শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সাপ্তাহিক লকডাউনের শুরুতে ব্যাপক পুলিশি কড়কড়ি, এখন ফায়দা কী? প্রশ্ন বিরোধীদের

News Sundarban.com :
জুলাই ২৩, ২০২০
news-image

নিউজ সুন্দরবন ডেক্স:  করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশ জুড়ে লকডাউন পর্ব শেষ হযে আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পর কেটে গেছে ৫২ দিন পর ফের একবার সম্পূর্ণ লকডাউন দেখলেন রাজ্যের মানুষ।কিন্তু রাজ্যে তিনদফার লকডাউনে রাজ্যবাসী যে ছবি দেখতে অভ্যস্ত বৃহস্পতিবার তার একেবারেই ভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে।রাজ্য সরকারের জারি করা সাপ্তাহিক সম্পুর্ন লকডাউনের প্রথম দিনে সকাল থেকে কলকাতা ও শহরতলিতে ব্যাপক পুলিশি তৎপরতার ছবি ধরা পড়েছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় চলছে নাকা তল্লাশি। প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বেরলেই চলছে ধরপাকড়। জেলা থেকে কলকাতায় ঢোকার সমস্ত রাস্তা নজরদারির আওতায় রয়েছে।শুধু কলকাতা নয় গোটা রাজ্যেই লকডাউন সফল করতে কড়া পুলিশি নজরদারি চোখে পড়েছে।

এমনকি লকডাউনের সময় কলকাতার যে সব এলাকায় মানুষকে অবাধে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে সেই রাজাবাজার, পার্ক সার্কাস এবং খিদিরপুর এলাকাতে অলিগতিতে ঢুকে টহল দিতে এবং মানুষকে ঘরে ঢুকিয়ে দিতে দেখা গেছে পুলিশকে। দেশজুড়ে লকডাোউন চলাকালীন নিষ্ক্রিয় থেকে এখন হঠাৎ গোটা রাজ্যে সর্বাত্মক লকডাউন করার জন্য প্রশাসনের এই তৎপরতাকে বিঁধেছেন বিরোধীারা। করোনা সংক্রমণ যখন রাজ্যে ইতিমধ্যেই লাগাম ছাড়িয়েছে তখন সপ্তাহে দুদিন কড়াকড়ি করে কী লাভ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। লকডাউনের দিনক্ষণ বাছাই নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। সমালোচকদের মতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এর আগে বহুবার লকডাউন নিয়ে শৈথিল্য দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। শুধু বিরোধীরা নয় একই অভিয়োগে রাজ্যকে বারবার সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় সরকারও।এখন নতুন করে লকডাউনে কড়াকড়ি রাজ্য সরকারের মুখ বাঁচানোর প্রয়াস।এদিন লকডাউনের যে ছবি দেখা গিয়েছে তা যদি আগে দেখা যেত তবে রাজ্যের পরিস্থিতি এতটা খারাপ হতনা বলে তাদের অভিমত।

বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে চলে সার্বিক লকডাউন। কলকাতা থেকে জেলা – রাজ্যের সব জায়গায় রাস্তায় রাস্তায় চলছে পুলিশি টহলদারি দেখা গেছে। রাসবিহারী থেকে শ্যামবাজার, শিয়ালদা থেকে নাগেরবাজার, সর্বত্র ধরা পড়েছে একই ছবি। এ দিন বাজার-দোকানও সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে গণপরিবহণ ব্যবস্থাও। তবে বেশিরভাগ মানুষও এ দিন ঘরের বাইরে বেরোননি। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানই এ দিন বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজনে গাড়ি চলাচলে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়িও ব্যবহার করা যাবে। যদিও পুলিশ ধরলে উপযুক্ত প্রমাণপত্র পেশ করতে হচ্ছে।কলকাতায় লকডাউন নিশ্চিত করতে ৩০টি পয়েন্টে বিশেষ নাকা চেকিংয়ের বন্দোবস্ত রয়েছে। দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার দিক দিয়ে কলকাতায় ঢোকার প্রতিটি পয়েন্টে চলছে নাকা চেকিং। শহরের বাজারগুলিও বন্ধ। বাজারে স্থানীয় থানার পাশাপাশি লালবাজার থেকেও বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তিনটি অতিরিক্ত কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখানে বাড়তি বাহিনীও রয়েছে।
রাসবিহারী, মহাত্মা গান্ধী রোড, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, টালিগঞ্জ থেকে শুরু করে বেহালা, যাদবপুর— কলকাতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় বসানো রয়েছে পুলিশ পিকেট। কাশীপুর ও বেলগাছিয়া অঞ্চলে সংক্রমণের মাত্রা প্রচুর হওয়ায় সেখানেও ব্যাপক বাহিনী নামিয়েছে পুলিশ। পাইকপাড়া, পূর্ব সিঁথির বিভিন্ন অলিগলিও চলছে পুলিশি টহলদারি।

গত ২৪ ঘণ্টায় শহরে মাস্ক ছাড়া ঘোরাঘুরির জন্য ৩৮১ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়াও নিয়ম ভেঙে জটলা করায় ২৫৪ জন, যেখানে সেখানে থুতু ফেলার অভিযোগে ২০ জনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে। ৫২টি এফআইআর করেছে পুলিশ।
এই সপ্তাহে আগামী পরশু অর্থাৎ শনিবার ফের লকডাউন হতে চলেছে। ফের আগামী সপ্তাহে বুধবার হবে পূর্ণ লকডাউন। বুধবার ছাড়া পরের সপ্তাহে আর কোন দিন লকডাউন হবে তা সোমবার বৈঠকের পরে ঠিক করা হবে।
এদিকে সাপ্তাহিক লকডাউনের দিনক্ষণ স্থির করা নিয়েও রাজ্য সরাকারকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু প্রশ্ন তোলেন কেন বৃহস্পতি ও শনিবার লকডাউনের দিন বাছা হল। শুক্রবার কেন নয়?