বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় এই দোকান

News Sundarban.com :
জুলাই ১৫, ২০২০
news-image

ঝোটন রয়, ফ্রেজারগঞ্জ:

সবে তার পুতুল পুতুল খেলার বয়স। তার এমন ও বয়স হয়নি যে সে দোকানে বসবে। পাড়ায় তার বন্ধুদের নিয়ে পুতুল পুতুল খেলাতে সে মত্ত থাকে প্রায় সময়। সে জানে না দোকান কি। সে তো জানে, যে দোকানের তার পছন্দের জিনিস তাকে আনন্দ জাগায়। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস ছোটবেলাতে বাবাকে হারিয়েছে। কোলে একখানা ভাই। মায়ের মুখে কোন ভাষা নেই। স্থানীয় স্কুলে মেয়েটি ক্লাস সেভেনে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সে জানায় এইসব কথা।

সে আরো বলে, আমফানের প্রবল বাতাসে বঙ্গোপসাগরের নদীর জলের ঢেউ পাড়ে আছড়ে পড়ছে। দেখলাম মুহুর্তের মধ্যে নদীগর্ভে তলিয়ে গেল তিনটে দোকান। এই দোকানটি অপেক্ষা করে আছে।

একদিকে করোনার থাবা। অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের দাপট। ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল পরপর তিন তিনটে দোকান। সম্পত্তি আমফানে পরপর তিনটে দোকান নদীগর্ভে তলিয়ে গেল।

কখনো বুলবুলে বঙ্গোপসাগরের ঢেউ এর উচ্ছ্বাসে সর্বশান্ত করে দিয়েছিল নদীর পাড়ের বসতি গুলোকে। ভেবেছিল এবারের মতো হয়তো বেঁচে গেছি। জানেনা আগামী দিনে কত মারণ সুপার সাইক্লোন অপেক্ষা করে আছে সুন্দরবন বাসীদের জন্য। কখনো বা গাছপালা থেকে শুরু করে দোকানপাট, মন্দির, মসজিদ ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেবে ভবিষ্যৎ গুলোকে। এমনই এক দৃশ্য দেখা গেল ফ্রেজারগঞ্জে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দোকানদার বলেন, আমফানের সময় আমাদের কাছে ঘরবাড়ি এমনকি দোকান নিয়ে আতঙ্ক দানা বেঁধেছিল। আশা করেছিলাম আমাদের এই শেষ সম্বল যেটা আমাদের কাছে রুজি রোজগারের একটা জায়গা, সেটা হয়তো নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে। কিন্তু কোন কারনে বেঁচে গেছি। জানিনা আগামী দিনে কি হবে।