বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাগ্নিকদা টলিউডের বলিষ্ঠ অভিনেতা, বললেন অভিনেতা অর্কজ্যোতি রায়

News Sundarban.com :
ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
news-image

বিবেকানন্দ বসাক

                                                                                           পর্ব—২
নয় নয় করে সাগ্নিকদা ২০০-২৫০ ধারাবাহিকে অভিনয় করে বসে আছে। আমিও ১০০-১৫০ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি। কিন্তু সাগ্নিকদার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার আনন্দই অন্যরকম। “দেবীচৌধুরানী” সিরিয়ালে আমি কাটিয়ার সাহেবের চরিত্রে অভিনয় করি। “বামাখ্যাপা”তে ডাল্টন সাহেবের চরিত্রে। যেহেতু সাহেবের চরিত্রে আমি আগে থেকেই পরিচিতি ও প্রশংসা পেয়েছি, তাই স্বাভাবিক ভাবেই সাহেবের চরিত্র এলেই আমার ডাক পড়ে যায়। যথারীতি ” দেবীচৌধুরানী”তেও সাহেবের চরিত্রেই অভিনয়ের সুযোগ আসে। সাগ্নিকদা বিশাই ডাকাতের চরিত্রে অভিনয় করে।

এই বিশাই ডাকাতের ডেরাতেই প্রফুল্ল অর্থাৎ দেবীচৌধুরানীর জন্ম। শুটিং স্পটে আমায় দেখেই বলল, তুই আন্ডারটেকার কেমন আছিস? আমি বললাম, “সাগ্নিকদা তুমি এখানে পাট করছ?” সাগ্নিকদা বলল, “তোর সঙ্গে একই ফ্রেম শেয়ার হবে।” হরবল্লভের চরিত্রে নীলদা।” সাগ্নিকদা মানে বিশাই ডাকাতকে গ্রেপ্তার করার প্ল্যান হয়।

বিশাই ডাকাতকে ধরে কালান্তরে নিয়ে যাওয়া হবে। দেবীচৌধুরানী তখন ছোট। সেন্টিমেন্টাল চরিত্র। সাগ্নিকদাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছি। এই পাটটায় সাগ্নিকদাকে আমি বলছি, “ইউ ডাকাইট।” ডাকাইট কথাটা আমারই আবিষ্কার ছিল।

সাগ্নিকদা হাত জোর করে বলে, “আমাকে এক মুহূর্তের জন্য আমার মেয়ের কাছে নিয়ে চলুন। হাতে শৃঙ্খল পরা অবস্থায় সাগ্নিকদাকে টেনে যাচ্ছি। এই দৃশ্যে অভিনয় করতে করতে আমারই প্রায় চোখে জল চলে আসছিল। সাগ্নিকদা বলল, তুই তো ব্রিটিশ। তোর চোখে জল কেন?” সাগ্নিকদা এই চরিত্রে একজন ডাকাত অথচ একেবারে সেন্টিমেন্টাল চরিত্রে কী অসাধারণ বৈপরীত্য বজায় রাখতে পারে। দেবীচৌধুরানী অর্থাৎ প্রফুল্লকে সাগ্নিকদা বলছে, “মা তুই আমাকে আর খাওয়াবি না, মা? তুই আমাকে খেতে দিবি না, মা? এই তো শেষ দেখা।”

ওই লেবেলের একজন ডাকাত তার রাউডি চরিত্রে আবার দাপুটে অভিনয়। সত্যিই রাউডি চরিত্রে দারুণ মানিয়ে যায়।” দেবীচৌধুরানী” তেও আমার লং ট্র‍্যাক ছিল। শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে আড্ডাও চলত। “মহাপীঠ তারাপীঠ”-এও আমি একটা দোর্দণ্ডপ্রতাপ হেনরি সাহেবের চরিত্রে অভিনয় করি। সাগ্নিকদা বড়কুমারের চরিত্রে।

” দ্য ভিলেন” ছবির পরিচালক-প্রযোজক ছিল অভিনেতা টোটা রায়চোধুরী। এই ছবির নায়কের চরিত্রে টোটাদা, নায়িকার চরিত্রে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আর আমি পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তীর “বডিগার্ড” ছবিতে শুটিং করছি। একই ফ্লোরে তিন তিনটে প্রোডাকশনের কাজ হওয়ার সুবাদে কাজের ফাঁকে টোটাদা, সাগ্নিকদা আর আমি চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছি। তবে আমাদের আড্ডা কিন্তু তখনই হত, যখন কাজের মধ্যে কিছুটা সময় বিরতি পেতাম। যেটা বলতে গিয়েও বলা হল না। টোটাদা প্রথমে “দ্য ভিলেন” ছবিতে রজতাভ দত্তের ভাইয়ের চরিত্রে আমাকে নিতে চেয়েছিল। তখন অবশ্য হরনাথ চক্রবর্তীর “বডিগার্ড” ছবিতে অভিনয় করছি। দুটো ডেট ক্ল্যাশ করার জন্য কাজটা করতে পারছিলাম না।

ফলে সাগ্নিকদা “দ্য ভিলেন”-এ অভিনয় করবে এরকমই ঠিক ছিল। এমন সময় আমার কিছুটা সময় বের হল। সগ্নিকদাকে বললাম, সাগ্নিকদা তুমি ছেড়ে দাও। আমি টোটাদার ছবিতে অভিনয় করি। এদিকে প্রেস কনফারেন্স শেষ হয়ে গেছে। সাগ্নিকদা বলল, “আগে দেখ তোকে এই মুহূর্তে নেবে কি না। ছবিটির প্রাথমিক পর্ব অনেকটাই এগিয়ে গেছে। সাগ্নিকদা এরকমই মানুষ। যাকে নিয়ে বলতে গেলে গল্প ফুরোয় না। সাগ্নিকদা শুধু জনপ্রিয় অভিনেতা নয়, ১৬ থেকে ৪০ বছর বয়সিরা সাগ্নিকদা বলতে মুগ্ধ। জানি, তার ফ্যানেদের আরও অনেক গল্প শোনার আগ্রহ থাকবেই। সময় সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই আবার আপনাদের সামনে ভাঁড়ার থেকে অভিনেতা সাগ্নিক সাঁতরার অজানা কাহিনির রসদ জোগাবো।
                                                                                                                                 …………………..(শেষ)