শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মৃত নারীর জরায়ু প্রতিস্থাপনের পর মেয়ে শিশুর জন্ম

News Sundarban.com :
ডিসেম্বর ৬, ২০১৮
news-image

একজন মৃত নারীর শরীর থেকে সংগ্রহ করা জরায়ু প্রতিস্থাপনের পর সেখানে সফলভাবে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম হয়েছে। এর আগে জীবিত নারীদের দান করা জরায়ু প্রতিস্থাপনের পর শিশুর জন্ম হলেও, মৃত নারীর জরায়ু ব্যবহার করে শিশু জন্মের ঘটনা এই প্রথম।

এই সফলতা বন্ধ্যা নারীদের সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে বলে বলছেন চিকিৎসকরা।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা ১০ ঘণ্টার অপারেশনের পর ব্রাজিলের সাও পাওলোতে ২০১৬ সালে ওই জরায়ুটি প্রতিস্থাপিত হয়। যার শরীরে সেটি স্থাপন করা হয়েছিল, তার শরীরে জন্ম থেকেই জরায়ু ছিল না।

এ পর্যন্ত জীবিত নারীদের শরীর থেকে ৩৯টি জরায়ু প্রতিস্থাপনের খবর পাওয়া গেছে। অনেক ক্ষেত্রে মা তাদের কন্যাকে জরায়ু দান করেছেন। এরকম প্রতিস্থাপনের পর ১১টি শিশুর জন্ম হয়েছে।

তবে কোন মৃত নারীর শরীর থেকে নেয়া জরায়ুতে বাচ্চা জন্মের ঘটনা এবারই প্রথম। এর আগে যতোবার চেষ্টা করা হয়েছে, সেটি ব্যর্থ অথবা গর্ভপাত হয়ে গেছে।

যার জরায়ু, তিনি ছিলেন মধ্য চল্লিশের একজন নারী, যিনি মস্তিষ্কে রক্তপাতে মারা যান। তার তিনটি সন্তান রয়েছে।

যে নারীর শরীরে জরায়ুটি স্থাপন করা হয়, তার এমন একটি শারীরিক সমস্যা রয়েছে, যেখানে যৌনাঙ্গ এবং গর্ভাশয় ঠিকভাবে কাজ করে না। তবে তার ডিম্বাশয় ঠিকঠাক ছিল।

চিকিৎসকরা সেখান থেকে ডিম্বাণু নিয়ে সম্ভাব্য পিতার ভ্রূণের সঙ্গে নিষিক্ত করে এবং সেটি হিমায়িত করে রাখে।

সেই নারীকে এমন ওষুধ দেওয়া হয় যা তার শরীরের রোগ ক্ষমতাকে দুর্বল করে ফেলে, যাতে জরায়ু প্রতিস্থাপনে কোন বাধা তৈরি না হয়। এর দেড় মাস পর থেকে তার মাসিক হতে শুরু করে।

সাত মাস পর নিষিক্ত ডিম্বাণুটি তার জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক গর্ভধারণের পর সিজারিয়ান অপারেশনের পর তিনি আড়াই কেজি ওজনের একটি শিশুর মা হন।

ড. ডানি ইযেনবার্গ বলেন, জীবিত নারীদের শরীর থেকে জরায়ু প্রতিস্থাপন ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি যুগান্তকারী ব্যাপার, যার ফলে অনেক নারী মা হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু জীবিত দাতাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হলো, এরকম দাতা দুর্লভ।

তিনি আরও বলেন, মৃত শরীর থেকে জরায়ু সংগ্রহ করে প্রতিস্থাপন করতে পারাটা অত্যন্ত চমৎকার ব্যাপার। কিন্তু এই সফলতা আরো অনেক বেশি দাতা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে, খরচ কমাবে এবং জীবিত দাতাদের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি হ্রাস করবে।