শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সত্যি কি করোনা রুখতে পারে গরম জল ?

News Sundarban.com :
অক্টোবর ২, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক:  মহামারী করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় নিয়ে গবেষক থেকে শুরু করে ডাক্তারবাবুরা একের পর এক উপদেশ দিয়েই যাচ্ছেন।
কিন্তু দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। রাশিয়া থেকে শুরু করে চিন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত করোনার টিকা আবিষ্কার নিয়ে যে রীতিমতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে তা বলাই বাহুল্য।
তবে গরম জল পান করলে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকা যেতে পারে এই বার্তা এতটাই ছড়িয়ে পড়ছে যে ইউনিসেফ এ বিষয়ে এক বিবৃতি জারি করেছে। ইউনিসেফ বলছে এইরকম কোনও ঘোষণা তারা করেনি।
এনিয়ে আমেরিকার ড্রিফট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ রন একেলিস বলেছেন, গরম জল ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে এমন কোনও প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
বরং তিনি বলেছেন, ঠান্ডা লাগলে গরম জল খানিকটা স্বস্তি দিতে পারে এ কারণ হয়তো গরম জলে ও নাকের লালা নিঃসরণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

জল খেলে বা গার্গল করলেও এই ভাইরাস ধুয়ে যায় না। অন্য ব্যক্তিদের কাশি বা হাঁচির মাধ্যমে ক্ষুদ্র আকারে এটি নাক বা মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করার পর মানুষজনকে সংক্রমিত করে থাকে। প্রথমত এটি মানুষের ফুসফুসের কোষগুলোকে আক্রমণ করে। সেখানকার কোষগুলো এমন একটি এনজাইম ব্যবহার করে, যা ব্যবহার করে ভাইরাস ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করে। শ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে এসব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ফোঁটা ফুসফুসের গভীরে পৌঁছে যায়। যেখান মুখ থেকে যাওয়া তরল পৌঁছানো সম্ভব।
গরম জল গার্গলে গলার ভেতরের ভাইরাস মেরে ফেলা যায় না। একবার শরীরে প্রবেশ করার পর ভাইরাস খুব দ্রুত মানব শরীরের কোষের ভেতরে চলে গিয়ে নিজের অনেকগুলো কপি করতে তৈরি করে। ফলে এটিকে মুছে বা ধুয়ে ফেলার যেকোনো চেষ্টা থেকেই সেটা নিজেকে রক্ষা করতে পারে।

প্রথমদিকের কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে যে, প্রথম কোষটি সংক্রমিত করার পরে অন্য কোষে ছড়িয়ে পড়তে ভাইরাসের প্রায় ৩০ ঘণ্টা সময় লাগে। একইভাবে, আমাদের শরীরের কোষে প্রবেশ করার পর বাইরের তাপমাত্রা থেকে ভাইরাসটি নিজেকে রক্ষা করতে পারে।
মানব শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট), যা ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরি ও বিস্তারের জন্য আদর্শ। ফলে গলার মধ্যে গরম জল গড়গড়া করো কোষের ভেতরে থাকা ভাইরাস হত্যা করা যায় না।

করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাস, হাঁচি-কাশি কিংবা কথা বলার সময় মুখ থেকে নিঃসৃত তরল কণা বা ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। করোনার ড্রপলেট যেকোনো বস্তু বা তলে লেগে যায়। সেসব জায়গা স্পর্শ করলে হাত থেকে ভাইরাসটি নাক-চোখ-মুখ দিয়ে সুস্থ ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারে।
করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষার ভালো উপায় হল নিয়মিতভাবে সাবান ও জল দিয়ে হাত, পারস্পরিক সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। অন্তত তিন ফুট দূরে থাকতে হবে।