শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

অতিরিক্ত পর্ন আসক্তি ক্ষতি করছেন নিজের

News Sundarban.com :
অক্টোবর ২৬, ২০১৮
news-image

পর্ণ ছবির প্রতি আসক্তি নতুন কিছু নয়। পশ্চিমা দেশগুলো যতই পর্ণ ছবিকে “ভালো” আখ্যা দেয়ার চেষ্টা করুক না কেন,আসলেই কি তা আপনার জন্য ভালো? নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানুষ মাত্রই অস্বাভাবিক আকর্ষণ, কিন্তু সেই কৌতূহল মেটাতে গিয়ে নিজেকে ঠেলে দিচ্ছেন না তো শারীরিক-মানসিক হুমকির মুখে? দ্বিতীয়বার ভাবুন,পর্ণ আসক্তি কী ভয়ংকর সব ক্ষতি করছে আপনার! আপনি কি যখনই সুযোগ পান তখনই পর্ন দেখেন? উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে বলা যায় পর্নের প্রতি আপনার আসক্তি তৈরি হয়েছে। আর এই আসক্তি থেকে যত দ্রুত সম্ভব মুক্তি পেতে হবে আপনার। যদি এক দিনে না পারেন, তবে ধীরে ধীরে। কিন্তু বন্ধ করতেই হবে।
তরুন প্রজন্ম বর্তমানে পর্ণগ্রাফি আসক্তির ভয়াল নেশায় মত্ত হয়ে আছে। টিন এজার থেকে শুরু করে অনেক মধ্য বয়সী পুরুষও পর্ণগ্রাফি আসক্তিতে ভুগছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় পর্ণগ্রাফি আসক্তিকে তেমন ক্ষতিকর নয় ব্যাখ্যা দিলেও এর আছে দীর্ঘমেয়াদি বিরূপ প্রভাব। নিয়মিত পর্ণ ছবি দেখার মাধ্যমে নিজের অজান্তেই নিজের ক্ষতির করে ফেলছেণ অসংখ্য পুরুষ। কারণ চিকিৎসকরা জানান, পর্নাসক্তি ড্রাগের নেশা থেকে কোনও অংশে কম নয়, তা স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে আপনার জীবনে।

অতিরিক্ত পর্নের নেশা ড্রাগের চেয়েও মারাত্মক। পর্ন ড্রাগ, মদ বা সিগারেটের মতোই আসক্তি তৈরি করে। পর্ন দেখলে মস্তিস্কে একটা ‘ফিল গুড’ রাসায়নিক তৈরি হয়। এর নাম ডোপামিন। একটানা পর্ন দেখলে মস্তিস্কে ডোপামিনের পরিমাণ বেড়ে যায়। তখন সামান্য ডোপামিনের ক্ষরণে উত্তেজনা তৈরি হয় না। আরও বেশি ডোপামিনের জন্য মস্তিস্ক আরও বেশি পর্নের রসদ খোঁজে এবং আসক্তি বাড়িয়ে তোলে।চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যোগান বাড়াতে গিয়ে বাড়ে নারী পাচারের সংখ্যা।নিয়মিত পর্ণ ছবি দেখতে দেখতে পুরুষদের রূচিবোধের অধঃপতন হয়। পর্ণ সিনেমার অনৈতিক ও যৌনতা নির্ভর বিকৃত সম্পর্ক গুলোকেই তখন ভালো লাগতে শুরু করে। ফলে যারা নিয়মিত পর্ণ সিনেমা দেখে তাদের রুচি বিকৃত হয়ে যায়। জীবনের স্বাভাবিক সম্পর্ক গুলোতেও নিজের অজান্তে বিকৃতি খোঁজে তাদের চোখ। পর্ন আপনাকে বদমেজাজি ও খিটখিটে করে তোলে। দেখা গেছে, একেবারে সাদামাটা পর্নও অতিরিক্ত দেখলে তা আপনার মানসিকতায় প্রভাব ফেলে। এছাড়াও আপনাকে অতি আক্রমণাত্মক, বদমেজাজি ও খিটখিটে করে তোলে।
অতিরিক্ত পর্নের আসক্তি সম্পর্কের ক্ষতি করে। যত বেশি পর্ন দেখবেন, ততই আপনি একটা অলীক ফ্যান্টাসির জগতে চলে যাবেন। এর ফলে বস্তবের সম্পর্কগুলো আর আপনাকে সুখ দিতে পারবে না, যা সম্পর্কের অবনতির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে ওঠে।পর্ন দেখা লোকজনের ইরেক্টাইল ডিসফাংশান হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অতিরিক্ত পর্ন মস্তিস্কে রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট করে এই রোগের সৃষ্টি করে। পর্ন নারী পাচারের প্রবণতা বাড়ায়। পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে যারা যুক্ত, তাদের অনেকে স্বেচ্ছায় এই পেশা বেছে নিলেও নতুন মুখের চাহিদা এখানে প্রবল। অতিরিক্ত পর্ন মানসিক রোগের জন্ম দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পর্ন দেখা হয় একা, সমাজের চোখ এড়িয়ে। এর ফলে ধীরে ধীরে একটা অপরাধ বোধ জন্ম নেয়। যা থেকে ভবিষ্যতে মানসিক রোগ হতে পারে।
অতিরিক্ত পর্ন আপনার মনে ভাবনার সাম্যতা নষ্ট করে দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পর্ন তারকারা মেক আপ, ফোটোশপ এবং কসমেটিক সার্জারির সাহায্য নেন। বেশি পর্ন দেখলে আপনি মানসিক ভাবে বাইরের মানুষদের মধ্যে সেই তারকাদের খুঁজে পেতে চেষ্টা করবেন। অতিরিক্ত পর্ন আপনার স্বাভাবিক যৌনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। অতিরিক্ত পর্ন আপনার সঙ্গীর প্রতি আসক্তি কমিয়ে দেয়। ফলে নষ্ট হয় স্বাভাবিক যৌনজীবন।
পর্ণ আসক্তদের মোবাইলে, কম্পিউটারে, পেন ড্রাইভে সব খানেই পর্ণ ছবি থাকে অধিকাংশ সময়। অনেক সময় এসব অনৈতিক বিষয় গুলো পরিবারের কাছে ধরা পড়ে যায়। ফলে পরিবারের কাছে হেয় হতে হয় পর্ণ আসক্তদেরকে। এছাড়াও সমাজের মানুষজন, বন্ধুবান্ধব বিষয়টি জেনে গেলে তাদের কাছেও হেয় হতে হয় তাদেরকে।