শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাদাকালো যুগের নায়িকা হলেও তিনি বাঙালি মনে এখনও রঙিন

News Sundarban.com :
জানুয়ারি ১৮, ২০২০
news-image

রাশিদ রিয়াজ :

৬ বছর আগে ২০১৪ সালে নিজেকে অন্তরালে রাখা বাঙালির মহানায়িকা চিরবিদায় নিয়েছিলেন পৃথিবী থেকে। তবে তাঁকে নিয়ে বাঙালির আবেগ, তাঁকে নিয়ে বাঙালির গর্ব আজও অটুট রয়েছে। তিনি যেন বাঙালির নস্টালজিয়া। প্রধানত সাদাকালো যুগের নায়িকা হলেও তিনি বাঙালি মনে এখনও রঙিন। তাঁর গ্ল্যামার, তাঁর সাজ-পোশাক,তাঁর সৌন্দর্য, তাঁর ব্যক্তিত্বের ধারেকাছেও যেতে যেতে পারেন নি অনেকেই, এমনই আবেগ তাঁকে নিয়ে বাঙালির। ১৯৫২ সাল থেকে শুরু করেছিলেন রূপোলি পর্দা জীবন। কিন্তু তাঁর সাজ-পোশাক, ব্যক্তিত্ব সবকিছুই সময়ের থেকে এতটাই এগিয়ে ছিল যে আজও বাঙালি মনে তাঁকে নিয়ে যে শ্রদ্ধা , যে ভালোবাসার বন্ধন তাতে চিড় ধরেনি এতটুকু, ঠিক যেন “সাত পাকে বাঁধা।”

তিনি ছিলেন পাবনার মেয়ে তাঁর কথাবার্তায় একটা টানও ছিল শুরুর দিকে। কিন্তু ধাপে ধাপে নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করেছিলেন যে তাঁর ব্যক্তিত্বের দ্যুতির ছটা, এখনও অনেক বাঙালি নায়িকা এমনকী মেয়েদেরও দিশা দেখায়। বাড়ি থেকে এসে যখন মেকাপরুমে প্রবেশ করতেন, কীভাবে নিজেকে সাজাতেন মহানায়িকা একথা জানতে কে না চায়! সে সময় একের পর এক হিট ছবিতে কাজ করছেন বিখ্যাত মেকআপ আর্টিস্ট শেখ বশির আহমেদ। তখনই নবাগতা সুচিত্রার আবির্ভাব হয় রূপোলি পর্দায়। যুগটা ছিল সাদাকালোর, মেকআপ কারেকশন করার সুযোগ অনেক কম ছিল। এত বিদেশি প্রোডাক্ট, এত নানান ধরনের রঙের সমাহার মেকআপে ব্যবহার করার সুযোগ সেই সময় ছিল না। কিন্তু বশির আহমেদ এমনই একজন মেকআপ আর্টিস্ট ছিলেন, যিনি বাড়িতে বানানো জিনিস দিয়েও, নিজের হাতের জাদু আর তুলির টানে শিল্পীকে চরিত্রের উপযোগী মেকআপ করে দিতে পারতেন।

ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁকে বলা হতো “মাস্টারপিস।” আর তাই মহানায়িকা সুচিত্রা সেন এর সবথেকে পছন্দের মেকআপ আর্টিস্ট ছিলেন শেখ বশির আহমেদ। যাঁকে তিনি ডাকতেন বশির মিঞা বলে। মেকাপের ব্যাপারে খুবই খুঁতখুঁতে ছিলেন তিনি । যেকোন চরিত্রে অভিনয় করার আগে ,ফ্লোরে যাওয়ার আগে, মেকআপ যতক্ষণ না পর্যন্ত পুরোপুরি ঠিকঠাক হত মানে তাঁর নিজের পছন্দ হত, ততক্ষণ পর্যন্ত ফ্লোরে যেতেন না। পুরো মেকআপ হয়ে যাওয়ার পর নিজের হাতে “বিউটি স্পট অর্থাৎ সেই তিল” যার প্রেমে একসময় বাঙালি ছেলেরা প্রায় উন্মাদ ছিলেন, সেই তিলটি আঁকতেন নিজে হাতে। কোনও মেকাপম্যানকে দিয়ে কখনই তিনি ওই তিলটি আঁকাতেন না।