শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাছের গঙ্গা যমুনা

News Sundarban.com :
এপ্রিল ২৭, ২০১৮
news-image

আমাদের জীব্ন থেকে পুরোনো ঐতিহ্যময় রান্না হারিয়ে যাচ্ছে। বাঙালি ভুল্তে বসেছে ঠাকুমা দিদিমার হাতের রান্নার স্বাদ।কোনো এক সময়ে বাংলার ঘরে ঘরে এই পদটির প্রচলন ছিল বিশেষ দিনে, বিশেষ মানুষদের আদর আপ্যায়নেএখ্ন সেই এই জিভে জল আনা স্বাদ পান বাড়িতে। একপিঠ সর্ষের অন্যপিঠ তেঁতুলের। তাই এই অভিনব নাম। সাধারণত কই মাছ দিয়ে এই পদটির তালমিল জমে ভালো। কিন্তু এদেশে তাজা কই, পাব কই? তাই কই এর সমগোত্রীয় পার্চ ( Climbing Perch) দিয়ে এই পদটি চেষ্টা করতে পারেন। আমি এইবারে তাজা পার্চ না পেয়ে করেছি বাটার মাছ দিয়ে।
উপকরণঃ মাছের হর-গৌরী বা গঙ্গা- যমুনা বানাতে যা যা লাগবে, তা হল- চারটে কই মাছ বা অন্য মাছ। এবং সর্ষের তেল চার চামচ। গঙ্গা বা হর সস বানাতে চাই- সর্ষে বাটা- দুই চামচ। কাঁচালঙ্কা চিরে নেওয়া- দুটি। হলুদ গুঁড়ো- আধ চা চামচ। কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো- আধ চা চামচ। কালোজিরে- আধা চা চামচ। লব্ণ- স্বাদমত।
অনেকে পেঁয়াজ-রসুন বাটা দেন, আমি পছন্দ করিনা, তাই দিইনি। যমুনা বা গৌরী সস বানাতে চাই- পাঁচফোড়ন- আধা চা চামচ। হিং- এক চিমটে। দুই চামচ তেঁতুল, একটি খেজুর দিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে নেবেন। তবুও টক লাগলে এক চিমটে চিনি দিতে পারেন। তাতে দেবেন লবণ- স্বাদমত এবং লঙ্কা গুঁড়ো- যতটা ঝাল খেতে চান।
প্রণালীঃ মাছের হর- গৌরী বা গঙ্গা- যমুনা রান্নার প্রারম্ভে প্রথমে মাছ ধুয়ে পিঠটা আলতো হাতে চিরে নিন। মাছে নুন-হলুদ মাখিয়ে দুই চামচ তেলে এপিঠ ওপিঠ হালকা করে ভেজে নিন। এবার মাছগুলি উঠিয়ে নিয়ে যদি রন্ধন-পাত্রে তেল বাকি থাকে তা ফেলে পাত্রটিকে আবার ধুয়ে মুছে আগুনে বসান। ভাজা মাছের তেলে রান্না না করতে এই কারণে বললাম, মাছ ভাজার তেল গ্রেভী বানাতে ব্যবহার করলে পদটিতে মেছো মেছো গন্ধ প্রবল হবে। বিড়াল প্রজাতির মানুষেরা ছাড়া অনেকে সেটা পছন্দ না ও করতে পারেন। এবার হর বা গঙ্গা সস বানাতে রন্ধন পাত্রে এক চামচ তেল দিন। গরম হলে কালোজিরে ফোড়্ন দিন। কাঁচা লঙ্কা দিন। সুগন্ধ বেরোলে বাকি মশলা এক কাপ জলে গুলে তাতে ঢেলে দিন। ঝোল ঘন হলে মাছের একদিক ডোবার মত অবস্থায় পৌঁছলে, আস্তে করে মাছগুলোর এক পিঠ সেই সসে ডুবিয়ে দিন। ঢেকে, আঁচ কম করে মিনিট পাঁচেক রান্না করুন। ঝোলটা যখন ঘন হয়ে মাছের গায়ে লেগে গেছে, তখন খুব সাবধানে চওড়া খুন্তি দিয়ে প্লেটে তুলে রাখুন। এবার গৌরী বা যমুনা সস বানাতে রন্ধন পাত্রটি আবার ধুয়ে নিন। এক চামচ তেল গরম করুন। হিং দিন। পাঁচফোড়ন দিন। ফুটতে শুরু করলে তেঁতুলের সসটি একটু জলসহ ঢেলে দিন। ঝোল ঘন হয়ে উঠলে মাছগুলির সস ছাড়া পিঠটা সাবধানে তেঁতুলের সসে নামিয়ে দিন। ঢাকা দিয়ে মিনিট পাঁচেক রান্না করুন।
এইবার পরিবেশন পাত্রে একটি মাছের গঙ্গা বা হর এবং অন্য মাছটির যমুনা বা গৌরী দিকটি ওপরে রেখে দৃষ্টিনন্দন করে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।