রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নামখানা ব্লকে অনুষ্ঠিত হলো কৃষি প্রযুক্তি কর্মসূচি

News Sundarban.com :
অক্টোবর ৩, ২০২৩
news-image

নিজস্ব প্রতিনিধি, নামখানা: নামখানা ব্লকে অনুষ্ঠিত হলো কৃষি প্রযুক্তি সচেতনতা কর্মসূচি। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের নামখানা ব্লকের আজ দক্ষিণ চন্দনপিড়ি বিবেকানন্দ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রাঙ্গনে স্বামীজির প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মিশনের ১২৫ তম বর্ষপূর্তিতে নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সহায়তায় কৃষি প্রযুক্তি সচেতনতা কর্মসূচি (বিবেকানন্দ কৃষি মিত্র প্রকল্প) অনুষ্ঠিত হলো। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে ঠাকুর, মা ও স্বামীজীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে  অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের শ্রীমৎ স্বামী অশেষানন্দজী মহারাজ।

এই কর্মসূচিতে সংগঠনের ইতিহাস ও কাজ সম্পর্কে শিক্ষক পার্থ সারথী মন্ডল বলেন, এই সংগঠনের জন্ম হয়েছে স্বামীজীর আদর্শে। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে এই হল সংগঠনের চলার পথ।
এই প্রসঙ্গে শ্রীমৎ স্বামী অশেষানন্দজী মহারাজ বলেন, এই অঞ্চল মূলত কৃষি নির্ভর। আর বর্তমানে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে। তাই আধুনিক পদ্ধতিতে মাটির উর্বরতা বজায় রেখে আমাদের ফসল ফলাতে হবে।
প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সুন্দরবনের নদী বাউন্ডারি ভেঙ্গে প্রায় বেশিরভাগ এলাকা নোনা জলে প্লাবিত হয়। যার ফলে চাষিরা চাষ করার প্রবণতা একদম কমিয়ে দিয়েছে বললেই চলে।

প্রাণী বিশেষজ্ঞ ডঃ অবদূত দে বিভিন্ন ফার্ম সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সঞ্চালক ও প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ অতনু দাস বলেন, এই সংগঠন প্রথম থেকেই সমাজসেবায় নিয়োজিত রয়েছে। করোনার সময় দেখা গিয়েছে মারন ভাইরাসের ফলে মানুষ যখন বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। সেই সময় রাস্তায় পড়ে থাকা দুস্থ মানুষদের মুখে খাবার তুলে দিয়েছে। মারন ভাইরাস করোনার সময় প্রায় ৩০ হাজারের মতো মানুষের মুখে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত খাবার দিয়েছে এই সংগঠন ।

এছাড়া নামখানা ব্লকের কৃষি আধিকারিক তন্ময় পাইক কৃষি দপ্তরের খুঁটিনাটি তথ্য কৃষকদের সামনে তুলে ধরেন। বিশেষ করে সুন্দরবনের নোনা প্রবল এলাকায় কিভাবে চাষ করলে চাষীরা উপকৃত হবে সে বিষয়েও বিস্তর আলোচনা করেন।
রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ড: সোমনাথ সরদার তিনি চাষবাসের পদ্ধতিগত দিকগুলি বিশেষ ভাবে তুলো চাষ সম্পর্কে চাষীদের সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এদিনের কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন নামখানা ব্লকের হরিপুর ও নামখানা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ১০০ জনের বেশি কৃষক বন্ধু।
রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের পক্ষে বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ ড. প্রবীর কুমার গড়াই বলেন, কীভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন দিক দিয়ে চাষিরা স্বাবলম্বী হতে পারে । সুন্দরবনের মৌমাছি চাষ নিয়ে উনি বিশেষ আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিবেকানন্দ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ শান্তনু বেরা।
দক্ষিণ চন্দনপিড়ির এক চাষী দেবকুমার গায়েন বলেন, আমাদের সুন্দরবনে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায় সময় নোনা জলে মাঠঘাট প্লাবিত হয়। তাই ক্রমশ এখানকার জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। ফলে এই রকম ট্রেনিং হলে পরে থাকা জমিতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করা সম্ভব। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি অনুপ মাইতি , সহ সভাপতি প্রবীর পাল এবং দীপক মাইতি, নবকুমার গায়েন, প্রদীপ ওঝা ,অতনু বেরা,বাপ্পা দাস,অভিজিত বর্মন, অনুপম গিরি বাপ্পা দাস প্রমূখ।