বিশ্ব পরিবেশ দিবসে নামখানা ব্লকে লাগানো হলো বেশ কয়েকশো চারা গাছ

ঝোটন রয়, নামখানা: বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ হলো সুন্দরবন। যেখানে প্রায় ৫০ লক্ষের ও বেশী মানুষের বসবাস রয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে মাথায় নিয়ে জনজাতিরা বসবাস করে এই বৃহৎ সুন্দরবনে। ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসের দিনে সুন্দরবনকে রক্ষার জন্যই হাতে হাত লাগিয়ে বেশ কয়েকশ চারা গাছ লাগাল টাটা এনওয়াইকে শিপিং। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের নামখানা ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষখাল এরিয়াতে এই চারা গাছ লাগানো হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টাটা এনওয়াইকে শিপিং এর সিনিয়র ম্যানেজার বিজয় দাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার দেবী গুহ, মানব আইচ, পঙ্কজ ত্রিবেদী, উপস্থিত ছিলেন নামখানা ব্লকের দেবনগর মোক্ষদা দিন্দা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শান্তনু রয়, পলাশ কুমার, অতনু রায়, সুতনু রায়, মধুসূদন বাগ, প্রবীর পাঁজা সহ স্থানিয় বাসিন্দারা।
এই প্রসঙ্গে দেবী গুহ বলেন, ‘সকলের কাছে একটাই বার্তা পরিবেশকে দূষিত না করে গাছপালা না কেটে আমরা আরো বেশি বেশি করে গাছ লাগাব। এবং এই পরিবেশের ভারসাম্যটা যাতে করে মেনটেন করতে পারি সেই দিকে সবাইকে এগিয়ে যাওয়া উচিত। গাছ আমাদের বন্ধু। তাই আমরা প্রত্যেকে যদি গাছ লাগাই তাহলে আমাদের এই বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে এই পৃথিবীকে রক্ষা করা যাবে।’
প্রাকৃতিক ঝড়ঝঞ্ঝার পাশাপাশি জীবন বিপন্ন করে জীবীকা নির্বাহ করতে হয় সুন্দরবনের বাসিন্দাদের। একদিকে ভয়ঙ্কর জীবজন্তুর ভয় আবার অন্যদিকে রয়েছে নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবনের আশাঙ্কাও। এতো কিছুর মধ্যেও প্রতিনিয়ত লড়াই করে বেঁচে রয়েছেন বৃহত্তম এই ব-দ্বীপের বাসিন্দারা।এরই মধ্যে গত ২০০৯ সালের ২৫ মে ভয়ঙ্কর আয়লার ঝাপটায় তছনছ হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবনের জনপদ। পাশাপাশি ২০১৯ এর ২ মে সামান্য দাপট দেখিয়ে ক্ষয়ক্ষতি করেছিল ফণী। আবার ২০১৯ এর ৮ নভেম্বর বুলবুল কোনো বাধা না মেনে সজোরে দাপট দেখিয়ে হানা দিয়েছিল সুন্দরবনে। ফলে বাড়িঘর থেকে শুরু করে গাছপালা ভেঙে ধুলিস্যাত করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে দিয়েছিল। বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে সমগ্র সুন্দরবন। বলতে গেলে সেইসব ক্ষত এখনও অবধি শুকায়নি। এতো সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও সুন্দরবন বাসীদের একটাই বার্তা আরো বেশি বেশি করে আমাদের এই সুন্দরবনে গাছ লাগিয়ে সুন্দরবনটাকে মানচিত্রের মধ্যে ধরে রাখা।
এই প্রসঙ্গে দেবনগর মোক্ষদা দিন্দা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শান্তনু রায় বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এই দিনটিকে স্পেশালি বেছে নিই গাছ লাগানোর জন্য। গত বছর আমরা আরো বেশি গাছ লাগিয়েছিলাম।এই বছর আমরা টাটা এনওয়াইকে শিপিং আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এবং আমার মনে হয় গাছ লাগানো একটা গুরুত্বপূর্ণ ইসু হওয়া উচিত। আমরা দেখছি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সুন্দরবনের প্রতিনিয়ত ছোট বড় গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা কিন্তু তার ফল হাতে নাতে পাচ্ছি। ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন’ যার ফলে ক্রমশ টেম্পারেচার বেড়েই চলেছে। একে রোধ করার জন্য আমাদের সবুজায়নের পথে হাঁটা উচিত। আমরা এই নিয়ে ৫০ হাজারের মতো গাছ লাগিয়েছি। নতুন প্রজন্মের কাছে একটাই বার্তা যে আমরা প্রত্যেকে দুটো করে গাছ লাগাব। এবং তাকে পরিচর্যা করব।
উল্লেখ্য এর সঙ্গে ‘আলোয় ফেরা’ ট্রাস্টও হাতে হাত লাগিয়ে সুন্দরবনের সবুজায়নের বার্তা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের এই সামাজিক কাজকর্ম করেই চলেছে। এদিন কাকদ্বীপে প্রায় দেড় হাজারের উপর নারকেলের চারা বিতরণ করে এই ট্রাস্ট ।