বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ক্যানিংয়ে চাইল্ড হোম না থাকায় চরম বিপাকে পুলিশ,চাইল্ড লাইন,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

News Sundarban.com :
আগস্ট ৫, ২০১৮
news-image

দীর্ঘদিন মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরেও নতুন কোন চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি(CWC) তৈরী না হওয়ায় মহাবিপাকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন,চাইল্ড লাইন সহ পুলিশ প্রশাসন।
ফলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরী হয়েছে  দক্ষিণ২৪ পরগণা জেলায় কোন চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি না থাকায়।কারণ সরকারী নিয়ম অনুযায়ী উদ্ধার হওয়া শিশুকে ২৪ঘণ্টার মধ্যে নিকটবর্তী কোন চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির নিকট সশরীরে হাজীর করতে হয়।এমন ক্ষেত্রে নিয়মের বেড়াজাল গলে নতুন কোন শিশু বিক্রির পাচার চক্র গজিয়ে উঠবে কি না সেই প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে।
আগে জেলা প্রশাসনই চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি তৈরী করতেন। গত বছর সেই ক্ষমতা জেলাপ্রশাসনের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে দেওয়া হয় স্টেট চাইল্ড প্রোটেকশান কমিটিকে।এরপরই নানান ধরণের গড়িমসি তৈরী হয়।
উদ্ধার হওয়া শিশুকে কোন হোমে রাখা হবে সে বিষয়টি ঠিক করে চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি।আবার যে হোমে শিশুটি রাখা হবে সেই হোমে শিশুর সঠিক দেখভাল হচ্ছে কি না সে বিষয়েও নজরদারী করেন চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি।
২৪ পরগণা জেলার পাথরপ্রতিমায় দিগম্বরপুর অঙ্গীকার,সোনারপুরের সংলাপ ও নবদিগন্ত সহ বেশ কয়েকটি হোম রয়েছে।প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৪০/৪৫ জন শিশু উদ্ধার করে চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটির কাছে হাজীর করানো হয়। এই উদ্ধার হওয়া শিশুর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশী প্রত্যন্ত সুন্দরবনের গোসাবা,বাসন্তী,জীবনতলা,ক্যানিং এলাকার।
উল্লেখ্য সেই চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় না থাকার কারণে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুদের অনেক সময় কলকাতা,উত্তর বারাসাত কিংবা মুর্শিদাবাদ জেলার চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি তে হাজীর করানো হয় । সেই ক্ষেত্রে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমা এলাকায় যেসব শিশুরা উদ্ধার হয় অনেক সময় দুরত্বের জন্য অসুস্থ হয়ে পড়ে,অাবার পালিয়েও যায়।
অন্যদিকে দক্ষিণ২৪ পরগণা জেলায় কোন চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি না থাকার কারণে ভিন জেলায় প্রতিদিন উদ্ধারকৃত শিশুদের  হাজীর করানো হয় না,সেই ক্ষেত্রে অন্যান্য জেলার চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটিতে সপ্তাহে এক কিংবা দুইদিন সময় পাওয়া যায়। অাবার উদ্ধার হওয়া শিশুদের কে রাখার জন্য ক্যানিং মহকুমায় কোন হোম না থাকায় চরম অস্বস্তি কিংবা ব্যাপক সংকটের মধ্যে পড়তে হয় চাইল্ড লাইন,পুলিশ প্রশাসন সহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলো কে।
এই অস্বস্তির জন্য গত প্রায় মাস দুয়েক আগে ক্যানিং মহকুমায় একটি চাইল্ড হোম করার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে দাবী তোলেন ক্যানিং চাইল্ড লাইনের সদস্য বান্টী মুখার্জী।
”সেই দাবী বিভিন্ন মহলে “হাস্যরসে” পরিণত হয়।
উল্লেখ্য গত ৩০ শে জুলাই দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিংয়ের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত “মানব পাচার বিরোধী” এক অনুষ্ঠানে সামিল হন ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার ব্রুশ ব্রুকনেল এবং পশ্চিমবঙ্গ নারী ও শিশু কল্যাণ বিভাগের চেয়ার পার্সন অনন্যা চক্রবর্তী।সেই অনুষ্ঠানে জোরালো দাবী তুলে এলাকার প্রতিবাদী যুবক দীনবন্ধু ঘরামী বলেন “কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষজনই ক্যানিংয়ে কোন উন্নয়ন চায় না তারাই প্রতি ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে।ক্যানিংয়ে চাইল্ড হোম তৈরী হলে প্রত্যন্ত সুন্দরবনে গোসাবা,বাসন্তী,জীবনতলার মানুষজনই উপকৃত হবেন,তাদেরকে দীর্ঘ ৮/৯ঘণ্টায় প্রায় ২০০ কিমি পথ অতিক্রম কাকদ্বীপ কিংবা কলকাতার কোন হোমে যেতে হবেনা।
সেই অনুষ্ঠামঞ্চে জনসাধারণ সহ বিশিষ্ট সমাজসেবীরা ক্যানিংয়ে একটি চাইল্ড হোম তৈরী করার জন্য জোরালো দাবী তোলেন।  পশ্চিমবঙ্গ নারী ও শিশু কল্যাণ বিভাগের চেয়ার পার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন “ক্যানিং মহকুমায় একটি চাইল্ড হোমের প্রয়োজন আছে।এবিষয়ে শীঘ্রই আলোচনা করবো।তিনি আরো জানান আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে যাতে করে জেলায় চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটি তৈরী হয়ে যায় সে বিষয়ে জোর দেওয়া হবে। ”

Attachments area