বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রত্যন্ত সুন্দরবনের মরিচ ঝাঁপি দ্বীপে পালিত হল ঐতিহাসিক “মরিচঝাঁপি” দিবস

News Sundarban.com :
ফেব্রুয়ারি ১, ২০২১
news-image

নিজস্ব প্রতিনিধি, ক্যানিং —দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের মরিচঝাঁপির উল্টো দিকের দ্বীপ কুমীরমারিতে রাজ্য বিজেপির উদ্যোগে রবিবার পালিত হল ঐতিহাসিক “মরিচঝাঁপি দিবস”।উপস্থিত ছিলেন রাজ্য এসসি মোর্চার সভাপতি দুলাল বর,সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব সরকার,যুব মোর্চার জেলা সভাপতি রাজু মণ্ডল,জেলা সভাপতি বসন্ত শেঠিয়া,সঞ্জয় নায়েক,শুভঙ্কর দত্ত মজুদার,অসিত মন্ডলসহ অন্যান্যরা।

উল্লেখ্য সিপিএম সহ বামদল গুলির বড় বড়  নেতারা বিগত ১৯৭৮ সালে জানুয়ারী মাসে বাংলার বাইরে উদ্বাস্তু শিবির গুলি ঘুরে ঘুরে উগ্রভাষণ দিতেন ভোটব্যাঙ্ক তৈরীর জন্য। তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এলে  সব পূর্ববঙ্গীয় উদ্বাস্তুদের কে পশ্চিমবঙ্গে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে স্থান দেওয়া হবে।১৯৭৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বস্ব হারানো হিন্দু উদ্বাস্তুরা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের মরিচঝাঁপি দ্বীপে আশ্রয় নেয়। প্রায় ত্রিশ হাজার হিন্দু উদ্বাস্তু জঙ্গল পরিষ্কার করে একটি বসতি গড়ে তোলেন।শুরু হয় স্কুল ও হাসপাতাল তৈরীর কাজ। তৎকালীন বামফন্টের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু’র সরকার ঠিক করেন ওই উদ্বাস্তু মানুষগুলিকে মরিচ ঝাঁপি দ্বীপে থাকতে দেবেন না।

পরে ধীরে ধীরে পুলিশ ওই দলিত তপশিলী জাতিভুক্ত দরিদ্র মানুষ গুলোর উপর অমানুষিক অত্যাচার শুরু করে। ২৪ জানুয়ারী ১৯৭৯ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ প্রত্যন্ত ওই দ্বীপে খাদ্য,পানীয় জল,ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।দীর্ঘ প্রায় সাতদিন প্রচন্ড পানীয়জল ও খাদ্যাভাবের পরে একটি নৌকায় করে ৫/৭ মহিলা পার্শ্ববর্তী দ্বীপ কুমীরমারি তে পানীয় জল আনতে যাচ্ছিলেন।সেই সময় সন্ধ্যার মুখে পুলিশের একটি বোট জোর করেই ধাক্কা দেয় মহিলাদের বোটটি তে।ডুবিয়েও দেওয়া হয়। আবার ওই ১৯৭৯ সালের ২৪ জানুয়ারী থেকে সিপিএম সরকার লাগাতার অবরোধ শুরু করে। নৌকাতে পানীয় জল খাদ্য নিয়ে যেতে দেখলেই পুলিশ জীবন্ত মানুষ সহ নৌকা ডুবিয়ে দিতো।পুলিশ লঞ্চ থেকে অকারণে গুলি চালানো হতো।খাদ্যের অভাবে,দুরারোগ্য রোগে ভুগে মারা যায় প্রচুর মানুষ।  তখনও দ্বীপে প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ।

এরপর ৩১ জানুয়ারী পুলিশ নিয়ে দ্বীপে নামে সিপিএম এর হার্মাদ বাহিনী। জমায়েত লক্ষ্য করে নির্বিচারে ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। শত শত মৃতদেহের উপর মরিচ ঝাঁপি দখল নেয় সিপিএম। কোন শত্রু দেশের নাগরিকের উপর এমন জঘন্য আচরণ করে বলে মনে হয় না! ১৯৭৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী কলকাতা হাইকোর্টে মরিচঝাঁপি গণহত্যা মামলা দাখিল হয়(Civil order No. 371(w) of1979)।সুচতুর সিপিএম নানান ভাবে ভুলিয়ে দেয় মর্মান্তিক পাপের কাহিনী। কারোর শাস্তি হয়নি জঘন্য পাশবিক হত্যাকান্ডের! এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য বিজেপি যুবমোর্চা ৩১ শে জানুয়ারী মরিচ ঝাঁপি দিবসপালন করে আসছে। চলতি বছর ও তার অন্যথা হয়নি । বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব জেলার যুব মোর্চা সভাপতি রাজু মন্ডলের দাবী আগামী দিনে সরকার কে মরিচ ঝাঁপি কান্ড নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের কে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে।তাছাড়া বিজেপি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতা আসছে এবং সর্ব প্রথম মরিচ ঝাঁপি কান্ডের তদন্ত শুরু হবে।”