অসুস্হ পৃথিবী (নেপালি কবিতা)
অসুস্হ পৃথিবী (নেপালি কবিতা)
কবি মোহন সুবেদী, লঙ্কা, আসাম
অনুবাদ: বিলোক শর্মা, ডুয়ার্স, পশ্চিমবঙ্গ
হাতের তালুতে এক মুঠো মাটি নিয়ে
সংকল্পরত মানুষেরা পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে
শৃঙ্খলবিহীন মানবজাতির মনজুড়ে
মশাল হয়ে জ্বলছে মৃত্যু চেতনা
হঠাৎ থমকে গেল জল বাতাসের গতি
পায়ের শব্দরা, মন্দির মস্জিদ গির্জা ঘরের দ্বার
বেনামী আঘাতের বোঝায় সচেতন
সমগ্র দেশ, মানুষ, মাটি ও ভালবাসা
অপরিচিতের মতো হতে হল পরস্পরকে
উপলব্দ্ধির এক নির্বাক সময়
ঘুমে আচ্ছন্ন পুরো অসুস্হ পৃথিবী
অপ্রাসঙ্গিক হল ধর্ম, বর্ণ ও বংশের সম্পূর্ণ পরিচয়
কেবল একা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মানুষ
মেঝের মাটিকে দু’হাত দিয়ে ধরে
বেড়ে চলেছে মানুষ মাঝেকার দূরত্ব
বাঁচার জন্য প্রেমহীন যন্ত্রনা
অনেকটা দূর পর্যন্ত দৌড়িয়ে নিজেকে
অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হল কল্পিত ঈশ্বর
কুৎসিত আক্রমনের হাত থেকে পালিয়ে এসে
মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে আয়নার সামনে
এবং হাতের আলতো ছোঁয়ায় আদর করে নিজের বিবর্ণ চেহারা
পৃথিবীর অসুস্হতার অবস্হা ভেবে
সবচেয়ে বড় সত্য হল মানুষের সচেতনতার উপস্হিতি
প্রার্থনা করে-
মৃত্যুর বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব…..
-(নেপালি কবিতা ‘বিরামী পৃথিবী’-এর বঙ্গানুবাদ)
পরিচিতি:
মোহন সুবেদী: সাহিত্যিক মোহন সুবেদী উত্তর-পূর্ব ভারতের নেপালি সাহিত্যে এক পরিচিত নাম। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গান ও অনুবাদ মিলিয়ে মোট দশটি বই প্রকাশিত। ছয়টি পত্রিকার সম্পাদনাও করেছেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সাহিত্যিক পুরস্কারে কবি সম্মানিত হয়েছেন।
বিলোক শর্মা: বিলোক শর্মা ভারতীয় নেপালি সাহিত্যে কবি ও অনুবাদক হিসেবে পরিচিত। মাদারীহাট, ডুয়ার্সের বাসিন্দা কবি শর্মা শিক্ষায় বোটানীতে পোষ্ট-গ্র্য়াজুয়েট এবং বর্তমানে লুধিয়ানায় কৃষি-আধিকারিক। একটি নেপালি কাব্যকৃতি ‘সময়াভাস’ প্রকাশিত রয়েছে। কবিতা লেখালেখির পাশাপাশি নিয়মিত নির্বাচিত নেপালি কবিতার বাংলায় অনুবাদ ও প্রকাশনা করেন। এছাড়া, এখন অবধি চারটি পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন।