শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গোসাবায় তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত বিজেপি

News Sundarban.com :
এপ্রিল ৬, ২০১৮
news-image

দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার প্রত্যন্ত সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকে  তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হলেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা।ঘটনাটি ঘটেছে গোসাবা থানার বিপ্রদাসপুরের।বুধবার রাতে স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি হুমকি ও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বৃহস্পতিবার সকালে এই এলাকার বুথ সভাপতি সন্দীপ মণ্ডলের উপর চড়াও হয়ে তাকে বেধড়ক মারধোর করে শাসকদলের গুন্ডাবাহিনী। ঘটনায় সন্দীপবাবু গুরুতর জখম হয়ে বর্তমানে গোসাবা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গোসাবা থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ কাউকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ তারা যাতে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দিতে না পারে   সেই কারণেই গত চারদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল কর্মীরা। গোসাবা ব্লকের কুমিরমারী থেকে শুরু করে বিপ্রদাসপুরের সমস্ত এলাকাতেই বিজেপি কর্মীদের প্রান নাশের হুমকির পাশাপাশি এলাকায় বিজেপি কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে বিপ্রদাসপুরে এর প্রভাব সবথেকে বেশী। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অমরেশ মণ্ডল ও তার অনুগামীরা বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে যখন বিজেপি কর্মী সন্দীপ মণ্ডল মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন ঠিক তখন তাকে ডেকে রাস্তায় নিয়ে এসে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। তার স্ত্রী বাঁচাতে গেলে তাকে ও ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। রডের আঘাতে সন্দীপবাবু গুরুতর জখম হয়েছেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গোসাবা ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে ভর্তি করেছেন চিকিৎসার জন্য। এ বিষয়ে স্থানীয় বিজেপি নেতা সঞ্জয় নায়েক বলেন, “ নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই আমাদের কর্মীদের উপর হামলা শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই মুহূর্তে গোসাবার সবচেয়ে সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পাঠানখালী অঞ্চল। এখানে গত কয়েকমাসে কয়েকটি ভয়ংকর আক্রমণের ঘটনা ঘটে সংঘ এবং বিজেপির নেতা কর্মীদের উপর । এই আক্রমণ মুলত সংঘটিত করে এলাকার বর্তমান তৃণমূলের নেতা ঝড় ঢালী ওরফে সুবিত আলী ঢালী ও বেশ কিছু সমাজ বিরোধী দুস্কৃতি ।বিভিন্ন সময় দল পরিবর্তন করে বর্তমানে তৃনমূল করে ও এই মুহূর্তে এলাকার ত্রাস হয়ে ওঠেছে। তিনি আরো বলেন স্থানীয় বিধায়কের সহযোগিতা ও মদতে এই সন্ত্রাস হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষনা হওয়ার পর বিজেপি নেতা কর্মীরা বিভিন্ন বুথের প্রার্থী নির্বাচন ও অন্যান্য কাজ শুরু করায় গত  বুধবার সন্ধ্যায়  ঝড় ঢালির নেতৃত্বে বিজেপির ৭ জন কার্যকর্তাকে অপহরণ করা হয় এবং গোপন জায়গায় নিয়ে গিয়ে অকথ্য গালীগালাজ ও ভয়ংকর ভাবে অত‍্যাচার করা হয় । বলা হয় এই অঞ্চলে বিরোধী বলে কিছু থাকবে না। বিজেপি করলে গুলি করে মারা হবে। অত‍্যাচারিতদের মধ্যে ছিলেন বিজেপির মন্ডল পঞ্চায়েত  শুভঙ্কর মন্ডল, বুথ কনভেনার সুকুমার মৃধা, সুদীপ ভুইয়া সহ আরো চারজন কর্মী। কয়েক ঘন্টা অত‍্যাচারের পর তাদেরকে জোর পূর্বক স্বীকারোক্তি ও লিখিয়ে নেওয়া হয় । এই ঘটনা প্রশাসন ও দলকে জানালে পরিবার ,ঘরবাড়ী জালিয়ে লুটপাট করে এলাকা ছাড়া করা হবে বলে হুমকী ও দেওয়া হয়। এই এলাকায় সবাই ভীত সন্ত্রস্ত। প্রসাশনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে এই সন্ত্রাস চললেও প্রশাসন নির্বিকার। এলাকার মানুষের অভিযোগ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়েই এলাকায় ঝড় ঢালী ও তার দলবল ক্রমাগত এই সন্ত্রাস চালাচ্ছে।”
যদিও এই অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। তাদের দাবী, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ারে এমনিতেই মানুষ তৃণমূল প্রার্থীদের ভোট দেবেন। বিরোধীরা প্রচারের লোভে তৃণমূল কংগ্রেসের নামে বদনাম করছে”।