শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বৃষ্টিতে বিপাকে সুন্দরবন এলাকার পুজো কমিটি,প্রতিমা শিল্পীরা

News Sundarban.com :
অক্টোবর ২৫, ২০১৯
news-image

অসময়ে টানা দু-তিন দিন আচমকা বৃষ্টির জন্য সমস্যা পড়েছেন ক্যানিং মহকুমা সহ সমগ্র সুন্দরবন এলাকার পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা।পাশাপাশি বিভিন্ন পুজোমন্ডপ তৈরীতেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রতিমা শিল্পীরা ও বিপাকে পড়েছেন।
চলতি বছর বর্ষার আগমন দেরীতে হলেও বৃষ্টির পরিমান ছিল যথেষ্ট।আবার মাঝে মধ্যে আচমকা নিন্মচাপের জেরে অসময়ের বৃষ্টিতে শরৎকালীন আকাশ প্রায় প্রতিদিনই মেঘাচ্ছন্ন।হঠাৎ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া টানা প্রবল বর্ষনের জেরে জল জমেছে বিভিন্ন রাস্তাঘাট সহ পুজো মন্ডপের সামনে এবং আশপাশের এলাকায়।আগামী রবিবার কালী পুজো। হাতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। মুহূর্তের শ্বাস ফেলার উপায় নেই মন্ডপ তৈরীর কাজের ডেকরেটার্স এর লোকজনের।সাথে সাথে বিরাম নেই এবং অকাল বর্ষণের ফলে চিন্তার ভাঁজ প্রতিমা শিল্পীদের কপালে।এরই মধ্যে অকাল বৃষ্টিতে বেশ কিছু প্রতিমা ভিজে যাওয়ায় পিছিয়ে পড়েছে রঙের কাজ এবং ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা।
স্থানীয় প্রতিমা শিল্পী অমর পাল,বিপ্লব সরদার,অমল মন্ডল’রা বলেন “অন্যান্য বার ১০-১৫ টি প্রতিমা তৈরী বরাত পেতাম,সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এবার প্রায় ৫০ টি প্রতিমা তৈরী বরাত পেয়েছি।বৃষ্টির জন্য ক্ষতির সম্মূখীন হতে হচ্ছে।কী ভাবে প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করবো ভেবে উঠতে পারছিনা”।মেদনীপুরের নন্দীগ্রাম থেকে ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনীতে মন্ডপ তৈরীর বরাত পেয়ে এসেছেন আভা ডেকরেটার্স।আভ ডেকরেটার্সের তপন কুমার কাজলি বলেন “এই দু-তিন দিন বৃষ্টির জেরে মন্ডপের কাজ অনেকটা পিছিয়ে গেছে।পুণরায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হবে না।”
আবার ক্যানিংয়ে ৫১ ফুট কালী প্রতিমা তৈরীর বরাত পেয়ে মেদনীপুর থেকে এসেছেন মহাদেব মন্ডল। তিনি জানিয়েছেন বৃষ্টিতে প্রতিমা তৈরী কাজে খুব বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ পরিষ্কার হলে হয়তো নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে পারো না হলে ব্যাঘাত ঘটবে। ”
অন্যদিকে মন্ডপ ও প্রতিমা শিল্পীদের পাশাপাশি সমস্যায় পড়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা।এই অসময়ে অকাল বর্ষনের জেরে বিভিন্ন মন্ডপের সামনে জমে গেছে জল।কোথাও কোথাও প্যাচপ্যাচে কাদা। এই জল সরিয়ে সব কিছু স্বাভাবিক স্বাচ্ছন্দ্যে ফিরতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।ক্যানিংয়ে বিদ্যাধরী পাড়ার সবুজ সংঘের পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য প্রদীপ দাস বলেন “বৃষ্টির জন্য মন্ডপের কাজ অনেকখানি পিছিয়ে গেছে। আমরা যেহেতু গ্রামবাসীরা মিলিত ভাবে পুজো করি,যার ফলে আমরা অনেকখানি ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছি।মন্ডপ শিল্পীরা তিনদিন কাজ করতে পারলেন না। এর ফলে খরচ অনেকটা বেড়ে গেল।”
ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনী যুবক সংঘের পুজো উদ্যোক্তার প্রধান কর্মকর্তা রাজু সাঁফুই বলেন “বৃষ্টিতে মন্ডপের সামনে জল জমে ব্যাপক কাদা হয়ে গেছে,এই কাদা মাঠে নির্দিষ্ট সময়ে মন্ডপের কাজ শেষ বড়োই কঠিন চ্যালেঞ্জ”।
স্থানীয় বাসিন্দা নিখিল সাহা,জয় সাহা,সুরজিৎ সাহা,সবিতা দাস,গীতা দাস,আলপনা দাস’রা বলেন “কালী পূজোর পর ভাতৃদ্বিতীয়া,এমন ধারাবাহিক বৃষ্টিপাত হলে কালী পুজো সহ ভাতৃদ্বিতীয়া,দেওয়ালি সহ সবকিছু পন্ড হয়ে যাবে।আশাকরি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেটে গিয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে আনন্দের দিনগুলিতে”।