সুন্দরবনে সাপের কামড়ে মৃত্যুহীন ব্লক ক্যানিং ১নং
সাপের কামড়ে ২০১৭ সালে মৃত্যুহীন ব্লক হল ক্যানিং ১নং। এই কর্মযঞ্জে বাস্তবায়নে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল।উল্লেখ্য ২০১৫ সালে ১০২৪ জন কে সাপে কামড়িয়েছিল। এর মধ্যে ৯৪১ জনকে বিষহীন,৮৩জনকে বিষধর সাপ কামড়ে ছিল।মৃত্যু হয়েছিল ৬ জনের। অনুরুপ ২০১৬ সালে ৯৮২ জনকে কামড়েছিল,এর মধ্যে ৮৭২ জনকে বিষহীন,৯০ জনকে বিষধর,মৃত্যু হয়েছিল ৪জনের ।২০১৭ সালে ১১৯৮ জনের সাপের কামড়ে ১১০৫ জন ছিল বিষহীন,৯৩জন বিষধর। মৃত্যু তালিকায় নাম না থাকায় ক্যানিং ১নং ব্লক সাপের কামড়ে মৃত্যুহীন ব্লক হিসাবে উজ্জল দৃষ্টান্থ স্থাপন করায় সেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালকে সংবর্ধনা দিতে এগিয়ে এলেন ক্যানিং যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা। সংবর্ধনার পাশাপাশি এক আলোচনা শিবিরে আলোচিত হয়—
সাপ হল পূথিবীর মুগ্ধকরা প্রাণীদের অন্যতম। এদের হাত,পা,কান, চোখের পাতা নেই। তা স্বত্তেও এরা ক্ষীপ্রতর প্রাণী। অত্যন্ত স্বাবলীলভাবে স্বীকার করে জীবনধারণ করে বেঁচে থাকে। এরা আমাদের পরিবেশ বান্ধব। অামাদের বাস্তুতন্ত্রে সাপের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও মনুষ্য সমাজে সাপের একটা বিরাট অবদান রয়েছে। সাপের বিষ দিয়েই তৈরী হয় বিভিন্ন জীবনদায়ী ঔষধ। এছাড়াও সাপই একমাত্র প্রাণী যারা ইঁদুরের বংশ বিস্তার করে। অার এই প্রতিরোধ না হলে বেশীরভাগই ফসল চাষীদের কে মাঠেই ফেলে আসতে হবে। ফলে প্রতিরোধ না হলে মানবসমাজ দুঃর্বিষহ হয়ে উঠতো। যার জন্য সাপ মারা বন্ধ করে এই অমূল্য প্রাকৃতিক জীবকে অতি অবশ্যই বাঁচিয়ে রাখা জরুরী।
সাপনিে কিছু মানুষের ভ্রান্ত ধারণা আজও রয়েই গিয়েছে। সেই ভ্রান্ত ধারণা গুলি হল সাপ বিনের শব্দ শুনতে পায় না,কারণ সাপের বহিঃকর্ণ নেই। সাপ কোন ফুল,গাছ কিংবা কোন রাসায়নিক পদর্থের কোন গন্ধ পায় না। কারণ সাপের ঘ্রাণশক্তি অতি নগন্য। সাপ কোন বিশেষ উৎসবে দুধপান করেনা। কারণ এরা হল মাংসাশী প্রাণী দুধ এদের খাদ্য নয়। সাপ নাকি চিনে রাখতে পারে এধারনা একেবারেই অবাস্তব। কারণ এদের মস্তিষ্কের আকার ছোট এবং অনুন্নত। কালনাগিনী,লাউডগা এরা বিষধর নয়। কোন সাপ তাড়িয়ে কামড়ায় না,এরা খূবই ভীতু প্রাণী। সাপেরশরীরে কোন মণি থাকেনা এটা গুজব। সাপের শঙ্খ লাগাটা আসলে দুটি পুরুষ সাপের পুরুষ সাপের যুদ্ধ স্ত্রী লাভের জন্য,এতে কোন অলৌকিকতা নেই।
এবার আসাযা সাপ কামড়ালে কি কি লক্ষণ দেখা যায় —ক্ষতস্থানে অত্যন্ত জ্বালা বা যন্ত্রণা হতে পারে। ক্ষতস্থান ফুলে উঠতে পারে,ক্ষতস্থানের রং চটে যেতে পারে। কথা জড়িয়ে যেতে পারে। শ্বাসকার্য্য কষ্টকর হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন স্থান এমন কি মুত্রের সাথেও রক্তপাত হতে পারে।
সাপে কামড়ানোর পর অযথা সময় নষ্ট না করা উচিত। সাপ খোঁজা কিংবা মারার দরকার নেই,ওঝা,গুনিণের খপ্পরে একে বারেই যাওয়া উচিত নয়। ক্ষতস্থানে কোন প্রকার রাসায়নিক পদার্থ একে বারেই দেওয়া উচিত নয়। রোগী কে হাঁটিয়ে কিংবা দৌড়িয়ে নিয়ে যাওয়া একেবারেই উচিত নয়। রোগীকে গরম দুধ,কফি,খাওয়ানো কিংবা ব্যাথা কমানোর ঔষধ একে বারেই দেওয়া উচিত নয়।
সাপে কামড়ালে “Do it RIGHT” মেনে চলা উচিত।
R: Reassurance রোগীর মনোবল বাড়াতে হবে।
I: Immobilisation রোগীকে নিয়ে অযথা নাড়া চাড়া না করাই উচিত।
G/H : Go to Hospital সময় নষ্ট না করে দ্রুত স্থাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া।
T :Tell the Doctor সাপে কামড়ানোর পর থেকেই প্রতি মিনিটের রোগীর লক্ষণের কথা ডাক্তার বাবুকে বলা প্রয়োজন।
বাংলায় মোট ছয়টি প্রখর বিষধর সাপ দেখা যায়। কেউটে(নার্ভবিষ),গোখরো(নার্ভবি
শুক্রবার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতাল সুপার ডাঃ অর্ঘ চৌধুরী,সর্প বিশেষঞ্জ ডাঃ সমরেন্দ্র নাথ রায়,ডাঃ ইন্দ্রনীল সরকার সহ বিশিষ্টরা।এদিন রোগী-পরিজন,গণ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।