শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কলকাতা হৃদয় প্রতিস্থাপন করে সাফল্য লাভ করল চিকিৎসাবিজ্ঞান

News Sundarban.com :
মে ২১, ২০১৮
news-image

রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা গাফিলতিতে দিনে দিনে বাড়ছে রোগী মৃত্যুর হার। কিন্তু বহু বিতর্কের মধ্যেও আজ পূর্ব ভারত সাক্ষী থাকল চিকিৎসকের এক রূপ রূপের। ডাক্তার মানুষের কাছেও ভগবান একবার প্রমাণিত হলো এই কথাটি । অঙ্গ প্রতিস্থাপনের ঘটনা আমরা দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই প্রত্যক্ষ করি, কিন্তু হৃদয় প্রতিস্থাপন? হ্যাঁ, এবার কলকাতা হৃদয় প্রতিস্থাপন করে সাফল্য লাভ করল চিকিৎসাবিজ্ঞানে। বেঙ্গালুরুর বরুণ ডিকে-র হৃদযন্ত্র সফলভাবে প্রতিস্থাপিত হল কলকাতার ফর্টিসে চিকিৎসাধীন দিলচাঁদের শরীরে। সূত্রের খবর অপারেশন শেষ, স্বাভাবিক ছন্দেই কাজ করছে হৃদযন্ত্র এমনটাই জানাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৩০ জন চিকিৎসকের এক বিশেষ প্রতিনিধিদলের হাতেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যাপক সাফল্য পেল মহানগর।
ঘটনাটির সূত্রপাত দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা যুবকে দিয়ে। দুদিন আগে, বেঙ্গালুরুর স্পর্শ হাসপাতালে তাঁর ব্রেন ডেথ হয়, তখন হাসপাতালের তরফে যোগাযোগ করা হয় চেন্নাইয়ের মালহার ফর্টিস হাসপাতালের সঙ্গে। সেই হাসপাতালে তখন গ্রহিতা না থাকায় তারা যোগাযোগ করে কলকাতা ফর্টিসের সঙ্গে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আনন্দপুরের ফর্টিস হাসপাতালে ঝাড়খণ্ডের দিলচাঁদ সিং ভর্তি রয়েছেন। দিলচাঁদের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে। এরপরই চেন্নাই থেকে বেঙ্গালুরু উড়ে যান চিকিৎসকরা, যোগাযোগ করা হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও জাতীয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংগঠন “নোটো”র সঙ্গে। দুই তরফে সবুজ সঙ্কেত পেয়েই বরুণ ডিকে-র শরীর থেকে হৃদপিণ্ড বার করে নেওয়া হয়। আজ সকাল ৭টায় হৃৎপিন্ড সংগ্রহ করা হয়। ভাগ্যবসত মিলে যায় দুজনের ব্লাড গ্রপ A পজিটিভ। বেঙ্গালুরু থেকে জারবন্দি হৃদপিণ্ড চার্টার্ড বিমানে নিয়ে আসা হয় কলকাতা। আর কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বাইপাস ধরে মাত্র ১৯ মিনিটে পৌঁছয় আনন্দপুরের ফর্টিস হাসপাতালে। হৃৎপিন্ড এনেই তা প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসক তাপস রায়চৌধুরী ও কে এম বন্দনার নেতৃত্বে ৩০ জনের চিকিৎসকের দল দিলচাঁদের হৃদয় প্রতিস্থাপন করে। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে চলে অপারেশন। সেই সময়টুকু বিভিন্ন অঙ্গের ক্রিয়াপ্রক্রিয়া কৃত্রিমভাবে চালিত করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, প্রতিস্থাপিত হৃদযন্ত্র ছন্দমেনেই কাজ করছে। উল্লেখ্য, দিলচাঁদের হৃদযন্ত্রটিও রয়েছে, সেটিকে বার করে আনা হয়নি।চিকিৎসকদের কথায়, ওই হৃদযন্ত্রটি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাবে। আপাতত দিলচাঁদকে পর্যবেক্ষণেই রাখছেন চিকিৎসকরা। এই ধরনের অপারেশনের পর পর্যবেক্ষণ সময়টিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।