শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

হাওড়া ব্রিজ থেকে উঠতে চলেছে ফটো তোলার নিষেধাজ্ঞা

News Sundarban.com :
আগস্ট ৩০, ২০১৮
news-image

যার নামে দেশ-্বিদেশের সবাই এক দাকে চেনে কিংবা বলা যায় কলকাতার অন্যতম আকর্ষণ হাওড়া ব্রিজ, আর এই ব্রিজের ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশি ঝামেলায় জড়িয়েছেন অনেক প্রফেশনাল ও অ্যামেচার ফটোগ্রাফারই। কারণ বিস্ময়কর হলেও সত্যি, হাওড়া ব্রিজে ছবি তোলা নিষিদ্ধ। চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের সময় স্বাধীন ভারতের সরকারও একই পন্থা নেয়। ব্রিজের ছবি তোলার উপর নিষেধাজ্ঞাকে ফিরিয়ে আনা হয়। সেই থেকে এখন অবধি জারি রয়েছে তা। কিন্তু আধুনিক সময়ে এই নিষেধাজ্ঞার মূল্য নেই বলে নিষেধ প্রত্যাহার করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর তাতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে শিক্ষানবিশ থেকে পেশাদার সব ফটোগ্রাফারের চোখই। হাওড়া ব্রিজ ছাড়া কলকাতার স্কাইলাইনের ছবি, ভাবাই যায় না যে। তবে, শীঘ্রই ব্রিজটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে বলে জানা যাচ্ছে। আজকের স্যাটেলাইট ইমেজের যুগে ওই নিষেধাজ্ঞার আর কোনও গুরুত্ব নেই বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
হাওড়া ব্রিজে ছবি তোলা নিষিদ্ধ, এ বিষয়টি অনেকেরই জানা নেই। তাই দেশী-বিদেশী পর্যটক থেকে শুরু করে অনেক নামী পেশাদার ফটোগ্রাফারও ভুল করে ব্রিজের ছবি তুলে ঝামেলায় পড়েছেন। দীর্ঘ পুলিশি জেরার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। এমনকী, টলিউড-বলিউডের বিভিন্ন ফিল্মে যে হাওড়া ব্রিজ দেখা যায়, তার শুটিং-এর জন্যও আলাদা করো পোর্ট ট্রাস্টকে টাকা দিয়ে অনুমতি নিতে হয়।

কিন্তু এবার সেই জট কাটতে চলেছে। কলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট মনে করছে আজকের দিনে যে কেউ স্যাটেলাইট ইমেজে স্পষ্ট দেখতে পায় ব্রিজের ছবি। সেখানে নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ব্রিজে ছবি তোলা নিষেধের তালিকায় রাখার কোনও মানেই হয় না। তাছাড়া আজকাল সেলফোন ক্যামেরাতেও লোকজন ফটাফট ছবি তুলে নিচ্ছে। বস্তুত এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, ব্রিজের এই নবরুপটি উদ্বোধনের সময় থেকেই। সেটা ১৯৪৩ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গনগনে আঁচ কলকাতাতেও পড়েছে। জাপানী বোমা হামলার আতঙ্ক ছিল শহরে। কলকাতা বন্দর নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছিল জাপানী বোমারু বিমান। এই অবস্থায় হাওড়া ব্রিজ ছিল ব্রিটিশ সরকারের স্ট্র্যাটেজিক ইনস্টলেশন। ব্রিজের কোনও ছবি যাতে শত্রুপক্ষের হাতে না যায় সে ব্যাপারে চরম সতর্ক ছিল ব্রিটিশরা। ব্রিজের ছবি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়। রাতে আলো জ্বালানো হত না। এভাবেই বন্দর থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার উত্তরের হাওড়া ব্রিজকে রক্ষা করেছিল তারা।