শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুন্দরবনে মানুষ বেঁচে থাকার জন্য চালু করলো শতাব্দীপ্রাচীন বিনিময় প্রথা

News Sundarban.com :
মে ৭, ২০২০
news-image

 বিশ্লেষণ মজুমদার, ঝড়খালী –

সুন্দরবনে মানুষ করোনা কে প্রতিহত করে বেঁচে থাকার জন্য চালু করলো শতাব্দীপ্রাচীন বিনিময় প্রথা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের ঝড়খালি বিবেকানন্দ পল্লী গ্রামের মানুষ একে অপর কে নজিরবিহীন ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ দেখাচ্ছেন।পাশাপাশি গ্রামকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। বর্তমান সময়ে সুন্দরবনের পরিস্থিতি ভয়াবহতার দিকে এগিয়ে চলেছে। প্রতিমুহূর্তে সুন্দরবনের উপর ঘটছে বিপদ ।কখনো নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারাতে হচ্ছে। কখনো বা নদীর বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে মাঠের পর মাঠ

ফসল মাঠেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কখনো আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঘরবাড়ি ভেঙে সর্বস্বান্ত হয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।তারপর চলছে করোনার দাপট। এলাকায় অর্থনৈতিক পরিকাঠামো তলানিতে। সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বাধা বিপত্তি কাটিয়ে গ্রামকে নতুন দিশা দেখাতে চাইছে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের ঝড়খালীর গ্রামের মানুষ। লকডাউনের জেরে সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে অনেকের কাছে এই সময়ে সবথেকে বেশি প্রয়োজন় মাস্ক,স্যানিটাইজার।লকডাউনে এখনো পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছাতে পারেনি।অগত্যা নিজেদের সুরক্ষার জন্য নিজেরাই উদ্যোগ নিলেন।এই পরিস্থিতিতে গ্রামের মহিলারা এগিয়ে এসেছেন। নিজেদের উদ্যোগে গ্রামে গ্রামে তৈরি হচ্ছে মাস্ক। সেই মাস্ক গ্রামের সকলের মধ্যেই বিতরণ করা হচ্ছে বিনামূল্যে।এখানেই থেমে নেই গ্রামের মানুষ। নিজেদের মধ্যে চালু করেছেন বিনিময় প্রথা। গ্রামের মানুষ ভাবছেন টাকা-পয়সার লেনদেন করলে ভাইরাস আক্রমণ করতে পারে। আর সেই কারণেই গ্রামের মানুষ নিজেদের মধ্যে শতাব্দী প্রাচীন বিনিময় প্রথা চালু করেছেন। কেউ বাগানে সবজি অন্যকে দিচ্ছেন মুরগীর ডিমের বিনিময়ে। কেউ আবার মাছ দিয়ে মুরগী নিচ্ছেন। কেউ আবার চাল দিয়ে ডাল নিচ্ছেন। এমনিভাবে গ্রামের মধ্যে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস গুলো আদান-প্রদান করছেন। আদি নিয়ম নতুনভাবে চালু হওয়াতে গ্রামের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্য তৈরি হচ্ছে। এই বিনিময় প্রথা আগামী দিনে নতুন ভারতের বা ভাইরাসমুক্ত ভারতবর্ষের পথ প্রদর্শক হতে পারে।