বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উত্তর মৌখালিতে মুসলিম সম্প্রদায় মানুষের সহযোগিতা  চড়ক মেলা ও বর্শী গাঁথা।

News Sundarban.com :
এপ্রিল ১৭, ২০১৮
news-image
রবিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার ক্যানিং-২ ব্লকের তাম্বুলদহ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর মৌখালি নোয়াখালি পাড়া গ্রামে চড়ক মেলার বর্শী গাঁথা খেলায় মাতলেন হাজার হাজার সর্ব ধর্মের মানুষ।হিন্দুদের এই চড়ক মেলায় এগিয়ে এলেন মুসলিম সম্প্রদায় মানুষ।এবারে এই চড়ক মেলা ৬৪ তম বর্ষে পদার্পণ করল।শাস্ত্রীয় মতে চলছে চড়ক পুজো।মেলা চলবে ২ দিন ব্যাপি।উদ্যোক্তা উত্তর মৌখালি নোয়াখালি পাড়া গ্রামবাসীবৃন্দ।এই মেলার প্রতিষ্ঠাতা ঈশান দাস।তবে তিনি আর নেই।বেশ কয়েক বছর আগে ঈশান দাসের মৃত্যু হয়েছে।তাই তার বংশধররা এই চড়ক পুজো শাস্ত্রীয় মতে করে আসছে।আর এই পুজোকে সার্থক করে তুলতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় বাসিন্দা আতিয়ার রহমান,আবুজাফর মীর,মোনাব্বর মোল্লা, সাহোলোম মোড়ল,গোলাম রসুল মোল্লা প্রমূখ মুসলিম সম্প্রদায় মানুষজন।তারা বলেন ছোট বেলা থেকে এই চড়ক দেখে আসছি।বাব ঠাকুরদারা এগিয়ে আসতেন এই মেলা ও চড়ক পুজো কে সার্থক করে তুলতে।এই গ্রামে হিন্দু -মুসলিম এক সম্প্রতির বার্তা বহন করে আসছে বহু বছর ধরে।এমনকি মুসলিদের জলসা হলে এখানে এগিয়ে আসে হিন্দুরা।যার ফলে এখানে গড়ে উঠেছে এক সর্ব ধর্মের মিলনতীর্থ।শুধু বাংলা নয়,ভারতবর্ষের এক নতুন পথ দেখাবে নোয়াখালি পাড়া গ্রামবাসীবৃন্দ সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি তে।তারা আরও বলেন হিন্দুদের পুজো আর্চনায় যেমন মুসলিম সম্প্রদায় এগিয়ে আসে।ঠিক তেমনি মুসলিমদের কোন অনুষ্ঠানে এখানকার হিন্দুরা এগিয়ে আসে।এখানে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায় মানুষগুলি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুন্দরবনের কৃষ্টি-সংস্কৃতিক কে মেলে ধরে রেখেছে সমাজের বুকে।যা এক নতুন সভ্যতাকে আলোর স্পর্শে নতুন পথ দেখানোর আহ্বান করে।এই চড়ক মেলায় সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার সর্ব ধর্মের মানুষ হাজির হয়।
এমনকি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষজন আসে এই চড়ক মেলা ও বর্শী গাঁথা খেলায়।যা এক সর্ব ধর্মের মিলনক্ষের এক তীর্থ ভূমিতে পরিনত হয়।চড়ক মেলার পুজো কমিটির সদস্য সুভাষ পুরকাইত, সনজিৎ দাস, পলাশ দাস, বান্টি দাস, শোভন দাস, সিদ্দিক মোড়ল, কায়েম সেখ,মনিরুল মীর,হাকিমালী মোল্লা, দাসু ঘোষ, গোপাল দাস, রত্নেশ্বর দাস,হিরালাল দাস, হারাধন দাস, গোবিন্দ দাস, নারায়ন চন্দ্র দাস, উৎপল দাস, কুলজিৎ দাস, নয়ন দাস,শ্রীবাস দাস অনুপ দাস, অমর দাস, মিলন দাস, নিতাই দাস প্রমুখরা বলেন ২ দিন ব্যাপি চড়ক মেলা ও বর্শী গাঁথা খেলায় হাজার হাজার সর্ব ধর্মের মানুষজন আসে।ফলে সর্ব ধর্মের মিলনক্ষেত্র তৈরি হয় এখানে।শাস্ত্রীয় মতে নিষ্ঠা সহকারে চলে চড়ক পুজো।এবার ৬৪ তম বর্ষে পদার্পণ করল এই চড়ক পুজো।আর এই পুজোকে কেন্দ্র চলে মেলা,বর্শী গাঁথা খেলা।হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায় মানুষ ঐক্যবদ্ধ চড়ক মেলাকে সার্থক করে তোলে।তারা আরও বলেন চৈত্র মাসের উত্তপ্ত রৌদে চারিদিকে খাঁ খাঁ করে।ফেঁটে চাষের জমির মাটি।জলের সন্ধানে চাতক পাখির অপেক্ষা।সোদা মাটির নোনা জলের গন্ধে মেতে ওঠে মানুষজন এই চড়ক পুজোতে।আর এই পুজোকে কেন্দ্র করে চলে ২ দিন ধরে মেলা।এদিকে মেলার সাংস্কৃতিক মঞ্চে পরিবেশিত হচ্ছে ধর্মীয় গান,গাজন,পুতুল খেলা, নৃত্য, বাউল গান, লোকগীতি প্রমূখ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।পাশাপাশি চলে হিন্দু ধর্মের রীতিনীতি মেনে বর্শী গাঁথা খেলা।চড়ক মেলায় বসেছে হরেক রকমের দোকান।আর ভীড় জমিয়েছে কচিকাঁচারা।