শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ঋণখেলাপিদের দেশছেড়ে পালানো রুখতে কড়া পদক্ষেপ মোদীর

News Sundarban.com :
নভেম্বর ২৩, ২০১৮
news-image

ঋণখেলাপির অভিযুক্তদের দেশছেড়ে পালানো রুখতে কড়া পদক্ষেপ করল মোদী সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে জারি এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এবার থেকে ঋণখেলাপিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারির আবেদন করতে পারবেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিইও-রা। এর ফলে ঋণখেলাপিতে অভিযুক্তদের দেশ ছেড়ে পালানো রোখা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি বিজয় মালিয়া, নীরব মোদী, মেহুল চোস্কি কাণ্ডের মতো একের পর এক ঘটনায় মুখ পুড়েছে সরকারের। ব্যাঙ্কের থেকে নানা উপায়ে বিপুল অংক ঋণ করে দেশ ছেড়েছেন তাঁরা। এই ঘটনার পুরনাবৃত্তি রুখতে আন্তমন্ত্রক কমিটি গঠন করেছিল কেন্দ্র। সেই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব রাজীব কুমার। সেই কমিটির সুপারিশেই অবশেষে জারি হল নির্দেশিকা।

সংবাদসংস্থা PTI-কে রাজীব কুমার জানিয়েছেন, স্বেচ্ছায় ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে বড় বাধা হিসাবে কাজ করবে এই নির্দেশিকা। তাছাড়া এতে ঋণদাতা ও গ্রহীতার সম্পর্কে বদল আসবে।

এতদিন ঋণখেলাপিতে অভিযুক্ত কারও বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করতে গেলে আবেদন করতে হত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। কিন্তু এর নির্দিষ্ট কোনও পদ্ধতি ছিল না। কে কী ভাবে কার কাছে আবেদন করবে সবকিছুই ছিল অস্পষ্ট। সেই সব বুঝে লুক আউট নোটিস জারির আগেই দেশ ছেড়ে পগার পার হত প্রতারকরা। নতুন বিধিতে সরাসরি লুক আউট নোটিস জারি করতে পারবেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিইওরা। ফলে সময় লাগবে অনেক কম। ফলে বিমানবন্দরে পৌঁছেই আটকে যেতে হবে প্রতারকদের।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজয় মালিয়া, মেহুল চোস্কি কাণ্ড নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী তো এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি ‘চোর’ বলে দিয়েছেন। ফলে ঋণখেলাপিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ করা ছাড়া উপায় ছিল না কেন্দ্রের কাছে। শেষ পর্যন্ত সেটাই করল তারা।

এতে একদিকে যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্গগুলির CEO-দের দায়িত্ব বাড়ল তেমনই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে সহজ হল কেন্দ্রের দায় ঝাড়া। তবে এই পদক্ষেপে কি পশ্চিমবঙ্গে কোনও সুবিধা করতে পারবে বিজেপি? সামলাতে পারবে বিরোধীদের আক্রমণ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্দেশিকা বানে এরাজ্যে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ, সারদাকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর আইন করে চিটফান্ড বন্ধ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরও সারদা নিয়ে তাকে বিঁধতে ছাড়ে না বিজেপি। এক্ষেত্রে বিজেপির বিরুদ্ধে একই অবস্থান নিতে পারে তৃণমূল-সহ পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য দলগুলি। তবে রাজনীতির জল যে দিকেই গড়াক দিনান্তে ফলে গেল পুরনো সেই প্রবাদ। চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।