শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রত্যন্ত সুন্দরবনেব কুমীরমারি দ্বীপে পালিত হল “মরিচঝাঁপি” দিবস

News Sundarban.com :
ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৮
news-image

দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবনের মরিচঝাঁপির উল্টো দিকের দ্বীপ কুমীরমারিতে রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার উদ্যোগে বুধবার পালিত হল “মরিচঝাঁপি দিবস”।উপস্থিত ছিলেন রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার,দক্ষিণ ২৪ পরগণা পূর্বজেলার জেলাসভাপতি ত্রিদিব মন্ডল, দুই সাধারণ সম্পাদক প্রতিশ্রুতি দেবনাথ,নারান মল্লিক সহ অন্যান্যরা। উল্লেখ্য সিপিএম সহ বামদল গুলির বড় বড়  নেতারা ১৯৭৮ সালে জানুয়ারী মাসে বাংলার বাইরে উদ্বাস্তু শিবির গুলি ঘুরে ঘুরে উগ্রভাষণ দিতেন ভোটব্যাঙ্ক তৈরীর জন্য। তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এলে  সব পূর্ববঙ্গীয় উদ্বাস্তুদের কে পশ্চিমবঙ্গে স্থান দেওয়া হবে।১৯৭৮ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে  সর্বস্ব হারানো হিন্দু উদ্বাস্তুরা দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সুন্দরবনের গোসাবা থানার মরিচঝাঁপি দ্বীপে আশ্রয় নেন। প্রায় ত্রিশ হাজার হিন্দু উদ্বাস্তু জঙ্গল পরিষ্কার করে একটি বসতি গড়ে তোলে।শুরু হয় স্কুল ও হাসপাতাল। তৎকালীন মূখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সরকার ঠিক করেন ঐ উদ্বাস্তু মানুষগুলিকে ওখানে থাকতে দেবেন না। পরে ধীরে ধীরে পুলিশ ঐ দলিত তপশিলী জাতিভুক্ত দরিদ্র মানুষ গুলোর উপর অমানুষিক অত্যাচার শুরু হয়। ২৪জানুয়ারী ১৯৭৯ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ঐ দ্বীপে খাদ্য,পানীয় জল,ওষুধ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সাতদিন প্রচন্ড পানীয়জল ও খাদ্যাভাবের পরে একটি নৌকায় করে ৫/৭ মহিলা পার্শ্ববর্তী দ্বীপ কুমীরমারি তে পানীয় জল আনতে যাচ্ছিলেন সন্ধ্যার মুখে পুলিশের একটি বোট ধাক্কা দিয়ে মহিলা সহ বোটটি ডুবিয়ে দেয়। আবার ঐ১৯৭৯ সালের ২৪ জানুয়ারী থেকে সিপিএম সরকার লাগাতর অবরোধ শুরু করে। নৌকাতে পানীয় জল খাদ্য নিয়ে যেতে দেখলে পুলিশ জীবন্তমানুষ সহ নৌকা ডুবিয়ে দিতো।পুলিশলঞ্চ থেকে অকারণে গুলি চালাতো।খাদ্যের অভাবে,রোগে ভুগে মারা যায় প্রচুর মানুষ।  তখনও দ্বীপে প্রায় ত্রিশহাজার মানুষ। এরপর ৩১জানুয়ারী পুলিশ নিয়ে দ্বীপে নামলো সিপিএম হার্মাদ বাহিনী। জমায়েত লক্ষ্য করে নির্বিচারে ছোঁড়া হল কাঁদানে গ্যাস। শত শত মৃতদেহের উপর মরিচঝাঁপি দখল নিল সিপিএম। কোন শত্রু দেশের নাগরিকের উপর এমন জঘন্য আচরণ করা হয় না। ১৯৭৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী কলকাতা হাইকোর্টে মরিচঝাঁপি গণহত্যা মামলা দাখিলহয়(Civil order No. 371(w) of1979)। চতুর সিপিএম  নানা ভাবে ভুলিয়ে দিল মর্মান্তিক পাপের কাহিনী। কারোর শাস্তি হল না পাশবিক হত্যাকান্ডের। এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য বিজেপি ৩১ শে জানুয়ারী মরিচঝাঁপি দিবসপালন করে । বিজেপির যুব মোর্চার দাবী আগামী দিনে সরকার কে মরিচঝাঁপি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দোষীদের কে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে।