বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাঁচ বছর ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকায় রেশন সামগ্রিক থেকে বঞ্চিত ওরা

News Sundarban.com :
জুলাই ১০, ২০২০
news-image

ঝোটন রয়, নামখানা: 

রাস্তার পাশে ছোট্ট একটি দোকান। উপরে এজবেস্টার এবং নীচে কাঠ দিয়ে দোকানটি বাঁধানো। এই লকডাউনের বাজারে ৫০ টাকা ইনকাম করতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়। দেখা গেছে কোনো কোনো দিন কোনো খরিদ্দারই আসে না। শুধু পড়ে থাকে দোকান। দোকানে বসে থাকেন মধুসূদন প্রামাণিক ও স্ত্রী নমিতা প্রামানিক। এমনই অবস্থাতেই পাঁচ বছর ডিজিটাল রেশন কার্ড না থাকায় রেশন সামগ্রিক থেকে বঞ্চিত।
এমন চিত্র দেখা গেল নামখানা ব্লকের ফ্রেজারগঞ্জ অঞ্চলের লক্ষ্মীপুর গ্রামে। বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী বসবাস। দু’জনের বয়স ৬০ এর উর্দ্ধে। স্ত্রী চোখে দেখতে পায় না। স্বামীও চোখে কম দেখেন।

কখনো বুলবুল আবার কখনো আমফানের দাপটে দোকানটা ভেঙে গিয়েছিল। বহুকষ্টে মেরামত করেছেন। ইনকাম বলতে একটাই ওই ছোট দোকান। মধুসূদন বাবুর স্ত্রী করুন সুরে বললেন, বুলবুল ঝড়ে বাড়ির অনেক ক্ষতি হয়েছিল কোন ভাবে কেউ সাহায্য করেনি।

চারিদিক থেকে এত দান আসছে। আমাদেরকে একবারের জন্য কেউ বলেনি। সামনে আমফানে এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল দোকানের এবং বাড়িতে তাতেও কোনো সাহায্য মেলেনি।
অন্যদিকে মধুসূদন বাবু বলেন, আমি পাঁচ বছর ধরে অনেকবার বিডিও অফিস এবং পঞ্চায়েতে গিয়েছি ডিজিটাল কার্ডের কোনো সুরাহা হয়নি। আমাদের জীবনে এমনো দিন গিয়েছে এক বেলা না খেয়েও থাকতে হয়েছে।
মন কোন বাঁধন মানে না। তাই বৃহস্পতিবার কাগজপত্র নিয়ে আবারো ছুটে গিয়েছিলেন নামখানার বিডিও অফিসে। ওখানে ফুড ডিপার্টমেন্ট থেকে ওনাকে বলা হয় একটা কাগজে পঞ্চায়েত প্রধানের সই লাগবে। তিনি আবারও ওখান থেকে পঞ্চায়েতে ছুটে আসে। তখন পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, আপনার কার্ড অনেকদিন আগে চলে এসেছে।

ভোটের সময় প্রত্যেকটা ভোটার ভোট পাওয়ার আশায় প্রতিটি বাড়ির দরও মাড়িয়ে চলেন। কিন্তু একটি পরিবার পাঁচ বছর ধরে রেশন সামগ্রী থেকে বঞ্চিত সেটা জানেন না এখানকার কেউ।
এই প্রসঙ্গে ফ্রেজারগঞ্জ পঞ্চায়েত প্রধান গৌতম প্রামাণিক বলেন, আমাদের পঞ্চায়েত পাঁচ বছর হয়নি। দু বছর হয়েছে, উনি প্রথম এই যোগাযোগ করলেন। তার আগে কি হয়েছে আমি জানিনা।
এদিকে মধুসূদন বাবু রেশন ডিলারের কাছ থেকে ৩০ কেজি চাল এবং দু কেজি ছোলা পেয়ে খুব খুশি।