শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুন্দরবনের মানুষ আরও বড় বিপর‌্যযে মুখোমুখি হবে আগামী দিনে, আশঙ্কা পরিবেশ বিজ্ঞানীদের

News Sundarban.com :
জানুয়ারি ৫, ২০২০
news-image

শশাঙ্ক শেখর মন্ডল

এই শতাব্দীর অন্যতম এক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ পশ্চিমবঙ্গের গাঙ্গেয় উপকূলে আছড়ে পড়েছিল ৯ নভেম্বর ২০১৯ রাত প্রায় ৮ টা নাগাদ| সারাসুন্দরবন বাসীর আন্দাজ ছিলো বুলবুল হয়তো অভিমুখ পরিবর্তন করবে| আবহাওয়া দপ্তরের আগাম সংকেত যদিও রাজ্যবাসীর কাছে ছিল| সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিযে শেষ পর্যন্ত রাত্রি প্রায় ৯.৩০ মিনিট নাগাদ ঘূর্ণিঝড় ধনচি দ্বীপের মূল ভূখণ্ডে স্পর্শ করে| রাত্রি ১১টা নাগাদ সাগর ছেড়ে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার ঘূর্ণাবর্তকারে মূলভূখণ্ডে ধেয়ে চলে| তাতেহ সুন্দরবনের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল ধ্বংসের চেহারা নেয়| বকখালি, গোসাবা, সাগরীপের দক্ষিণ অংশ, মৌসুমী দ্বীপের বালিয়ারা, এবং জি প্লটের গোবর্ধনপুর বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে| পূর্ব পশ্চিমে থাকা নদী বাঁধ ছাপিয়ে  নোনাজল গ্রামে ঢুকেছে| তাতে মাঠের ধান নষ্ট হয়েছে| প্রায় ১০০ শতাংশ মিষ্টি জলের পুকুরের জল পচে গেছে| সর্বত্রহ জল ব্যাবহারের আযোগ্য হয়ে উঠেছে| বুলবুলের ধ্বংস লীলা থেকে এতদিন পরও সুন্দরবনবাসী তার থেকে মুক্তি পায়নি| মার্কিন এক গবেষণা সংস্থা সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে| তাতে প্রকাশিত হয়েছে ২০৫০ সালে কলকাতা, মুম্বইসহ  বিশের একাধিক শহর প্লাবিত হতে পারে| বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরে নিজেদের এ-ও আশঙ্কার কথা শুনিয়ে আসছেন, যে ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে থাকা শহর ও গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ এর ফলে প্রভাবিত হবে| বিশ্বউষ্ণায়ণ ও মাত্রাতিরিক্ত কার্বন ডাহ-অক্সাহড বাতাসে মেশার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন পরিবর্তন হচ্ছে| মার্কিন গবেষণা সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নাসার উপগ্রহ চিত্রের একটি নথি বিশ্লেষণ করে এররকম চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে| আগে রিপোর্টে বলা হয়েছিল গোটা বিশের প্রায় আট কোটি মানুষ এরকম বন্যার কবলে পড়তে চলেছে| যদিও নতুন রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্র সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বন্যা হওয়ার যে সম্ভাবনা র তাতে গোটা বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ প্রভাবিত হবে| প্রভাবিত হবে ভারতীয় সুন্দরবনের ৪৫ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা| বুলবুলের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ রাজ্য সরকারের তথ্য ভাণ্ডার থেকে জানা গেছে, প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা| ক্ষতিগ্রস্থ ঘরবাড়ি ৫ লক্ষ্যাধিক প্রায় ১৫ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে| ভেঙে পড়া বিদু্যত্ পরিকাঠামো পুননির্মাণের জন্য দরকার ৫৯৭ কোটি টাকা| তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে যদি সীমান্তবর্তী সুন্দরবন অঞ্চলে প্রাকৃতিক বিপর‌্যয়ে পরিস্থিতি তৈরি হয় সেদিনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিয়ে আজ গোটা বিশ্বকে ভাবাচ্ছে|