শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সিরিজের তৃতীয় টেস্টের সুবাদেই বিশ্বকে সরদার প্যাটেল স্টেডিয়ামের বিশালত্ব দেখানোর সুযোগ হল ভারতের

News Sundarban.com :
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
news-image

এক বছর আগে সরদার প্যাটেল স্টেডিয়াম উদ্বোধন করতে স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ডেকে এনেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোতেরায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধন করতে গিয়ে সবাইকে বিনোদনের খোরাক জুটিয়েছিলেন।

শচীন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলি, স্বামী বিবেকানন্দের নাম উচ্চারণ করতে লেজেগোবরে করে ফেলেছিলেন ট্রাম্প। ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নতুন করে দুয়ার খুলেছিল সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়ামের।

ভারতের গর্বের বস্তু হলেও গুজরাটের স্টেডিয়ামের ভাগ্য ফিরছিল না। উদ্বোধনের কয়েক দিন পরই করোনাভাইরাস মহামারি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। নিজেদের মাঠে ক্রিকেট খেলার স্বাদই পাচ্ছিল না ভারত।

পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর আইপিএল আয়োজন করা হলেও সেটি হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এরপর অস্ট্রেলিয়া সফর করে আবার দেশে ফিরেছে ভারত ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ডের সঙ্গে দুটি টেস্ট খেললেও সেগুলো হয়েছে চেন্নাইয়ে।

কাল আরেক ২৪ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের তৃতীয় টেস্টের সুবাদেই বিশ্বকে সরদার প্যাটেল স্টেডিয়ামের বিশালত্ব দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে ভারত।

এমন একটি উপলক্ষ এমনিতেই রাঙাতে হতো ভারতকে। সেটা একেবারে কাগজে-কলমে করছে তারা। গুজরাটে দিবারাত্রির টেস্ট খেলছে ইংল্যান্ড ও ভারত। গোলাপি বলের ক্রিকেট দিয়ে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের।

এত দিন সরদার প্যাটেল স্টেডিয়াম বলতেই ট্রাম্পের সেই বিখ্যাত ভাষণের কথা মাথায় চলে আসত। যে ভাষণে ভারতের মানুষের ক্রিকেট প্রেমের কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘এটাই সে দেশ, যেখানে বিশ্বের সেরা সব ক্রিকেটার সুচীন টেন্ডুলকার থেকে বিরাট কুলিদের নিয়ে আপনারা উল্লাস করেন।’ স্বামী বিবেকানন্দর জীবন দর্শন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বেশ কয়েকবারের চেষ্টায় বলেছিলেন, ‘স্বামী বিবেকা-মুন-ডুম!’

এমন অবস্থায় মহাগুরুত্বপূর্ণ এক টেস্টের আয়োজন ট্রাম্পের ভূতকে এ স্টেডিয়াম থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। ঘরের মাঠে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো দিবারাত্রির টেস্ট খেলছে ভারত। দেশটি ঘরের মাঠে প্রথম গোলাপি টেস্ট খেলেছিল ২০১৯ সালে। বাংলাদেশ–ভারতের সে ম্যাচ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি একদম।

তৃতীয় দিনের সকালেই ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছিল সেবার। সে তুলনায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটা ভালোই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হওয়ার কথা। সিরিজের প্রথম টেস্ট ইংল্যান্ড জেতার পর ভারত সিরিজে ফিরে এসেছে পরের ম্যাচেই।

এ টেস্টের ওপর শুধু যে সিরিজের ভাগ্য নির্ভর করছে তাই নয়, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ কে হবে, সেটাও ঠিক হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় টেস্টে ভালো অবস্থান নিশ্চিত করতে চান ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

এ কারণে ভাগ্যকেও পাশে চাইছেন অধিনায়ক, ‘লাল বলের চেয়ে গোলাপি বল একটু বেশি সুইং করে। নতুন গোলাপি বলে ব্যাট করা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। সন্ধ্যার সময়টা খুবই কঠিন। আমরা সে অনুযায়ী প্রস্তুত হচ্ছি। গোলাপি বলের টেস্টে প্রথম সেশনই ব্যাট করার জন্য সবচেয়ে ভালো। সন্ধ্যায় নতুন করে গার্ড নিতে হয়, নতুন করে শুরু করতে হয়।’

কোহলি অবশ্য চ্যালেঞ্জে জেতার জন্য ভালো অস্ত্র পাচ্ছেন হাতে। করোনার কারণে গ্যালারিভর্তি দর্শক ঢুকতে পারবেন না। ধারণক্ষমতার অর্ধেক ঢোকানো হবে। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামের অর্ধেক দর্শকই যে ৫৫ হাজার!

অনেক দেশের স্টেডিয়ামের পূর্ণ ধারণক্ষমতাই এর কম। কোহলিও এই সমর্থনে ভরসা রাখছেন, ‘দর্শকের উপস্থিতি অনেক বড় পার্থক্য করে দেয়। বিদেশে খেলতে গেলে আমরাও চাপ টের পাই।

আশা করি, আগামী টেস্টগুলোয় ভালো সমর্থন পাব। বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম পেয়ে আমরা গর্বিত। আমরা সবাই এখানে খেলতে পেরে উচ্ছ্বসিত।’