শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শারীরিক অসুস্থ মহিলা কে ওষুধ কিনে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন ট্রাফিক পুলিশ

News Sundarban.com :
এপ্রিল ১৫, ২০২০
news-image

ক্যানিং -চারিদিকে চলছে করোনার ত্রাহি ত্রাহি রব। সেই পরিস্থিতিতে বাসন্তী ব্লকের কুমড়োখালি গ্রামের বছর ৬৫ বৃদ্ধা আরতি মৃধা বাড়িতে কেউ নেই।একটি মাত্র সন্তান তাও প্রতিবন্ধী।অগত্যা বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে । কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়ার মতো কেউ নেই পাশাপাশি টাকা পয়সাও নেই। সেই অসহায় মুহূর্তে বৃদ্ধার মাথায় জেদ চেপে বসে যে কোন প্রকারে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাবেন।সেই মতো বুধবার ভোর পাঁচটা নাগাদ বাসন্তীর কুমড়ো খালি গ্রাম থেকে পায়ে হেঁটে রওনা দেন ক্যানিং হাসপাতালের উদ্দ্যেশে। যথারীতি ঘন্টা তিনেক রাস্তা পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়ে ক্যানিং হাসপাতালে পৌঁছে যান বৃদ্ধা।হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে নেন। হাসপাতাল থেকে দুটি ওষুধ দেওয়া হয় এবং একটি ওষুধ বাইরে থেকে কিনে নিতে বলা হয়।কিন্তু বৃদ্ধার কাছে কোন টাকা পয়সা না থাকায় নিরুপায় হয়ে পড়েন। অগত্যা ওষুধ কিনতে না পেরে বৃদ্ধা আরতি দেবী ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ড ফুটপাথে বসে কাঁদতে থাকে। সেই সময় ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ডে কর্তব্যরত ছিলেন ক্যানিং ট্রাফিক ওসি দেবব্রত সরকার ও জনা কয়েক ট্রাফিক সিভিক ভলেন্টিয়ার।

দীর্ঘ প্রায় ঘন্টা দুই বৃদ্ধাকে কাঁদতে দেখে বৃদ্ধার কাছে এগিয়ে গিয়ে তাঁর সমস্যা জানতে চান। বৃদ্ধা অঝোরে কেঁদে ট্রাফিক ওসির হাত ধরে কথা বলতে যান। করোনার ভয়ে ট্রাফিক ওসি সামাজিক দুর্ত বজায় রেখে বৃদ্ধার সমস্যার কথা শোনেন। বৃদ্ধা আরতি মৃধা বলেন আমার স্বামী অকর্ম,বাড়িতে প্রতিবন্ধী এক ছেলে রয়েছে। নিজের শরীর খারাপ হওয়ায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে গিয়েছিলাম চিকিৎসার জন্য।হেঁটে হেঁটে বাড়িতে ফিরবো কিন্তু ওষুধ কেনার টাকা নেই। কি করবো চিন্তা করছি।
অগত্যা ট্রাফিক ওসি দেবব্রত সরকার সকলের অগোচরে মানিব্যাগ থেকে পাঁচ’শ টাকার একটি নোট বের করে বৃদ্ধা কে ওষুধ কিনে নিয়ে বাড়ীতে ফিরে যেতে বলেন। বৃদ্ধা সেই মুহূর্তে হাত জোড় করে ট্রাফিক ওসি দেবব্রত সরকার কে সাক্ষাৎ ভগবান বলে প্রণাম করতে চাইলেও ট্রাফিক ওসি বৃদ্ধাকে বলেন মা আপনি বাড়ি তে চলে যান।এরপর ট্রাফিক ওসি বৃদ্ধাকে মিষ্টি কিনে দিয়ে রীতিমতো একটি অটো রিজার্ভ করে বৃদ্ধা কে বাড়িতে পৌঁছে দেন।
ট্রাফিক ওসির এমন মানবিক কাজ কে প্রশংসা করেছেন বিশিষ্টজনেরা।