বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বেলাগাম অরণ্য ধ্বংস, প্রশাসনের তৎপরতায় দখলমুক্ত মাছের ভেড়ি ভেঙে বৃক্ষরোপণ

News Sundarban.com :
নভেম্বর ১৯, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেক্স:  বেশকিছু কাল যাবৎ দুষ্কৃতিদের তান্ডবে সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত অরণ্য ধ্বংস করে গড়ে উঠছিল মাছ ও চিংড়ি চাষের ভেড়ি। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে তৎপরতার সাথে দুষ্কৃতি দমনে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেন বাসন্তী থানার আইসি আব্দুর রব খান ও বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা।শুরু হয় বেআইনি মাছের ভেড়িবাঁধ ভেঙে ফেলে দুষ্কৃতিদের কবল থেকে অরণ্য উদ্ধার করে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজ।পাশাপাশি এলাকা থেকে দুষ্কৃতি মুক্ত করার কাজ।

গত ১৬ নভেম্বর বাসন্তী ব্লকের মসজিবাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের কামারডাঙা সরদার পাড়া এলাকায় মাতলা নদীর চরে অবৈধ মাছের ভেড়ির তৈরী হচ্ছে খবর পায় বাসন্তী থানার পুলিশ। অতি তৎপরতায় বাসন্তী থানার আই সি আব্দুর রব খান ও বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা ঘটনাস্থলে পৌছায়। সেখানে অবৈধ ভেড়ি নির্মাণ বন্ধ করে তিন জনকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি অবৈধ ভেড়ির বাঁধ ভেঙে দিয়ে মাটি কাটার জেসিবি গাড়িটি আটক করে।বাসন্তী থানার আইসি ও বাসন্তীর বিডিও র উদ্যোগে দখলমুক্ত অবৈধ ভেড়িতে বৃহষ্পতিবার কয়েক হাজার মানগ্রোভ গাছের চারা লাগানো হয়। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের এমন উদ্যোগ দেখে স্থানীয় মহিলারাও স্বতঃষ্ফুর্ত ভাবে ম্যানগ্রোভ চারাগাছ রোপণ করেন।এই ম্যানগ্রোভ রোপণের ফলে আগামী দিনে সুন্দরবন কে তার স্বচ্ছ ঐতিহ্য প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরে পেতে যাহায্য করবে। পাশাপাশি যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুন্দরবনবাসী কে রক্ষা করতে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করবে এই সমস্ত মানগ্রোভ গাছ। এদিন ম্যানগ্রোভ চারাগাছ রোপণের পর বিডিও সৌগত সাহা এবং আইসি আব্দুর রব খান সাধারণ মানুষজনের কাছে সুন্দরবন তথা বাদাবনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন।ফলে সুন্দরবনকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে।

উল্লেখ্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমা এলাকায় বিগত বাম সরকারের আমলে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে ব্যাঙের ছাতার মতো একের পর এক গজিয়ে উঠে ছিল অসংখ্য অবৈধ মাছের ভেড়ি। আর সুন্দরবনের নদী গুলির চরে অসংখ্য অবৈধ মাছের ভেড়ি গড়ে ওঠায় সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে শুরু করে।এমনকি নদীর চর গুলিতে প্রকাশ্যে চুরি হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ।

লক্ষ লক্ষ টাকার মুনাফায় এক শ্রেণীর অসাধু লোকজন ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে নদীর চর গুলিতে বসিয়েছে অবৈধ ঘরবাড়ি,দোকানপাট।যার ফলে সুন্দরবনের বহু নদী ছোট হয়ে গেছে এবং বেশ কিছু নদী ধ্বংস হয়ে গেছে।যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য সুন্দরবনের আঠারো বাঁকী এবং পিয়ালি নদী।বর্তমানে করতোয়া, ক্যানিংয়ের মাতলা নদীর অবস্থা বেহাল। ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে পা বাড়িয়েছে এই সমস্ত নদী গুলি।এদিকে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে অবৈধ মাছের ভেড়ি তৈরী আর অপর দিকে অবৈধ ঘরবাড়ি দোকানপাট বসানোর ঘটনায় নড়ে চড়ে বসলো পুলিশ প্রশাসন এবং সরকারি বিভাগীয় দফতর গুলি।এ দিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন যে সমস্ত অসাধু লোকজন যারা ম্যানগ্রোভ গাছ ধ্বংস করে অবৈধ কাজ কর্ম করছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।ফলে কোমর বেঁধে নেমে পড়লেন পুলিশ প্রশাসন এবং বিভাগীয় দফতর গুলি। আর প্রশাসনের এমন তৎপরতায় দুষ্কৃতিরাজ শেষ হবে বলে সাধারণ মানুষের আশা।