বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

করোনা নিয়ে নতুন দাওয়াই এর ব্যবস্থা করেছে নবান্ন

News Sundarban.com :
জুলাই ৩১, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেস্ক:  গোটা রাজ্য থেকে কোভিড রোগী ও তাঁর পরিজনদের প্রতি অমানবিক আচরণের একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও রোগী করোনা মুক্ত হয়েছেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ের জেরেই হাসপাতাল ফেরৎ করোনা রোগীকে পাড়ায ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন প্রতিবেশীরা এরকম ঘটনার সংখ্যা বহু।এমত পরিস্থিতিতে এই সমস্যার সমাধান করতে নতুন দাওয়াইবের ব্যবস্থা করেছে নবান্ন। কিন্তু তাদের নতুন পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীদের নিয়ে জনমানসে আতঙ্ক কাটাতে এখন থেকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় তাঁদের ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে তারা যে করোনা মুক্ত সেকথা স্পষ্টভাবে উল্লে করতে বলেছে নবান্ন। ‘নেগেটিভ’সংশাপত্র থাকলে তাঁদের সংস্পর্শ থেকে সংক্রমিত হওয়ার আতঙ্ক কাটবে এবং তাদের আর ঘরে ফিরতে বাধার সম্মুখীন হতে হবেনা বলে আশা নবান্নের কর্তাদের।কিন্তু সরাকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি করোনা রোগীদেপর নিয়ে জনমানসে আতঙ্ক তৈরির দায় সরকারেরই। এখন ওআতঙ্ক দূর করার নামে যা করা হচ্ছে তা আরেক তুঘলকি পদক্ষেপ।

তাঁদের মতে সরকারি হাসপাতালে বেডের ঘাটতি কমাতে এখন মৃদু বা মাাঝারি করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের অন্য কোন শারীরিক সমস্যা না থাকলে ছয়-সাতদিরনের মধ্যেই বাড়িতে আলাদা থাকার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সেসময় তাঁদের পরীক্ষাও করা হচ্ছেনা। ফলে ওই রোগীদের নিয়েই আতঙ্কিত হচ্ছেন মানুষ।সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকি শহর কলকাতাতেও রোগী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে বা এলাকায় ঢুকতে না দেওয়ার সমস্যা সামনে এসেছে। অভিযোগ প্রতিবেশীরা রোগী সেরে উঠলেও এলাকায় বা বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছেন না।রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গিয়েছে যে, আক্রান্তরা সুস্থ হয়ে ফিরলেও তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছেন না প্রতিবেশীরা। হাসপাতাল থেকে লিখে আনতে বলা হচ্ছে যে, তিনি করোনা নেগেটিভ। সদ্য দমদম পার্কেই এমন অমানবিকতার ছবি ধরা পড়েছে। এবার ডিসচার্জ সার্টিফিকেটে তাঁর রোগমুক্তির কথা লেখা থাকলে সেসব থেকে নিষ্কৃতি মিলবে বলেই মনে করা নবান্ন।
যদিও সরকারের এই নতুন সিদ্ধান্তে রোগীর পরিবারের পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও সমস্যা বাড়বে বলে তাদের অভিমত। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে উপসর্গ না থাকলেও করোনা আক্রান্তদের শরীর ভাইরাসের প্রকোপ থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেতে অন্তত ১৪ থকে ১৫ দিন সময় লাগে। সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষা করলে তার ফল ফের ‘পজিটিভ’ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। কাজেই সরকার চাইলেও একসপ্তাহের মধ্যে রোগীকে করোনা মুক্ত করা দুস্কর বলে মনে করছেন তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্য কর্তার কথায়, ‘সেক্ষেত্রে হয় রোগীকে নিয়ম মাফিক ১৪-১৫ দিন হাসপাতালে রেখে রোগমুক্ত করে বাড়ি পাঠাতে হবে।নয় সাত দিনের মাথায় পরীক্ষা করে দেখতে হবে তিনি রোগমুক্ত কীনা। সেক্ষেত্রে একজন রোগীকে একাধিক বার পরীক্ষা করার প্রশ্ন আসবে। বর্তমানে সংক্রমণের হার যে ভাবে বাড়ছে তাতে উপসর্গহীন রোগীকে ভর্তি রেখে দিনের পর দিন বেড আটকে রাখা অথবা বারবার তার নমুনা পরীক্ষা করা দুটোই অসম্ভবের কাছাকাছি।

শুক্রবারই নবান্ন থেকে স্বাস্থ্য ভবনকে নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। রাজ্যে সমস্ত সরকারি-বেসরকারি কোভিড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও এই মর্মে নির্দেশ পাঠাতে বলেছে নবান্ন।
রোগীর সামাজিক ও ব্যক্তিগত সুরক্ষার স্বার্থে আরও কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। জানানো হয়েছে, প্রতিবেশীদের সন্তুষ্টির কথা যেমন ভাবা হচ্ছে, তেমনই রোগীর নিরাপত্তাও ১০০% নিশ্চিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না। তাই রোগী তাঁর বাড়িতে নির্বিঘ্নে প্রবেশ করা থেকে নিশ্চিন্তে কম করে সাতদিন ঘরে বিশ্রাম নেওয়ার সময় পর্যন্ত কোনওভাবে যাতে সেই রোগীকে বিরক্ত না করা হয়, সেটাও কড়া নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে।