শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সুন্দরবন এলাকায় লাভ জনক মাছ চাষের জন্য নবতম সংযুক্ত আধুনিক প্যাডেল বোট

News Sundarban.com :
অক্টোবর ১৮, ২০১৯
news-image

বিশ্লেষণ মজুমদার.  ক্যানিং :

মাছ চাষে অধিক উৎপাদন কিংবা সাপ্লাইয়ের সুনাম রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা তথা রাজ্যের অন্যতম সুন্দরবনের ক্যানিং।এই ক্যানিং শহর থেকে মূলত বেশীর ভাগ মাছ-কাঁকড়া দেশের অন্যান্য রাজ্য সহ বিদেশে আমদানী হয়ে থাকে।পাশাপাশি ভালো মাছের জন্য সুন্দরবনের এই ক্যানিং শহরের মান উল্লেখ যোগ্য। এমন কি ক্যানিংয়ের মাছ হলেই বিভিন্ন বাজারে একটু বেশী দামে বিক্রি হয়েই থাকে বলে মাছ চাষীদের দাবী। বর্তমানে সেই সুনামের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বিভিন্ন রোগ,প্রাকৃতিক সমস্যা এবং সঠিক পদ্ধতি না জেনে মাছ চাষ করার জন্য এই সুন্দরবন এলাকার অধিকাংশ মৎস্যচাষী লাভের মুখ দেখতে পান না বলেও অভিযোগ রয়েছে।আর সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য মৎস্য দফতরের সহযোগিতায় ক্যানিং ১ ব্লকের মৎস্য আধিকারীক অরুণ কুমার দেব ক্যানিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় মৎস্যচাষীদের কে পুণরায় মাছ চাষে ফিরিয়ে এনে মাছ চাষের প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলেছেন প্রত্যন্ত গ্রাম্য এলাকায়।মৎস্য দফতরের সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে চাষীরা লাভের মূখ দেখতে পাওয়ায় মাছ চাষের প্রতি চাষীরা আকৃষ্ট হয়েছেন।
প্রশিক্ষণ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতি মাছ চাষের ক্ষেত্রে মৎস্য দফতরের উদ্যোগে ক্যানিং মহকুমা এলাকায় নবতম সংযুক্ত হল প্যাডেল বোট।যা কিনা এই সুন্দরবন এলাকায় সর্বপ্রথম।
মূলত বিভিন্ন সময় একবিঘা কিংবা তার অধিক জলাশয়ে মাছ চাষ করে,বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই চাষীরা লাভের মূখ দেখতে পেতেন না। লাভ না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে ক্যানিং ১ ব্লকের মৎস্য আধিকারীক অরুণ কুমার দেব বলেন “আধুনিক পদ্ধতিতে চাষীরা বড় বড় জলাশয়ে মাছ চাষ করেন ঠিকই। কিন্তু বেশীর ভাগ সময় জলাশয়ের পরিমাপ অনুযায়ী মাছ বেশী থাকে পাশাপাশি বেশীর ভাগ সময় অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা যায়।এর ফলে মাছ যেমন নানান রোগে আক্রান্ত হতে পারে আবার মাছের বৃদ্ধিও হ্রাস হয়। ফলে চাষী আধুনিক পদ্ধতি তে চাষ করে সময় মতো সার,খাবার,ওষুধ প্রয়োগ করলে ও অক্সিজেন যোগান দেওয়ার ব্যাপার টা না জানায় পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা খরচ করেও ক্ষতির সম্মূখীন হতে হয় চাষী কে।
আর এই অক্সিজেন যোগান দেওয়ার জন্য বড় বড় জলাশয়ে আধুনিক পদ্ধতি তে তৈরী প্যাডেল বোট ব্যবহার করা দরকার।আর এই প্যাডেল বোড বিনা তেলেই চলবে শুধুমাত্র প্যাডেল করতে হবে।এই প্যাডেল বোটের বাজার মূল্যও চল্লিশ হাজার টাকার একটু কম। ফলে এই বাজেটের প্যালেড বোট চাষীদের আয়ত্বের মধ্যে। আবার জলাশয়ে মাছের ডিম থেকে চারামাছ তৈরীর করার ক্ষেত্রে এই প্যাডেল বোট এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
ক্যানিংয়ের দুই মৎস্যচাষী বিকাশ সাউ ও ক্যানিং ষ্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজার কমল লোচন নায়েক যৌথ উদ্যোগে সর্বপ্রথম এই প্যাডেল বোট মাছ চাষের জন্য ব্যবহার করেন।শুক্রবার দুপুরে ক্যানিংয়ের দিঘীরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাংরাখালি গ্রামের মৎস্য চাষী বিকাশ সাউ ও কমল লোচন নায়েক তাদের বিশাল বড় মাছ চাষের জলাশয়ে এই প্যাডেল বোট এর শুভ সূচনা করেন ক্যানিং ১ ব্লকের মৎস্য আধিকারী অরুণ কুমার দেব।
অন্যান্য বিশিষ্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দিঘীরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতর পঞ্চায়েত সদস্য অভিজিৎ কয়াল সহ অন্যান্যরা।
ষ্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ম্যানেজার তথা চাষী কমল লোচন নায়েক বলেন “অন্যান্য মাছ চাষীরা যাতে করে আগামী দিনে এমন প্যাডেল বোট ব্যবহার করে সঠিক পদ্ধতি তে মাছ চাষ করেন লাভজনক হতে পারে তার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে আমরা এমন আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষে উদ্যোগী হয়েছি।”