শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পেশা ছেড়ে ভারত দর্শনে বেরিয়ে সচেতনতার নেশায় মেতেছেন যুবক

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক: পেশা ছেড়ে সচেতনতার নেশায় মেতেছেন এক যুবক। দক্ষিণ দিণাজপুর জেলার তপন থানার বাসঙ্গ গ্রামের বাসিন্দা যুবক মাধাই পাল।পরিবারের সপ্তম সন্তান।চার বছর বয়সে পিতা জানকী পালের মৃত্যু হয়। মা অঞ্জলি পালের কাছে বড় হয়ে ওঠে। দারিদ্রতার মধ্যে কোন রকমে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে এই যুবক। অভাব অনটনের জন্য আর বেশিদূর পড়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি।

অগত্যা কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। দার্জিলিংয়ে গাড়ি চালানোর কাজ শুরু করে। গাড়ি চালানোর সময় প্রচুর দুর্ঘটনার নজরে পড়ে।এমনকি হেলমেট হীন তরতাজা বাইক চালক যুবকদের কে চোখের সামনে দুর্ঘটনায় মারা যেতে দেখেছেন।এছাড়া নিজের জেলায় খুব কম বয়সী মেদের বিয়ে দেওয়া প্রথা এবং নারী শিক্ষা একে বারেই পিছিয়ে। ফলে নারীরা যদি শিক্ষিত না হয়,তাহলে কোন মতে উন্নয়ণ সম্ভব নয়। পাশাপাশি বাল্যবিবাহ একটা মারাত্মক ব্যাধি। সমাজ কে পঙ্গু করে দেয়।

মনে মনে এই যুবক সিদ্ধান্ত নেয় সমাজ তথা দেশের জন্য কিছু একটা করতে হবে। যেমন ভাবা,তেমন কাজ। জমানো টাকা দিয়ে এক সাইকেল কিনে ফেলেন। সিদ্ধান্ত নেয় ‘সেফ ড্রাইফ সেভ লাইফ,বাল্য বিবাহ রোধ,মেয়েদের শিক্ষায় অগ্রগতি’ নিয়ে সাইকেল চালিয়ে সচেতনতার প্রচার করবেন সমগ্র দেশ জুড়ে।

১ লা ডিসেম্বর পেশা ছেড়ে দার্জিলিং থেকে দেশের জাতীয় পতাকা কে সঙ্গী করে সাইকেল চালিয়ে ভারত দর্শনে বেরিয়ে পড়ে দক্ষিণ দিণাজপুরের তপন থানার বাসঙ্গ গ্রামের যুবক মাধাই পাল।ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদ,বীরভূম ,জলপাইগুড়ি জেলা প্রদক্ষিণ করে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার প্রত্যন্ত সুন্দরবনে পাড়ি দিয়েছে এই যুবক। সুন্দরবনের দ্বীপে দ্বীপে নারী

শিক্ষা,বাল্যবিবাহ রোধ এবং হেলমেট পরে বাইক চালানোর জন্য সচেতনতার প্রচার করে চলেছেন।আগামী দুবছরের মধ্যে এই ভারত দর্শন শেষ হবে বলে আশাবাদী যুবক মাধাই।দীর্ঘ রাস্তায় যাতায়েতের পথে রাত্রে কোথাও কোন ক্লাব,থানা,বিডিও অফিসে আশ্রয় মিলেছে সাথে শুভেচ্ছাও।মাধাই জানিয়েছে “প্রথমে সারা বাংলা,তারপর সমগ্র দেশে সাইকেলে পাড়ি দেবো। এই দুর্গম পথ আমাকে অতিক্রম করতেই হবে।সাধারণ মানুষ কে সচেতনতার মধ্যদিয়ে দেশের বুক থেকে বাল্য বিবাহ চিরতরে শেষ করতে হবে।নারীদের কে শিক্ষার আঙিনায় নিয়ে এসে দেশ কে অগ্রগতির পথে চালিত করা এবং অবশ্যই দুর্ঘটনা এড়াতে হেলমেট জরুরী। দুর্ঘটনায় যাতে কারোর মৃত্যু না হয়।পৃথিবীর বুকে আমার মাতৃভূমি এমন ভারতবর্ষ দেখতে চাই।”