মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছেলেহারা মায়ের হাতে দেড় লক্ষ টাকার চেক তুলে দিল নামখানা ব্লকের শিবরামপুর সমবায় সমিতি

News Sundarban.com :
জুন ২৯, ২০২২
news-image

ঝোটন রয়, বকখালি: এবার মানবিকতার মুখ দেখালেন শিবরামপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি। ঘটনার সূত্রপাত 12 জুন মাটি বয়ে নিয়ে যাওয়া ট্রলির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল বিপুল গিরি নামে এক যুবকের। ঘটনাটি ঘটেছিল নামখানা ব্লকের ফেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা এরিয়ার চৌরাস্তা মোড়ে। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন মা সন্ধ্যা গিরি। ছেলের মৃত্যুর পর রাতের পর রাত দুই চোখের পাতা এক করতে পারেনি । ছেলেহারা কান্না মায়ের যে কত দুঃখ যন্ত্রণা সেটা মা-ই কেবল মাত্র জানে। ঐদিন শোকাচ্ছন্ন ছিল সারা ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল এরিয়ার মানুষজন। স্থানীয়রা এখনো ভুলতে পারেননি বিপুল গিরির সত্যি কি মৃত্যু হয়েছে। ওর মৃত্যু হয়নি ও বেঁচে আছে আমাদের মনে। প্রতিদিন যেমন সকাল হলে বন্ধুদের নিয়ে খেলাধুলা থেকে শুরু করে একসাথে কাজে যাওয়া সব-ই করত বিপুল। ও খুব বাচ্চাদের ভালোবাসতো। পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিল হোটেলের কাজ। সবে শুরু করেছিল জীবনের গতি। কিন্তু আজ সেই ছেলেটা আমাদের মধ্যে নেই। এই ঘটনা মানতে পারছেন না মা সন্ধ্যা গিরি থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।

এমনই এক ছেলে হারা মায়ের পাশে দাঁড়ালেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নামখানা ব্লকের শিবরামপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি। মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হল 1 লক্ষ 50 হাজার টাকার চেক। এই চেক প্রদান সময়ে উপস্থিত ছিলেন বিপুল গিরির মা সন্ধ্যা গিরি, মৃতের মামা সুদর্শন দাশ, নামখানা ব্লকের সিআই সুদীপ্ত বিশ্বাস, উপস্থিত ছিলেন নামখানা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক অখিলেশ বারুই, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ নীলকণ্ঠ বর্মন, ছিলেন শিবরামপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্বরঞ্জন পাল, ডাইরেক্টর চিত্ত রঞ্জন কাঁপ, সেক্রেটারি পুলিন বিহারী দাস, ম্যানেজার রতন চন্দ্র করন, গোপাল প্রামাণিক, প্রবীর মন্ডল, দয়াল কৃষ্ণ সংগ্রাম, বারিদ বরণ দাস, পুলকেশ কামিলা সহ শিবরামপুর সমবায় সমিতির কর্মচারীবৃন্দ।

এই প্রসঙ্গে বিপুল গিরির মামা সুদর্শন দাশ বলেন, আমার ভাগ্নার মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। এই ভাবে ওর মৃত্যু মানতে পারছি না। এক মায়ের শূন্য হৃদয় তো আর পূর্ণ করে দেওয়া যাবে না। এই অবস্থাতে এই অসহায় মায়ের পাশে যে সমবায় সমিতি দাঁড়িয়েছে এই রিন আমি কোনদিন শোধ করতে পারব না। এই দুঃখী মায়ের সম্বল বলতে ছিল ওই ছেলেটি। এখন একদম একা হয়ে গেছে ওই মা।

অন্যদিকে নামখানা ব্লকের সি আই বলেন, মায়ের ছেলেকে আমরা ফিরিয়ে দিতে পারবো না। কিন্তু এই অবস্থাতে আমরা সবাই মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছি।

এদিকে তৃণমূলের ব্লক সম্পাদক অখিলেশ বারুই বলেন, পরিবেশ পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে শিবরামপুর সমবায় সমিতির চিন্তাভাবনা সমভাবাপন্নর কারণে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া আর অন্য কিছু নেই। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে তার মা আজ দিশেহারা। তার পাশে দাঁড়িয়ে সমবায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক তার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওনার সঙ্গে থেকে যদি আমরা সুখ দুঃখ ভাগ করে নিতে পারি তার অঙ্গীকার করলাম।