং ব্লকের ঢোষাহাট ব্রীজ হতে যামিনী মোড় সংযোগকারী প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা তড়িঘড়ি করে দিয়েছিলাম ৮৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে।ব্রীজের জয়নগর দিকের জমিজটে আটকে পড়ায় ব্রীজটি চালু করা যায়নি। তবে পুরাতন ব্রীজটি যাতে খুব শীঘ্রই সংস্কার করে যাতায়াতের জন্য উপযুক্ত করে তোলা যায় তার জন্য সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ কে জানিয়েছি। ”