শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বাসন্তী,গোসাবার প্রত্যন্ত গ্রাম্য এলাকায় বেড়ে চলেছে নাবালক-নাবালিকা বিয়ে

News Sundarban.com :
এপ্রিল ১, ২০১৮
news-image

সুভাষ চন্দ্র দাশ

এক নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হল ক্যানিং চাইল্ড। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গোসাবা থানার ৪নং আরামপুর গ্রামের নাবালিকা রেজিনা সেখ গোসাবার রাঙাবেলিয়া হাইস্কুলের নবম শ্রেণী ছাত্রী।ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবে কিন্তু বাবা-মা সহ পরিবারের লোকজন রেজিনাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে।রেজিনার বাবা-মা আনার আলি ও মোমেনা সেখ সহ পরিবারের অন্যান্য সকলে জোর পূর্বক বিয়ে দিয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে বাসন্তী থানার ছোট গেঁওয়াখালি গ্রামের মোকসেদ জমাদারের ২৯ বছর বয়ষ্ক ছেলে সাহেব জমাদারের সাথে বিয়ে ঠিক করে।সাহেব কাশ্মীরে সোনার দোকানে কাজ করে ,সে ও নাবালিকা কে বিয়ে করে কাশ্মীরে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল।সেই মতো রেজিনাকে জোর করে তার পরিবারের লোকজন পাত্র সাহেব জমাদারের বাড়ীতে তুলে দিয়ে যায়। পাত্রের বাড়ীর লোকজনও প্রায় নজরবন্দী করে রাখে রেজিনা কে।শনিবার ছেলের বিয়ে দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মোকসেদ জমাদার। সেই মতো শুরু হয়েছিল বিয়ে বাড়ীর আসর। ইতিমধ্যে গোপন সুত্রে খবর পেয়ে চাইল্ড লাইনের লোকজন হাজীর হয় পাত্র সাহেব জমাদারের বাড়ীতে।প্রথমে পাত্রের বাড়ীর লোকজন জোর পূর্বক বিয়ে তে রাজী থাকলে ও পরে ভয় পেয়ে বিয়ে বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়।চাইল্ড লাইনের লোকজন রেজিনা কে উদ্ধার করে হোমে পাঠায়।
নাবালিকা রেজিনা কাঁদতে কাঁদতে বলে “আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার জন্য সকলেই চাপ সৃষ্টি করছিল আমার ও ছেলের পরিবারের লোকজন।তারপর কাশ্মীরের নিয়ে গিয়ে পাচার করার ও পরিকল্পনা ছিল।আমি পড়াশোনা করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই”। চাইল্ড লাইনের সদস্য বান্টী মূখার্জী বলেন “দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাসন্তী,গোসাবা ব্লকেই একাধিক ভাবে বেড়েই চলেছে নাবালক-নাবালিকা বিয়ে। প্রায় প্রতি দিনই হচ্ছে এমন কর্ম।পরিবারের লোকজনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা,রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী,শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষজনদের কে নাবালক-নাবালিকা বিয়ে বন্ধের উদ্যোগ নিয়ে গ্রামের মানুষদের কে যদি সচেতনা করেন তাহলে যে হারে নাবালক-নাবালিকা বিয়ে হচ্ছে তা বন্ধ হওয়া সম্ভব।”